অসম: অসমে নৌকাডুবির ঘটনায় গ্রেফতার ৬ জন। অসম ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রান্সপোর্টের(ITW)সদস্য প্রত্যেকেই। জানা গিয়েছে সুরক্ষাবিধি লঙ্ঘন করে ৯০ জনেরও বেশি যাত্রী নিয়ে ব্রহ্মপুত্র পারপার করছিল নৌকাটি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু হয়েছে।
গত ৮ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেলে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে অসমের ব্রহ্মপুত্র নদের নিমাটি ঘাটের কাছে। ভয়াবহ নৌ-দুর্ঘটনায় ডুবে যান শতাধিক যাত্রী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যন্ত্রচালিত নৌকাটি মাজুলির কমলাবাড়ি ঘাটের দিকে যাচ্ছিল। নিমাটি ঘাট থেকে ‘মা কমলা’ নামের ওই নৌকাটি যাত্রা শুরু করার আগেই সেখানে চলে আসে টিকপাই নামে আর একটি লঞ্চ। নৌকা ও লঞ্চের মুখোমুখো সংঘর্ষে একশোরও বেশি যাত্রী নিয়ে ডুবে যায় নৌকাটি। দুটি নৌকা মিলিয়ে প্রায় ১২০ জন যাত্রী ছিলেন। নৌকায় থাকা সাইকেল, মোটরসাইকেল-সহ প্রায় ৩৫টি যানবাহনও ডুবে যায় বলে খবর।
দুর্ঘটনাটি ঘটার পরই কিছুজন যাত্রী সাঁতরে পাড়ে উঠে আসতে পারলেও বাকিরা নদীতেই হাবুডুবু খেতে থাকেন। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারা নদীর জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন উদ্ধার কাজে। কিছুজন যাত্রীকে উদ্ধারও করতে পারেন তাঁরা। খবর দেওয়া হয় প্রশাসনে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এনডিআরএফ বাহিনী এসে উদ্ধারকার্য শুরু করে। মধ্যরাত অবধি উদ্ধারকার্য চলে। ৪২ জনকে উদ্ধার করা গিয়েছিল রাত অবধি। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তিন দিন পরও বিশ্বনাথ ঘাটের পাশ থেকে উদ্ধার হয় দেহ।
পরের দিন ফের শুরু হয় উদ্ধারকার্য শুরু হয়। এসডিআরএফের তরফে জানানো হয়, কমপক্ষে ৮৭ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে আরও সাতজনের নিখোঁজ থাকার রিপোর্ট জমা পড়ে। এদের মধ্যে পাঁচজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও বাকি দু’জনের খোঁজ চালানো হচ্ছে। গতকাল,কাজিরাঙ্গা জাতীয় অরণ্যের কাছে বিশ্বনাথ ঘাটের উত্তর দিক থেকে খোঁজ মেলে একজনের। ঘাটের কাছে পাওয়া যায় মৃতের মানি ব্যাগ। সেই মানি ব্যাগের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় তাঁর পরিচয়পত্র।
জানা গিয়েছে, ব্রহ্মপুত্রের জলস্তর বাড়ার কারণে সতর্কতা হিসাবে বিগত কয়েকদিন ধরে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। কিন্তু পুনরায় তা চালু হতেই হতেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। কর্তব্যে গাফলতির জন্য জলপরিবহণ বিভাগের তিন আধিকারিককে সাসপেন্ডও করা হয়েছিল। জানানো হয়েছিল তদন্তে গাফিলতি প্রমাণ হলে কড়া শাস্তি দেওয়া হবে।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে ওই নৌকাটি ৯২জন যাত্রী নিয়ে পারাপার করছিল। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০৪ ধারায় ইচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টার মামলা রুজু হয়েছে। পাশাপাশি নৌকায় কর্মরত তিনজন কর্মচারিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: New CM of Gujarat: রুপাণীর প্রস্তাবেই সম্মতি, গুজরাটের নয়া মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন ভূপেন্দ্র পটেল