বেঙ্গালুরু: যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি শ্রীনিবাস বিভিকে নোটিস দিতে রবিবার (২৩ এপ্রিল) কর্নাটকে পৌঁছল অসম পুলিশ। ২ মে সকাল ১১টায় গুয়াহাটির দিসপুর থানায় তাঁকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি, শ্রীনিবাস বিভির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা ও বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছিলেন অসমের প্রাক্তন যুব কংগ্রেস প্রধান অঙ্কিতা দত্ত। শনিবার তাঁকে ‘দলবিরোধী কর্মকাণ্ডে’ যুক্ত থাকার অভিযোগে ছয় বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের অসম শাখার দাবি, অঙ্কিতা যে অভিযোগগুলি করেছেন, তা ‘ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’। দলীয় নেতাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করেছেন তিনি। তার জন্যই তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গত বুধবার অঙ্কিতা দত্ত, দিসপুর থানায় শ্রীনিবাস বিভির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার তাঁকে ডেকে বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছিল সিআইডি। অঙ্কিতার দাবি, শ্রীনিবাস বিভি ‘নারীবিরোধী এবং পুরুষতান্ত্রিক’। জাতীয় মহিলা কমিশনও অসম পুলিশকে তাঁর অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
শনিবার, অঙ্কিতার অভিযোগের ভিত্তিতে অসম পুলিশ, শ্রীনিবাস বিভির বিরুদ্ধে একটি এফআইআর রুজু করে। অসম পুলিশ জানিয়েছে, শ্রীনিবাসের বিরুদ্ধে কোনও মহিলার শালীনতাকে অবমাননা করা, অন্যদের বিরক্ত করার উদ্দেশ্যে অশ্লীল কাজ করা, অন্যায়ভাবে আটকে রাখা, কোন ব্যক্তির উপর হামলা বা অন্যায়ভাবে বলপ্রয়োগ, নারীর শালীনতা ক্ষুন্ন করার উদ্দেশ্যে হামলা বা বলপ্রয়োগ, অপরাধমূলক উদ্দেশ্যে ভয় দেখানো-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির প্রাসঙ্গিক ধারায় মামলা করা হয়েছে। এছাড়া, তথ্য প্রযুক্তি আইনের আওতায় ইলেকট্রনিক আকারে অশ্লীল উপাদান প্রকাশনা করা বা প্রেরণ করার অভিযোগও আনা হয়েছে।
এদিকে, বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা অভিযোগ করেছেন, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার আসলে খবরে থাকতে চাইছেন। আর তার জন্যই তিনি শ্রীনিবাস বিভির বিরুদ্ধে এই পুলিশি পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন। সুরজেওয়ালা বলেন, “আমরা এই প্রোপাগান্ডা সম্পূর্ণরূপে খারিজ করছি। কখন তিনি (হিমন্তবিশ্ব শর্মা) পবন খেরাকে গ্রেফতার করতে চান, কখনও শ্রীনিবাস বিভিকে।” সুরজেওয়ালার এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে এদিন টুইট করে কংগ্রেসকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, কংগ্রেস দলের মধ্যে নিরাপদ পরিবেশের অভাবের জন্য তাঁকে দায়ী করা অনুচিত। তিনি লিখেছেন, “অসম পুলিশ আইন অনুযায়ী কাজ করছে। তারা বর্তমানে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারার অধীনে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এক মহিলা কংগ্রেস কর্মীর দায়ের করা অভিযোগের তদন্ত করছে। কংগ্রেসের মধ্যে মহিলা কর্মীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশের অভাবের জন্য আমাকে দোষ দেওয়া অনুচিত।”
প্রসঙ্গত, শনিবার পর্যন্ত অঙ্কিতা দত্ত ছিলেন অসম প্রদেশ যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী। তিনি অসমের বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা অঞ্জন দত্তের মেয়ে। তরুণ গগৈ মন্ত্রীসভার সদস্য ছিলেন অঞ্জন। একসময় অসম প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি পদেও ছিলেন। কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত হওযার পর, তাঁর মেয়ে বিজেপি বা অন্য কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেন কি না, সেটাই এখন দেখার।