
অযোধ্যা: সবার উপরে মানুষ সত্য! কেবল দেশ নয়, গোটা বিশ্বের কাছে চমক হতে চলেছে অযোধ্যার রাম মন্দির। আয়তন, জৌলুস থেকে শুরু করে মন্দিরের অভ্যন্তরের অসাধারণ শিল্পকর্ম সকলকে তাক লাগিয়ে দিতে চলেছে। মন্দিরের শিল্পকর্মের সঙ্গে প্রধান বিগ্রহ রামের মূর্তিও হতে চলেছে প্রাণোদ্দীপক। আর এই প্রাণোদ্দীপক বিগ্রহের নির্মাণকাজে নিযুক্ত বাংলার শিল্পীও। হিন্দু নন, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ২ মুসলিম শিল্পীর হাতে নির্মিত হচ্ছে রামলালার মূর্তি। যা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
অযোধ্যার রাম মন্দিরের প্রধান বিগ্রহ রামের মূর্তি নির্মাণে নিযুক্ত রয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার ভাস্কর-শিল্পী মহম্মদ জামালউদ্দিন এবং তাঁর ছেলে বিট্টু। অনলাইনে তাঁদের শিল্পকর্ম দেখেই অযোধ্যোয় রাম বিগ্রহের মূর্তি নির্মাণে ডাক পেয়েছেন এই পিতা-পুত্র। রামের মূর্তি নির্মাণে ডাক পাওয়ায় আপ্লুত জামালউদ্দিন। এটা সৌভ্রাতৃত্বের বার্তা বলে মনে করেন তিনি। শিল্পীর কথায়, “ধর্ম ব্যক্তিগত বিষয়। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ রয়েছে। এই কাজের মাধ্যমে একটাই বার্তা স্পষ্ট যে, আমাদের সবাইকে একসঙ্গে থাকতে হবে। আমি ভগবান রামের মূর্তি তৈরি করে আনন্দিত বোধ করছি। একজন শিল্পী হিসেবে আমার বার্তা, এটাই সৌভ্রাতৃত্বের সংস্কৃতি।”
জামালউদ্দিনের হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি নির্মাণ এটাই প্রথম নয়। তিনি দুর্গা, জগদ্ধাত্রীর মূর্তিও নির্মাণ করেছেন এবং সেগুলি জনপ্রিয়তা পেয়েছিল বলেও জানান তিনি। মূলত, ফাইবারের দেবদেবীর মূর্তির কাজ করেন জামালউদ্দিন। তাঁর একটি ওয়ার্কশপও রয়েছে। সেটি মূলত পরিচালনা করেন তাঁর ছেলে বিট্টু। জামালউদ্দিন জানান, কাদামাটির তুলনায় ফাইবার মূর্তিগুলির স্থায়িত্ব বেশি। তাই এগুলির দাম বেশি হওয়া সত্ত্বেও সকলের বেশি পছন্দ। একটি প্রমাণ মাপের ফাইবারের মূর্তি তৈরি করতে ৩০-৩৫ জনের একটি দল নিযুক্ত থাকে এবং প্রায় এক থেকে দেড় মাস সময় লাগে। এক-একটি মূর্তির দাম প্রায় ২.৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তবে সাইজের সঙ্গে জড়িত সূক্ষ্ম কারুকাজের উপর দাম নির্ভর করে।