
বেঙ্গালুরু: সমস্যা দীর্ঘদিন ধরেই বাড়ছিল, কিন্তু তা যে এমন পর্যায়ে পৌঁছবে, তা কল্পনাও করতে পারেনি কেউ। দিনে দু’বেলা স্নান থেকে এখন পাঁচ বেলা স্নান করছেন অনেকে। তবে দিনে বা সপ্তাহে নয়, গোটা মাসে। বাড়ির হেঁশেলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে রান্না-বান্না, বাইরে থেকেই খাবারের অর্ডার দেওয়া হচ্ছে। পরিশোধিত জল দিয়েই নিত্যদিনের কাজ চলছে। জল সঙ্কট এতটাই ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে বেঙ্গালুরুতে। বোরওয়েলগুলি সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাওয়ায়, বাসিন্দাদের একমাত্র ভরসা এখন ট্যাঙ্কারের জলই।
বিগত কয়েক মাস ধরেই বেঙ্গালুরুতে চরম জল সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সম্প্রতিই তা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। পুরসভার জল আসাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাসিন্দাদের একমাত্র ভরসা ট্যাঙ্কারে করে আনা জল। তাতেও জলের চাহিদা মিটছে না। এক একটি এলাকাতে যেখানে কমপক্ষে চারটি জলের ট্যাঙ্কারের প্রয়োজন, সেখানে মাত্র একটি বা দুটি ট্যাঙ্কার জল আসছে। সেই জলও কিনতে হচ্ছে তিন থেকে চারগুণ বেশি দামে। এক বালতির বেশি জল দেওয়া হচ্ছে না বলেই অভিযোগ বাসিন্দাদের।
রাজ্য সরকারের তরফে জল বিক্রেতাদের দাম বেঁধে দেওয়া হলেও, সমস্যা তৈরি হচ্ছে অন্য জায়গায়। নির্দিষ্ট সময়ে জল নিয়ে আসছে না ট্যাঙ্কার। যা জল নিয়ে আসছে, তাও পর্যাপ্ত নয়। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে ভিন রাজ্য থেকে আসা তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থার কর্মীদের বাড়ি চলে যেতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বেঙ্গালুরুতে জলের মূলত দুটি উৎস- কাবেরী নদী ও ভূ-গর্ভস্থ জল। পানীয় জল ছাড়া বাকি কাজের জন্য প্রয়োজনীয় জল সাধারণত প্ল্যান্ট থেকে পরিশ্রুত করেই পাঠানো হয়। কিন্তু বর্ষা আসতে দেরী থাকায়, জলের একমাত্র ভরসা ছিল ভূগর্ভস্থ জলই। সেটাও ফুরিয়ে গিয়েছে। শুধু বসতবাড়ি নয়, হাসপাতালগুলিতেও চরম জল সঙ্কট দেখা গিয়েছে। কীভাবে জলের জোগাড় করা যাবে, তা বুঝে পাচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।
পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে চলতি মাসের শেষে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আইপিএল ম্যাচ খেলা হবে কি না, তা নিয়েও ভাবনা-চিন্তা করা হচ্ছে।