Bangladesh: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদকে ইনিই গুলি করেছিলেন? ভারতে অনুপ্রবেশ করা বাংলাদেশি পুলিশকর্তা আসলে দাগী আসামি!

Bangladesh Police Officer Infiltration in India: গত বছর ১৬ জুলাই ঢাকার জিলা স্কুল মোড় থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যাওয়ার সময় ক্যাপ্টেন ব্যাকোলজি মোড়ে শিক্ষার্থীদের মিছিল আটকে দিয়ে বেধড়ক লাঠিচার্জে নেতৃত্ব দেন তখনকার এসি আরিফুজ্জামান।

Bangladesh: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদকে ইনিই গুলি করেছিলেন? ভারতে অনুপ্রবেশ করা বাংলাদেশি পুলিশকর্তা আসলে দাগী আসামি!
ধৃত বাংলাদেশি পুলিশকর্তা আসলে অপরাধী। শহীদ আবু সাঈদের উপরে গুলি চালানোর অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।Image Credit source: X

| Edited By: ঈপ্সা চ্যাটার্জী

Aug 25, 2025 | 6:46 AM

নয়া দিল্লি ও ঢাকা: ঝড়-বৃষ্টি দুর্যোগের সুযোগ নিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হয়নি। তার আগেই বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে যান হাসিনা সরকারের সেনা আধিকারিক। ধৃত আরিফুজ্জামান-কে ঘিরে হইচই পড়ে যায়। এবার তাঁর সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য সামনে এল। জানা গিয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক খুন ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। 

বাংলাদেশের রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার ছিলেন আরিফুজ্জামান আরিফের। তাঁর বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনের ৩টি হত্যা ও ২টি হত্যার চেষ্টা মামলা রয়েছে বলেই জানা গিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ সূত্রে। 

সাতক্ষীরার কাকডাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার কামরুজ্জামান জানান, শনিবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় বাংলাদেশের সাতক্ষীরার কাকডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার হাকিমপুর চেকপোস্ট পার হচ্ছিলেন আরিফুজ্জামান আরিফ। সেখান থেকে তাঁকে আটক করে বিএসএফ। তাঁর পরিচয়পত্র দেখে শনাক্ত করা হয় যে তিনি বাংলাদেশ পুলিশের কর্মকর্তা।

বর্তমান স্বরূপনগর থানায় রাখা হয়েছে তাঁকে। সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশ হাই কমিশনারেও বিষয়টি জানানো হয়। আরিফের দাবি, ইউনূস সরকার গঠনের পর থেকে তিনি সাতক্ষীরায় গা ঢাকা দিয়েছিলেন। শনিবার বৃষ্টিবাদলের মধ্যে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন, কিন্তু বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে যান।

ভারতে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে ধরা পড়া ওই প্রাক্তন কর্তা সম্পর্কে রংপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (হেডকোয়ার্টার্স) হাবিবুর রহমান জানান, আরিফুজ্জামানের বাড়ি নীলফামারীতে। গত বছর ৫ অগস্টের পর তাঁকে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ থেকে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা এপিবিএনে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয়। এরপর থেকেই তিনি পলাতক।

তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত অভিযুক্ত। ওই মামলায় ৩০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জ গঠনের পর সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। এর মধ্যে ৬ জন গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়াও আরিফুজ্জামানকে রংপুর মহানগর তাজহাট থানায় শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার ৪ নম্বর অভিযুক্ত; কোতোয়ালি থানায় কলা ব্যবসায়ী শহীদ মেরাজুল ইসলাম হত্যা মামলার ২১ নম্বর অভিযুক্ত; একই থানায় সবজি ব্যবসায়ী শহীদ সাজ্জাদ হোসেন হত্যা মামলার ১৬ নম্বর অভিযুক্ত হিসাবেই চিহ্নিত করা হয়েছে।

কোতোয়ালি থানায় কলেজ শিক্ষার্থী জিম হত্যা চেষ্টা মামলার ৫ নম্বর ও পল্লী চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম সিদ্দিকী হত্যা চেষ্টা মামলার ২ নম্বর অভিযুক্ত তিনি।

রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে আগ্রাসী ভূমিকা পালন করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। গত বছর ১৬ জুলাই জিলা স্কুল মোড় থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যাওয়ার সময় ক্যাপ্টেন ব্যাকোলজি মোড়ে শিক্ষার্থীদের মিছিল আটকে দিয়ে বেধড়ক লাঠিচার্জে নেতৃত্ব দেন তখনকার এসি আরিফুজ্জামান। এ ছাড়াও শহীদ আবু সাঈদকে গুলি করার আগে এবং পরে খুব কাছে থেকে নির্দেশ দেন আরিফ এবং নিজেও গুলি করেন।

বাংলাদেশ পুলিশ সূত্রে খবর, গত বছর ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সিটি বাজার সামনে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিতে নিহত কলা ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেন হত্যা মামলাতেও নাম রয়েছে আরিফুজ্জামানের। সেই মামলায় প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে কৌশলে হলফনামা করিয়ে নিজের নাম কেটে দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, গত বছর ১৪ অগস্ট বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে মো. আরিফুজ্জামানকে  সাময়িক বরখাস্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, যেহেতু ভারতে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন, সেখানে কী মামলা হয়, তা আগে দেখা হবে। এটি দুই দেশের বিদেশ মন্ত্রকের বিষয়। ইতিমধ্যেই আরিফুজাম্মানের বিরুদ্ধে থাকা সমস্ত মামলার নথি পাঠানো হয়েছে।