গুজরাট: মা ও ছোট বোনকে মেরে আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠল এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। গুজরাটের সুরাটের কাতারগ্রামের এই ঘটনা। অভিযোগ, মা ও বোনকে কড়া ডোজ়ের অ্যানেসথেটিক ওষুধ দিয়ে খুন করেন বছর ৩১-এর ওই চিকিৎসক। এর পর নিজেকেও শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে শেষ মুহূর্তে তাঁর ভাই বাড়িতে চলে আসায় ওই চিকিৎসককে প্রাণে বাঁচানো গিয়েছে।
কাতারগ্রামে বাসিন্দা দর্শনা প্রজাপতি। ৩১ বছর বয়সী এই তরুণী হোমিওপ্যাথির চিকিৎসক। বাড়িতে মা, ভাই, বোনও রয়েছেন। মা মঞ্জুলাদেবীর বয়স ৫১ বছর। ছোট বোন ফাল্গুনি প্রজাপতি ২৯ বছরের। ফাল্গুনি একটি স্কুলে পড়াতেন। অভিযোগ, শনিবার রাতে দর্শনা তাঁর মা মঞ্জুলাদেবী ও বোন ফাল্গুনিকে অ্যানেসথেটিক ইনজেকশন দেন। সেই তরল শরীরে প্রবেশ করতেই বিছানায় নেতিয়ে পড়ে মা-মেয়ে। অভিযোগ, এরপর ২৬টি ঘুমের ওষুধ খেয়ে ফেলেন দর্শনা। যদিও ভাইয়ের চেষ্টায় তিনি প্রাণে বাঁচেন। পুলিশ ইতিমধ্যেই দর্শনার বিরুদ্ধে মা ও বোনকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে। স্থানীয় চকবাজার পুলিশ স্টেশনে দর্শনার ভাই গৌরবই দিদির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের করেন বলে জানা গিয়েছে। তবে আপাতত চিকিৎসাধীন অভিযুক্ত ওই চিকিৎসক।
চকবাজার পুলিশ জানিয়েছে, আত্মহত্যার চেষ্টার আগে দর্শনা একটি সুইসাইড নোট লিখেছিলেন। সেখানে তিনি লেখেন, জীবনের প্রতি তাঁর বিতৃষ্ণা এসে গিয়েছে। এই জীবন তিনি আর চান না। সে কারণেই আত্মহত্যা করতে যাচ্ছেন। কিন্তু মা ও বোনকে কেন এ ভাবে শাস্তি দিতে চাইলেন তিনি? পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, “জেরার মুখে দর্শনা জানিয়েছেন, ‘মা আর বোন আমার সঙ্গে ভীষণ মানসিক ভাবে জড়িয়ে। ওরা আমাকে ছাড়া কিছু ভাবতেই পারে না। প্রতিটা মুহূর্তে মা আর বোনের আমাকে দরকার। আমি ছাড়া ওদের আর কেউ নেই।’ অভিযুক্ত ভেবেছিলেন তাঁর কিছু হয়ে গেলে মা, বোন তা সহ্য করতে পারবেন না। তাঁদের বেঁচে থাকা দুর্বিসহ হয়ে উঠবে। সে কারণেই নিজেকে শেষ করার আগে মা ও বোনকে শেষ করে দেন।”
পুলিশকে দর্শনা জানিয়েছেন, একজন রোগীর অ্যানেসথেশিয়ার প্রয়োজন হলে সে ক্ষেত্রে যে ওষুধ ২ মিলিলিটার দেওয়া প্রয়োজন, তিনি তাঁর মা ও বোনকে ১০ মিলিলিটার দেন। কিন্তু মা, বোনকে দেওয়ার পর আর ওষুধ অবশিষ্ট ছিল না। সে কারণেই তিনি ঘুমের ওষুধ খেয়ে ফেলেন। কিন্তু এই ইনজেকশন নিতে তাঁর মা বা বোন কোনও আপত্তি তোলেননি কেন? এর জবাবে দর্শনা পুলিশকে জানান, দু’জনেরই গাঁটের ব্যাথা রয়েছে। ইনজেকশন দেওয়ার আগে দু’জনকে তিনি বলেছিলেন, এই ইনজেকশন সেই ব্যাথা উপশমেরই ওষুধ। যদিও সবদিক খোলা রেখেই তদন্ত করছে পুলিশ। এই ঘটনার পিছনে প্রকৃত কারণ কী তা খতিয়ে দেখছে চকবাজার থানা। আরও পড়ুন: ভোল বদলাচ্ছে চেনা রাজধানী এক্সপ্রেস, অত্যাধুনিক ট্রেনেই শিয়ালদহ-হাওড়া থেকে দিল্লি সফর