
নয়াদিল্লি: বিয়ের একদিন আগে উদ্ধার হবু বরের মৃতদেহ। নিজের ঘরে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন উত্তর প্রদেশের ওই ব্যক্তি। নাম সুধীর কুমার। সুধীর পেশায় সরকারি কর্মচারী। ফতেহুপুরের বিন্দিক জেলার বাসিন্দা। রাজ্যের রাজস্ব দফতরে করণিক হিসাবে কাজ করতেন তিনি। সম্প্রতি উত্তর প্রদেশে এসআইআর-র কাজ শুরু হলে সুপারভাইজার-এর দায়িত্ব পেয়েছিলেন সুধীর। আর সেটাই যেন তাঁর জীবনে কাল হয়ে উঠল।
পরিবারের অভিযোগ, সুধীরের উর্ধ্বতনরা তাঁকে প্রতি মুহুর্তে হুমকি দিতেন। সময় মতো কাজ শেষ না করার অভিযোগে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তাঁরা। এদিন সুধীরের বোন রোশনি বিভিন্ন সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্য়মকে জানিয়েছেন, ‘মঙ্গলবার এক প্রশাসনিক কর্তা আমাদের বাড়িতে এসছিলেন। উনিই দাদাকে রীতিমতো হুমকি, হুঁশিয়ারি দিতে শুরু করেন। দাদা যদি কাজে যোগ না দেন, তা হলে চাকরি চলে যাবে বলেও হুমকি দেন তিনি। এরপরেই দাদা নিজের ঘরে চলে যান। ভিতর থেকে দরজা আটকে দেন।’
রোশনীর কথায়, এই চাপই আর নিতে পারেননি সুধীর। বুধবার বিয়ে। মঙ্গলবার আত্মঘাতী হন এই সুপারভাইজ়ার। এরপরই ছড়ায় উত্তেজনা। বুধবার আন্দোলনে নামে উত্তর প্রদেশের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একটি সংগঠন। প্রশাসনিক কর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের না হওয়া পর্যন্ত দেহ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে না বলে বিক্ষোভ দেখায় সেই সংগঠনটি।
এদিন লেখপাল অ্যাসোসিয়েশন নামে উত্তর প্রদেশের রাজস্ব দফতরের কর্মচারীদের একটি সংগঠনের জেলা সচিব রাভেন্দ্র সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, ‘সুধীরের বিয়ের তারিখ অনেক আগে থেকেই ঠিক ছিল। দফতরের উর্ধতন কর্তারাও জানতেন। তারপরও ওকে এসআইআর সুপারভাইজ়ারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সুধীর এই নিয়ে ওর সরাসরি উর্ধতন কর্তার কাছে গিয়েছিল। ছুটির আবেদনও জানিয়েছিল। কিন্তু সেই ছুটির আবেদন মঞ্জুর হয়েছিল কি না তা জানি না।’
তিনি আরও জানিয়েছেন, বিন্দকির মহকুমা শাসক একটি বৈঠক ডেকেছিলেন। কিন্তু তাতেও গরহাজির ছিলেন সুধীর। নিজের বিয়ের কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। এরপরই মহকুমা শাসক, যিনি ইআরও-র দায়িত্ব পালন করছেন, তিনিই সুধীরকে বরখাস্ত করার সুপারিশ দেন। ইতিমধ্যেই দফায় দফায় আন্দোলনের পর কানুঙ্গো নামে রাজ্যের এক রাজস্ব আধিকারিকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিন্দকি থানার এসএইচও। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগেই রুজু হয়েছে এফআইআর। পাশাপাশি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে সুধীরের দেহ।