কাশ্মীর: আশঙ্কা আগেই করা হয়েছিল, এবার তা সত্যি প্রমাণিত হল। গত বছরের ১৫ অগস্ট তালিবানরা (Taliban) আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর মার্কিন বাহিনী (US Army) যে বিপুল অস্ত্র ভাণ্ডার (Arms) ফেলে রেখে এসেছিল, তা উপত্যকার জঙ্গি গোষ্ঠীদের (Terrorist Groups) কাছে এসে পৌঁছেছে। সম্প্রতিই একটি জঙ্গি সংগঠনের তরফে প্রকাশিত ভিডিয়োয় জঙ্গিদের হাতে আমেরিকায় তৈরি রাইফেল ও পিস্তল দেখা যায়।
সম্প্রতিই জম্মু-কাশ্মীরের একাধিক অভিযানে যে ছয়জন পাক জঙ্গিকে নিকেশ করা হয়েছিল, তাদের সকলেরই কাছ থেকে মার্কিন এম৪ কার্বাইন রাইফেলের মতো অত্যাধুনিক অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। সেই সময়ই সন্দেহ হয়েছিল যে, সীমান্ত পারের জঙ্গিদের কাছে মার্কিন অস্ত্র সামগ্রী আসছে কোথা থেকে।
এরপরই পিপলস অ্যান্টি ফ্যাসিস্ট ফ্রন্ট নামক একটি জঙ্গি সংগঠনের তরফে তাদের প্রশিক্ষণের ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়। সেখানে দেখা যায়, একাধিক জঙ্গির হাতে এম২৪৯ অটোমেটিক রাইফেল, ৫০৯ ট্যাকটিকাল বন্দুক, এম১৯১১ পিস্তল ও এম৪ কার্বাইন রাইফেল রয়েছে। এই সমস্ত অস্ত্রই ব্যবহার করে মার্কিন সেনা। ওই ভিডিয়ো দেখেই সন্দেহ হয় যে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সময় মার্কিন বাহিনী যে বিপুল অস্ত্র ভাণ্ডার ফেলে রেখে গিয়েছিল, তা কোনওভাবে জম্মু-কাশ্মীরের জঙ্গি সংগঠনগুলির হাতে এসে পৌঁছেছে।
সূত্রের খবর, মার্কিন সেনা বাহিনী যে অস্ত্র ফেলে রেখে এসেছিল, তা খোলাখুলিভাবে বিক্রি করছে তালিবান। পাকিস্তানের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন সেই অস্ত্র কিনছে এবং তা সীমান্ত পার করে কাশ্মীরেও পাঠাচ্ছে। সম্প্রতি বিভিন্ন এনকাউন্টার ও তল্লাশি অভিযানে উদ্ধার হওয়া মার্কিন এম৪ কার্বাইন রাইফেল সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে।
আফগানিস্তানে তালিবানেরর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর শুরু হওয়ার পরই সন্ত্রাসবাদী উপদ্রব বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গোয়েন্দা বাহিনী। পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনের হাতে আমেরিকার ফেলে যাওয়া অস্ত্র ভাণ্ডার চলে আসলে ভারতের, বিশেষত জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী উপদ্রব বাড়তে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছিল। সেই মতো উপত্যকায় নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছিল। নিরাপত্তা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে কাশ্মীরে প্রায় ৮৫টিরও বেশি বিদেশী জঙ্গি সংগঠন রয়েছে। মূলত সীমান্ত পার থেকেই তারা আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা পেয়ে থাকে। এই সমস্ত বিদেশী জঙ্গি সংগঠনগুলির কাছেও সম্প্রতি মার্কিন বন্দুক দেখা গিয়েছিল। মনে করা হচ্ছে, এই সমস্ত রাইফেল, পিস্তল, গ্রেনেডগুলি ড্রোনের মাধ্যমেই সীমান্তের ওপার থেকে ভারতে পাঠানো হচ্ছে।
উপত্যকায় জঙ্গি উপদ্রব বাড়ার কারণেই শক্তি বাড়ানো হচ্ছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের। দেশের মধ্যে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশই একমাত্র পুলিশ বাহিনী যারা আমেরিকায় তৈরি সিগ সোয়ার ৭১৬ রাইফেল ও সিগ সোয়ার এমপিএক্স ৯ এমএম পিস্তল পাচ্ছে।