শ্রীনগর: উপত্যকায় জোড়া এনকাউন্টারে নিকেশ চার জঙ্গি। শনিবার জঙ্গিদের সঙ্গে নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনীর জোড়া সংঘর্ষের একটি হয়েছে সোপিয়ানে (Shopian Encounter)। অন্য একটি এনকাউন্টার হয়েছে পুলওয়ামা (Pulwama Encounter) জেলায়। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের (Jammu and Kashmir Police) মতে, সোপিয়ানে গুলিবিদ্ধ জঙ্গিরা লস্কর-ই-তৈবা (LeT)-এর সঙ্গে যুক্ত ছিল। পুলওয়ামায় যে জঙ্গিদের নিকেশ করা হয়েছে, তারা কোন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল তা এখনও চিহ্নিত করা যায়নি।
যে দুই লস্কর জঙ্গিকে খতম করা হয়েছে, তাদের নাম সাজাদ আহমেদ চক। সে সোপিয়ানের ব্রারিপোরা এলাকায় থাকত। অন্যজনের নাম রাজা বাসিত ইয়াকুব। পুলওয়ামার আচান লিটার এলাকায় থাকত সে। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “পুলিশের রেকর্ড অনুযায়ী, উভয় জঙ্গিই নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার সঙ্গে যুক্ত ছিল। উভয়ের বিরুদ্ধেই বেশ কয়েকটি জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। লস্কর-ই-তৈবায় নতুন যুবকদের যোগ দিতে অনুপ্রাণিত করতে ও নিয়োগ করার ক্ষেত্রেও সাহায্য করত সাজাদ আহমেদ চক।”
পুলিশ আরও জানিয়েছে, ওই দুই জঙ্গির থেকে বেশি কিছু অপরাধমূলক সামগ্রী, অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দুটি একে সিরিজের রাইফেল, চারটি একে ম্যাগাজিন এবং ৩২ রাউন্ড গুলি।
দ্বিতীয় এনকাউন্টারটি হয়েছে পুলওয়ামা জেলার ত্রাল এলাকার হারদুমিরে। গুলির লড়াইয়ে দুই জঙ্গিকে নিকেশ করা হয়েছে। যদিও ওই দুই জঙ্গির পরিচয় এখনও জানা যায়নি। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ওই দুই জঙ্গির শনাক্তকরণ ও তারা কোন জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত, তার সন্ধানের কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলায় হিজবুল মুজাহিদিনের এক জঙ্গিকে নিকেশ করেন। উপত্যকায় একজন পুলিশকর্মী এবং সাধারণ গ্রামবাসীদের এবং অন্যান্যদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল সে। জম্মু ও কাশ্মীরের বুদগামে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা লস্কর জঙ্গিদের সহযোগী ছিল বলে জানা গিয়েছে৷
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সম্প্রতি সংসদের সদ্য সমাপ্ত শীতকালীন অধিবেশনে রাজ্যসভায় জানিয়েছে যে ২০১৯ সালের অগস্ট থেকে উপত্যকায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে ভাল হয়েছে। জঙ্গি কার্যকলাপের ঘটনার সংখ্যা ২০১৮ সালে ছিল ৪১৭। সেখান থেকে তা কমে এসেছে ২০৩। ২০২১ সালে আনুমানিক অনুপ্রবেশও কমেছে। ২০১৮ সালে যে সংখ্যাটা ছিল ১৪৩, ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সেই হিসেব ২৮।
“সরকার জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সক্রিয় অভিযানের পাশাপাশি আরও মজবুত নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং গোয়েন্দা গ্রিড স্থাপন করেছে। তাই, ২০১৯ সালের অগস্ট থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে।” রাজ্যসভায় এমটাই জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই। জম্মু ও কাশ্মীরে ২০১৮ সালে ৪১৭ টি, ২০১৯ সালে ২৫৫ টি, ২০২০ সালে ২৪৪ টি এবং ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ২০৩ টি জঙ্গি কার্যকলাপের ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন : Bangladesh Ferry Fire: আগুন থেকে বাঁচতে মেয়েকে বুকে আঁকড়েই সাঁতার কাটছিল বাবা, হাত ফস্কে কখন যে…!