মুম্বই: ষড়যন্ত্রের শিকার মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশের (Devendra Fadnavis) স্ত্রী অমরুতা ফড়ণবীশ (Amruta Fadnavis)। তাঁকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ তুলে এক ফ্যাশন ডিজাইনারের বিরুদ্ধে মুম্বই পুলিশে এফআইআর-ও দায়ের করেছেন দেবেন্দ্র পত্নী। গত ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি এফআইআর দায়ের করেছেন। এফআইআর-ও ফ্যাশন ডিজাইনার ও তাঁর বাবার নাম উল্লেখ করেছেন অমরুতা। ফড়ণবীশ-জায়া জানিয়েছেন, এক মহিলা তাঁকে একটি অপরাধমূলক ঘটনায় হস্তক্ষেপের জন্য ১ কোটি টাকা অফার করেন। ওই মহিলার নাম অনীক্ষা। এবং তিনি নিজেকে ফ্যাশন ডিজাইনার বলে দাবি করেছেন। এই অপরাধমূলক ঘটনায় তাঁর বাবা জড়িত বলে জানিয়েছিলেন অনীক্ষা। আর সেই ঘটনা থেকে বাবাকে বাঁচালে ১ কোটি টাকা অমরুতাকে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন ফ্যাশান ডিজাইনার। এফআইআর থেকে জানা গিয়েছে, গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি একটি অপরিচিত ফোন নম্বর থেকে অমরুতাকে ভিডিয়ো ক্লিপ, ভয়েস নোট ও মেসেজ পাঠিয়েছেন ওই ফ্যাশান ডিজাইনার। এই অভিযোগ পেয়েই ওই কথিত ফ্যাশান ডিজাইনার ও তাঁর বাবার বিরুদ্ধে দুর্নীতি বিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেছে মুম্বই পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯ টা নাগাদ অমরুতার কাছে অনীক্ষার ফোন আসে। অনীক্ষা তাঁকে জানান, একটি মামলা তাঁর বাবার নাম জড়িয়েছে। বাবাকে এই মামলা থেকে বাঁচাতে পারলে অনীক্ষা ১ কোটি টাকা দেবে। পুলিশকে ফড়ণবীশ পত্নী জানিয়েছেন, “এই কথা শুনতেই আমি সঙ্গে সঙ্গে ফোন কেটে দিই। এবং তাঁর নম্বর ব্লক করে দিই।” তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও অনীক্ষার সঙ্গে পরিচয় ছিল অমরুতার। তবে প্রতিবারই খুব অদ্ভুত ছিল তাঁর ব্যবহার ও আচার-আচরণ।
জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে অমরুতাকে প্রথম ফোন করেন অনীক্ষা। তখনি নিজেকে ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি পোশাক, গয়না ও জুতো ডিজাইন করেন বলে জানান। সেই সময় অমরুতাকে ফোন করে তাঁর ডিজাইন করা পোশাক পরার আবেদন জানা অনীক্ষা। অমরুতা বলেছেন, “বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমাকে তাঁর ডিজাইন করা পোশাক, গয়না ও জুতো পরার অনুরোধ করেন তিনি। তাতে তাঁর ডিজাইন করা পণ্যের প্রচার হবে বলেছেন তিনি। আমি তাকে ঠিক আছে বলি…।” এরপর মাঝে মাঝেই অমরুতার বাড়ির কর্মীদের হাতে ডিজাইনার পোশাক ও গয়না পাঠাতেন তিনি। অমরুতা বলেছেন, “একবার তিনি এসে আমাদের এক কর্মীর হাতে কিছু ডিজাইনার পোশাক এবং গয়না দিয়ে গিয়েছিলেন এবং আমাকে কোনও পাবলিক ইভেন্টে এটি পরতে অনুরোধ করেছিলেন। কোনও অনুষ্ঠানে ওই পোশাক পরেছি কি না তা আমার মনে নেই। সেই পোশাক আমার কর্মীদের মাধ্যমে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বা দান করা হয়েছিল কারণ আমার কাছে তাঁর ডিজাইন করা কোনও পোশাক নেই।”
এদিকে অমরুতার সঙ্গে অন্য একটি সাক্ষাতে অনীক্ষা দাবি করেছিলেন, তাঁর বাবার সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে ওঠা-বসা রয়েছে। এবং একবার এক কর্মীর হাত দিয়ে অমরুতাকে একটি চিঠিও পাঠিয়েছিলেন ওই মহিলা। তবে সেই চিঠির বিষয়বস্তু সম্বন্ধে কিছু জানা যায়নি। প্রথম থেকেই খুব সন্দেহজনক ঠেকেছে অনীক্ষার আচার-আচরণ। তিনি অভিযোগ করেছেন, একবার তাঁর দেহরক্ষীকে মিথ্যে কথা বলে তাঁর গাড়িতেও উঠে বসেছিলেন ওই ফ্যাশন ডিজাইনার। তারপর গাড়ি থামিয়ে নেমে যেতে বলেছিলেন অমরুতা। এরপর আবার গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ফোন পান ফড়ণবীশের স্ত্রী। বিষয়টি সুবিধাজনক না মনে করে পুলিশে অভিযোগ করেন অমরুতা। এদিকে এই ঘটনাকে তাঁর রাজনৈতিক জীবন নষ্ট করার জন্য পাতা ফাঁদ বলে মনে করছেন মহারাষ্ট্রের উপ মুখ্যমন্ত্রী।