Bihar: ১৫০ মহিলাকে আটকে লাগাতার ধর্ষণ! কল সেন্টারের আড়ালে…

Bihar: টার্গেট পূরণ করতে না পারলে, সব জায়গাতেই বসদের ধমক সহ্য করতে হয় কর্মীদের। অনেক ক্ষেত্রে কাজও চলে যায়। কিন্তু, বিহারের মুজাফফরপুরের এই কল সেন্টারে টার্গেট পূরণ করতে না পারলে চলত মানসিক নির্যাতন, যৌন হেনস্থা, এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধর্ষণ এবং জোর কে গর্ভপাতও করানো হত বলে অভিযোগ।

Bihar: ১৫০ মহিলাকে আটকে লাগাতার ধর্ষণ! কল সেন্টারের আড়ালে...
কল সেন্টার (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় তৈরি)Image Credit source: Pixabay
Follow Us:
| Updated on: Jun 20, 2024 | 4:58 PM

পটনা: নীট পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ নিয়ে উত্তাল বিহার। বিহার পুলিশের অর্থনৈতিক অপরাধ দমন শাখার হাতে এসেছে চমকে দেওয়া তথ্য। গ্রেফতার হয়েছে বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থীও। এর মধ্যেই খোঁজ মিলল এক ভয়ঙ্কর কল সেন্টারের। বর্তমানে, কল সেন্টারের চাকরি অনেকেরই উপার্জনের উপায়। আর প্রত্যেক কল সেন্টারেই কর্মীদের দেওয়া হয় টার্গেট। অর্থাৎ, একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে কাজ তাদের করতে হয়। টার্গেট পূরণ করতে না পারলে, সব জায়গাতেই বসদের ধমক সহ্য করতে হয় কর্মীদের। অনেক ক্ষেত্রে কাজও চলে যায়। কিন্তু, বিহারের মুজাফফরপুরের এই কল সেন্টারে টার্গেট পূরণ করতে না পারলে চলত মানসিক নির্যাতন, যৌন হেনস্থা, এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধর্ষণ এবং জোর কে গর্ভপাতও করানো হত বলে অভিযোগ। আর এই কল সেন্টার ছিল আদতে এক প্রতারণা চক্র। উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখিয়ে মেয়েদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হত এবং তাদের এই চক্রে সামিল করা হত।

গত ২ জুন, এক মহিলা ওই কল সেন্টারের বিরুদ্ধে পুলিশে এফআইআর দায়ের করেন। তারপরই এই চক্রের কার্যকলাপ ফাঁস হয়। ডিবিআর নেটওয়ার্কিং নামে একটি সংস্থার নামে, কল সেন্টারের এজেন্ট চেয়ে ফেসবুক-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিত এই প্রতারণা চক্র। শর্ত ছিল একটাই, আবেদনকারীদের সকলকে মহিলা হতে হবে। বিজ্ঞাপনটির পড়ে সত্যি বলে ভেবেছিলেন অভিযোগকারী। আবেদন করায়, তাঁকে এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল। তারপর বলা হয়, চাকরির প্রশিক্ষণের জন্য ২০,০০০ টাকা দিতে হবে। ওই টাকাও দিয়েছিলেন তিনি। বলা হয়, মুজাফফরপুরে প্রশিক্ষণ হবে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ওই কল সেন্টারে মহিলাদের সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। তাদের ঠকিয়ে অর্থ তোলার প্রশিক্ষণ দেওয়া হত।

মুজাফ্ফরপুরে সংস্থার কেন্দ্রে গিয়ে অভিযোগকীরা দেখেছিলেন, সেখানে তাঁর মতো আরও প্রায় ১৫০ জন মহিলা আছেন। সংস্থার পক্ষ থেকে তিলক কুমার সিং নামে এক ব্যক্তি ছিল সেখানে। সেই অভিযোগকারী এবং অন্যান্য মহিলাদের কল করার এবং লোক ঠকানোর প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। তারপর দেওয়া হয় টার্গেট। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট সময়ে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ মানুষকে ঠকানোর লক্ষ্য দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, এই লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হলেই ওই মহিলাদের মানসিক নির্যাতন করা হত। এফআইআর দায়ের করেছেন যে মহিলা, তাঁর অভিযোগ, টার্গেট পূরণ করতে না পারার জন্য তাঁকে ধর্ষণ পর্যন্ত করেছিল তিলক কুমার সিং। একবার নয়, বেশ কয়েকবার তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। যার ফলে, তিনি গর্ভবতীও হয়ে পড়েছিলেন। এরপর তাঁকে গর্ভপাত করতে বাধ্য করায় তিলক কুমার সিং। তাঁর মতো সকল মহিলাদের সঙ্গেই বেশ কয়েক মাস ধরে এই নির্যাতন চলছিল।

এই অভিযোগ পাওয়ার পরই, ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। মব মিলিয়ে এফআইআর-এ নয়জনের নাম রয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছে মণীশ কুমার সিং নামে নয়ডার এক বাসিন্দার নাম। সে-ই ওই ভুয়ো সংস্থার মালিক বলে জানা গিয়েছে। তিলক কুমার সিংকেও হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সে পালিয়েছিল। মুজফ্ফরপুরের পুলিশ সুপার (সিটি), অবধেশ দীক্ষিত জানিয়েছেন,গোরখপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জেরা করা হচ্ছে। অভিযুক্ত বাকি আটজনকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। তিনি আরও জানিয়েছেন, নির্যাতিতাদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন, বেশ কয়েক মাস ধরে এই নির্যাতন চলছিল। একটি ছোট ঘরে তাদের আটকে রাখা হয়েছিল। এই ঘটনার বিষয়ে আরও তদন্ত চলছে।