নয়া দিল্লি: একই সময়ে নির্বাচন হয়েছিল দুই রাজ্যের। একদিকে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিল বিজেপি, অন্যদিকে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)-কে নিজের রাজ্যে স্বাগত জানালেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা (Himanta Biswa Sarma)।
রাজ্য়ে এসেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। শিলিগুড়িতে গিয়ে অসমের প্রাক্তন বিধায়ক অলোক ঘোষের বাড়িতেও যান তিনি। প্রয়াত, ওই নেতার পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথাও বলেন তিনি। সেখানেই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে হিমন্ত জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি অসমে আসেন, তবে লাল কার্পেট বিছিয়ে তাঁকে স্বাগত জানাবেন।
The more she (Mamata Banerjee) visits Assam & Tripura, the more it'll benefit us. I'll welcome her by rolling out a red carpet. Polls in Assam & WB took place at same time but not a stone was pelted at any house in Assam. In WB, court had to order CBI probe: Assam CM HB Sarma pic.twitter.com/krOqpzaFgB
— ANI (@ANI) August 29, 2021
তিনি বলেন, “মমতা দিদি যদি অসমে আসেন, তবে আমি লাল কার্পেট বিছিয়ে তাঁকে স্বাগত জানাব, কারণ উনি এলে কংগ্রেস ও ইউডিএফের ভোটই ভাগ হবে, যাতে আখেরে লাভ বিজেপির হবে।” তৃণমূলকে নিয়ে কোনও ভয় রয়েছে নাকি, জানতে চাওয়া হলে অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অসমের এক-দুটি জেলাতেই কিছুটা সক্রিয় হয়েছে তৃণমূল। তাই ওদের নিয়ে কোনও বিপদের আশঙ্কা নেই। আমদের ভোটব্যাঙ্কে প্রভাব ফেলতে পারবে না তৃণমূল।”
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তের কথায়, তৃণমূল ও কংগ্রেস একই দল। ওরা নিজেদের মধ্যে যত লড়াই করবে, ততই বিজেপির লাভ হবে। ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ দাগতে ছাড়েননি অসমের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “একই সময়ে দুই রাজ্য়ে নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু অসমে একটি বাড়িতেও পাথর পড়েনি। আর বাংলায় হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআইকে ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্ত করতে আসতে হয়। একই সময়ে ভোট হলেও অসমে ভোট পরবর্তী হিংসা হয়না বিজেপি শাসনে। ”
পাশাপাশি এনআরসি ও সিএএ নিয়েও কথা বলেন তিনি। হিমন্ত জানান, নাগরিকত্ব নিয়ে বিজেপি সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা অবশ্যই পূরণ করা হবে। অসম এখন শান্তিতেই রয়েছে। সঠিক সময়ে সিএএ ও এনআরসি করা হবে গোটা দেশজুড়েই।
রাজ্যে বিপুল সংখ্যক ভোটে জয়লাভ করে তৃতীয়বারের মতো গদিতে বসার পরই রাজ্যের সীমানা পার করে এ বর জাতীয় রাজনীতিকেই পাখির চোখ বানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রতিবেশী রাজ্য ত্রিপুরা ও অসম দখলের মাধ্যমেই সেই কাজ এগোতে চাইছে ঘাসফুল। সম্প্রতিই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “পশ্চিমবঙ্গে যেমন খেলা হয়েছে, তেমনই ত্রিপুরা, অসম ও দিল্লিতেও খেলা হবে।”
অসমের বিধানসভা নির্বাচন রাজ্যের সঙ্গেই হওয়ায় আপাতত পাখির চোখ ত্রিপুরাই। প্রতি সপ্তাহেই প্রতিবেশী রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। ২০২৩ সালের ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের জয়লাভ নিশ্চিত করতেই বুধবার মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যে যে উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি শুরু করা হয়েছে, তা ত্রিপুরাতেও শুরু করা উচিত ।”
অন্যদিকে, সম্প্রতিই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন সুস্মিতা দেব। মহিলা কংগ্রেসের এই নেত্রী তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় অসমে কংগ্রেস যে বড় ধাক্কা খাবে, তা আন্দাজ করাই যাচ্ছে। তবে এখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তাঁর দলকে নিয়ে চিন্তা করতে রাজি নন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। আরও পড়ুন: ভিডিয়ো: ‘মেরে মাথা ফাটিয়ে দিন’, কৃষকদের রুখতে পুলিশকে নির্দেশ