Pune: শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র এক, তার জন্যই রোজ ৪৫ কিমি পাড়ি দিয়ে স্কুলে যান এই শিক্ষিকা

Pune teacher: পুনে জেলার 3,638টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২১টি স্কুলেই ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১ জন করে। এই স্কুলগুলিতে শিক্ষকও আছেন ১ জন করেই। এই রকমই এক স্কুলে সিয়া নামের এক প্রথম শ্রেণির ছাত্রীকে পড়াতে প্রতিদিন প্রায় ৪৫ কিলোমিটার পাড়ি দেন মঙ্গলা ধাওয়ালে।

Pune: শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র এক, তার জন্যই রোজ ৪৫ কিমি পাড়ি দিয়ে স্কুলে যান এই শিক্ষিকা
প্রতীকী ছবিImage Credit source: TV9 Bangla

| Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Oct 03, 2023 | 10:51 PM

পুনে: বিভিন্ন বাধা বিঘ্ন উপেক্ষা করে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে, এই রকম বহু শিক্ষার্থীর সন্ধান পাওয়া যায়। তাদের সম্পর্কে লেখালেখিও কম হয় না। উল্টোদিকে, বর্তমানে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সম্পর্কে খারাপ খবরই বেশি আসে। কখনও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। কখনও খবর আসে তাঁদের ফাঁকিবাজির। এমনকি, নাবালিকা ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা করছেন শিক্ষক, এটাও এখন প্রায় নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু, আজ আমরা এমন একজন শিক্ষিকার কথা বলব, যিনি হাজারো সমস্যা উপেক্ষা করে, ৪৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এক স্কুলে পড়াতে যান। আরও বিস্ময়রকর হল, সেখানে তাঁর অপেক্ষায় থাকে মাত্র একজন ছাত্রী।

অবিশ্বাস্য মনে হলেও, এটাই সত্যি। স্বামী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে মহারাষ্ট্রের পুনে শহরে থাকেন মঙ্গলা ধাওয়ালে। পরিবারের সমস্ত দায়িত্ব সামলে, তিনি প্রতিদিন পুনে থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে ভেহলে মহকুমার ছোট্ট গ্রাম অটলওয়াড়িতে যান। সেখানকার জেলা পরিষদ স্কুলের একমাত্র শিক্ষিকা তিনি। মঙ্গলার স্বামীও পেশায় শিক্ষক। সকাল সকাল স্কুলে চলে যান তিনি। মেয়ের বয়স ১২, সেও স্কুলে যায়। পাঁচ বছরের ছোট্ট ছেলেকে ডে কেয়ারে রেখে স্কুলে যান মঙ্গলা। বিকেলে তাঁর মেয়ে স্কুল থেকে ফিরে আসার সময়, ভাইকে সঙ্গে করে নিয়ে আসে।

এদিকে, অটলওয়াড়ি জেলা স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা মোটে এক। প্রথম শ্রেণিতে পড়ে ৩ বছরের ছোট্ট সিয়া শেহর। শুধুমাত্র তাঁকে পড়াতেই ৪৫ কিলোমিটার দূর থেকে প্রতিদিন স্কুলে আসেন মঙ্গলা। অটলওয়াড়ি গ্রামে কোনও মোবাইল নেটওয়ার্কও নেই। তাই, স্কুলে এসে ফোনে যে স্বামী-সন্তানদের সঙ্গে কথা বলবেন, মঙ্গলার তারও উপায় নেই। এর জন্য তাঁর মন খারাপ হয় ঠিকই। কিন্তু, শিক্ষিকা হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালন থেকে পিছিয়ে আসেননি কখনও।

তবে, স্কুলে একজন মাত্র শিক্ষার্থী থাকাটা ওই শিক্ষার্থীর জন্য মোটেই ভাল নয় বলে জানিয়েছেন মঙ্গলা। তিনি বলেছেন, “শুধুমাত্র একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকার কাছ থেকে সবকিছু শিখতে পারে না কোনও শিশু। ছাত্রছাত্রীরা তাদের সহপাঠীদের কাছ থেকেও অনেক কিছু শেখে। কিন্তু, সিয়া এই স্কুলের একমাত্র ছাত্রী আর আমি একমাত্র শিক্ষিকা। তাই ওকে আমার কাছ থেকে সবকিছু শিখতে হবে।” আসলে, পুনে জেলায় মোট ৩,৬৩৮টি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। এর মধ্যে ২১টিতেই মাত্র একজন করে ছাত্র বা ছাত্রী রয়েছে। এই স্কুলগুলিরই একটি অটলওয়াড়ি জেলা স্কুল। মঙ্গলার মতে, গ্রামীন স্কুলগুলির ছাত্রছাত্রীদের জন্য যদি বাসের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে স্কুলগুলিতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বাড়তে পারে। তবে, শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ুক না বাড়ুক, তিনি তাঁর কর্তব্যে অটল থাকবেন।