Aryan Khan Drug Case: জামিন হল না বাদশাহ-পুত্রের! ৭ অক্টোবর পর্যন্ত এনসিবি রিমান্ডে আরিয়ান
Aryan Khan Drug Case: আদালত জানিয়ে দেয়, যে ধরনের মাদক এনসিবি-র হাতে এসেছে সেই সম্পর্কে আরও জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।
মুম্বই: প্রমোদতরীতে মাদক সেবন (Drug Case) মামলায় জামিন হল না শাহরুখ খানের বড় ছেলে আরিয়ান খানের (Aryan Khan)। এ দিন মুম্বইয়ের বিশেষ আদালতে শাহরুখ পুত্রের জামিনের আবেদন জানান তাঁর আইনজীবী। কিন্তু দীর্ঘ শুনানির পর আদালত জানিয়ে দেয়, যে ধরনের মাদক এনসিবি-র হাতে এসেছে সেই সম্পর্কে আরও জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। যে কারণে আগামী ৭ অক্টোবর পর্যন্ত বলি বাদশার ছেলে-সহ তাঁর দুই বন্ধু আরবাজ মার্চেন্ট ও মুনমুন দধিচাকে এনসিবি রিমান্ডে রাখার সিদ্ধান্ত নেয় আদালত। বিচারক জানান, গোটা বিষয়টি তদন্ত এই মুহূর্তে অগ্রাধিকার পাচ্ছে। সেই কারণেই এখনই জামিন দেওয়া সম্ভব না। আরিয়ানের আইনজীবীর পক্ষ থেকে এ দিন বিচারবিভাগীয় হেফাজত ও জামিনের আর্জি জানানো হয়েছিল। যা খারিজ করে দেয় আদালত।
শুনানির শুরুতে যদিও এনসিবি-র পক্ষ থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত আরিয়ানদের রিমান্ডে চাওয়া হয়েছিল। এনসিবি-র কৌঁসুলি এএসজি সিংয়ের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের যোগ থাকার ইঙ্গিত তাঁরা পেয়েছেন। আরিয়ান খান বেশ সাংকেতিক নাম ব্যবহার করে মাদকের টাকা মেটানোর বিষয়ে চ্যাটের মাধ্যমে এনসিবি হদিশ পেয়েছে বলে সিবিআই আইনজীবী বলেন আদালতকে। তাঁর আরও বক্তব্য, আরিয়ানের জামিনের আবেদন জানানো হলেও বম্বে হাইকোর্টের দেওয়া এমন তিনটি রায়ের উদাহরণ রয়েছে যেখানে একই ধরনের মামলায় জামিন খারিজ করা হয়। এ ক্ষেত্রে আরেক মাদক মামলায় গ্রেফতার হওয়া আরেক বলি তারকা রিয়া চক্রবর্তীর রায়ের প্রসঙ্গও উঠে আসে যেখানে এই ধরনের মাদক মামলা জামিন অযোগ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
এনসিবির আইনজীবী আদালতকে আরও বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য মাদক-মুক্ত সমাজ তৈরি করা। তাই শুধুমাত্র পরিমাণে কম থাকলেই কেউ দাবি করতে পারেন না যে তাঁর জামিন মঞ্জুর করা হোক।” আরিয়ানের কাছে উদ্ধার হওয়া মাদক পরিমাণে কিছুটা বেশি ছিল, যা তাঁর বন্ধুদের মধ্যেও ভাগাভাগি হয়। আদালতে এ কথাও উল্লেখ করে এনসিবি। যার পর আরিয়ানের জামিন পাওয়া আরও কঠিন হয়ে ওঠে। এনসিবি আদলতকে জানায়, ড্রাগ কোথা থেকে সাপ্লাই হচ্ছে তা আমাদের জানতে হবে। টাকা কোত্থেকে আসছে, সেটাও দেখার বিষয় রয়েছে। এই চক্রটাকে ভাঙা প্রয়োজন। তাই এনসিবি রিমান্ড মঞ্জুর করা হোক।
পালটা সওয়াল করতে উঠে আরিয়ানের আইনজীবী সতীশ মানেশিন্দে বলেন, “ড্রাগ-চক্র শেষ হওয়া উচিত এ বিষয়ে আমিও সহমত।” তবে শাহরুখ তনয়ের হয়ে সওয়াল করে তিনি বলেন, প্রমোদতরীতে পার্টির আয়োজকরাই আরিয়ানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তিনি সেই তরীতে যাওয়ার জন্য কোনও টাকা দেননি। আরিয়ানের ব্যাগে তল্লাশি চালিয়েও কিছু পাওয়া যায়নি। কিন্তু তাঁর ফোন বাজেয়াপ্ত করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। আরিয়ানের বন্ধু আরবাজ মার্চেন্টের কাছে মাদক পাওয়া যায়। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
সেই মুহূর্তে আদালত জানতে চায়, কত পরিমাণ কোন মাদক পাওয়া গিয়েছিল। এনসিবি জানায়, ছয় গ্রাম চরস। আরিয়ানের আইনজীবী বলেন, এটার পরিমাণও অত্যন্ত কম। এবং কোনও মাদকই আমাদের (আরিয়ান) কাছে পাওয়া যায়নি। বাকিদের কাছে থেকে বেশি পরিমাণ মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। এর সঙ্গে আমার (আরিয়ান) কোনও সম্পর্ক নেই। আরিয়ান বিদেশে থাকাকালীনও ড্রাগের নেশা করত, এনসিবির এই দাবিও নস্যাৎ করেন তাঁর আইনজীবী। গত এক বছর সে নিজের বিশ্ব বিদ্যালয় বাদে আর কোথাও যায়নি, কোনও ড্রাগ চক্রের সঙ্গেও সে জড়িত নয়। মাদক যদি অন্যের কাছে থেকে উদ্ধার হয়, তার দায় আরিয়ানের নয়।
পালটা রিয়ার মামলার উদাহরণ টেনে আরিয়ানের আইনজীবী বলেন, রিয়ার ঘটনায় মাদকের জন্য টাকা জোগান দেওয়া এবং মাদক মজুত করে রাখার মতো অভিযোগ ছিল। এ ক্ষেত্রে তা নেই। এ বাদেও আরও দু’টি মামলায় আদালতের রায়ের উদাহরণ তিনি টেনে আনেন যেখানে অভিযুক্তকে জামিন দেওয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তিনি দাবি করেন, জামিন অযোগ্য অপরাধের জন্য গ্রেফতার করা হলেও অভিযুক্তের জামিন পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এই দাবি শুনে এনসিবি-র কোনও এক প্রতিনিধি আদালত কক্ষেই হেসে ওঠেন। পালটা আরিয়ানের আইনজীবী বলেন, “কী করি বলুন, গতকাল দু মিনিট বলেই শেষ করলাম। আজ আপনারা অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলকে নিয়ে চলে এলেন।”
সব পক্ষের যুক্তি শুনে আদালত বলে, এই ড্রাগ-চক্রের গোড়ায় পৌঁছতে আরও জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। তবে এনসিবির দাবি অনুযায়ী আরও ১০ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হচ্ছে না। বরং তিন দিনের রিমান্ডেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে এনসিবিকে।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee Oath Ceremony: বিধানসভায় এসে মমতাকে শপথবাক্য পড়ান, ‘অনুরোধ’ গেল রাজ্যপালের কাছে