
নয়া দিল্লি: স্তব্ধ ইন্ডিগোর পরিষেবা। ইন্ডিগো (IndiGo) আজও শতাধিক বিমান বাতিল করে দিয়েছে। দিল্লি বিমানবন্দর থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত ইন্ডিগোর যত বিমান ওড়ার কথা ছিল, সমস্ত বাতিল করা হয়েছে। ভেঙে পড়ছে আকাসা এয়ারের পরিষেবাও। ওয়েবসাইট থেকে টিকিট বুকিং, চেক ইনে সমস্যা হচ্ছে। চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা। এই পরিস্থিতিতে ডিরেক্টর জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (DGCA) তাদের নিয়ম শিথিল করল। তাদের নতুন ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশন রুলসের একটি অংশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নেওয়া হল। তবে তা সাময়িক।
চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে ইন্ডিগোয় অচলাবস্থা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে বাতিল হচ্ছে একের পর এক বিমান। কোনওদিন ১২০০, কোনওদিন ৭০০ বিমান বাতিল হয়েছে। বৃহস্পতিবারও ৫৫০-রও বেশি বিমান বাতিল করতে বাধ্য হয় দেশের অন্যতম বড় উড়ান সংস্থা। এই সমস্ত কিছুর মূলে ছিল পাইলট, ক্রু-দের নতুন ডিউটির নিয়ম। সেই নিয়ম অনুযায়ী রোস্টার তৈরি করতেই চরম পাইলট সঙ্কট দেখা দেয়। বাধ্য হয়ে বাতিল করতে হয় শয়ে শয়ে বিমান।
ডিউটি টাইম লিমিটেশন রুলস অর্থাৎ পাইলট ও বিমান কর্মীরা কতক্ষণ ডিউটি করতে পারবেন, কতক্ষণ তাদের বিশ্রামের সময় দিতে হবে, তা মানতে গিয়েই যাবতীয় সমস্যার সূত্রপাত। নতুন নিয়মে বলা হয়েছিল সাপ্তাহিক বিশ্রামের জন্য যে ছুটি হয়, তার মধ্যে অন্য কোনও ছুটি অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। অর্থাৎ ছুটি নিলে পাইলটদের সাপ্তাহিক বিশ্রামের সময়ের সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করতে বলা যাবে না। পাইলটদের সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টা বিশ্রামের সময় দিতেই হবে। তিনি ছুটি নিন বা না নিন, এই ছুটির সময় পরিবর্তন বা অন্য ছুটিকে সাপ্তাহিক ছুটি বলে ধরা যাবে না। এই নিয়ম কার্যকর করতে গিয়েই ইন্ডিগোর পরিষেবা স্তব্ধ হয়ে যায়।
দিনের পর দিন শতাধিক বিমান বাতিল হওয়ার পর আজ, ৫ ডিসেম্বর ডিজিসিএ-র তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, “পরিষেবা ব্যাহত হওয়া ও বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের আবেদন মেনে আগের নিয়মে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে।”
আজ ডিজিসিএ-র নিয়ম আংশিক প্রত্য়াহার করে নেওয়ায়, এবার পাইলট ও ফ্লাইটের ক্রু মেম্বারদের রোস্টার তৈরির ক্ষেত্রে এয়ারলাইন্সগুলিকে সাপ্তাহিক ছুটি ও অন্য ছুটির মধ্যে আলাদা বিভাজন করার প্রয়োজন পড়বে না। অর্থাৎ সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টার বেশি ছুটি আপাতত তারা পাবেন না।
এর আগে গতকাল রাতেও এফডিটিএলের আরেকটি নিয়মে পরিবর্তন করা হয়েছিল। পাইলটদের সর্বাধিক ১২ ঘণ্টার যে ডিউটি সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, তা বাড়িয়ে ১৪ ঘণ্টা করা হয়।
দেশজুড়ে দৈনিক ২২০০ আন্তর্জাতিক ও অন্তর্দেশীয় বিমান ওঠানামা করে ইন্ডিগোর। নতুন নিয়মে তাদের চরম পাইলট সঙ্কট দেখা দেয়, কারণ তারাও পাইলটদের বিশ্রামের সময় ৩৬ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ৪৮ ঘণ্টা করেছিল। শুধু বৃহস্পতিবারই ৫৫০-রও বেশি বিমান বাতিল করে ইন্ডিগো। সংস্থার তরফেও স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে যে তাদের রোস্টার তৈরিতে ভুল হয়েছে।