নয়া দিল্লি: বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তাই শনিবার সিবিআইয়ের তলবে সাড়া দিতে যেতে পারলেন না তেজস্বী। হাসপাতালে ভর্তি স্ত্রীকে দেখতে যাওয়ার জন্যই আরজেডি নেতা সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে পারলেন না বলে তেজস্বী যাদবের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যাচ্ছে। তবে স্ত্রী অসুস্থ হওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন লালু-পুত্র।
তেজস্বী যাদবের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা যাচ্ছে, টানা ১২ ঘণ্টা ধরে ইডি-র জেরায় তেজস্বী যাদবের স্ত্রী রাজস্বী যাদবের রক্তচাপের সমস্যা হয় এবং তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়েন। তার জেরেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে তাঁকে। ফলে স্ত্রীকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার জন্যই এদিন সিবিআই তলবে সাড়া দিতে পারলেন না তেজস্বী যাদব।
জানা গিয়েছে, জমি-দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছে বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা লালু-পুত্র তেজস্বী যাদবের। সেই মামলাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এদিন তেজস্বী যাদবকে তলব করেন সিবিআই গোয়েন্দারা। এদিন দুপুরের মধ্যে তাঁকে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (১০ মার্চ) চাকরি দুর্নীতি মামলায় তেজস্বী যাদবের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিলেন ইডি গোয়েন্দারা। সকাল থেকে প্রায় ১১ ঘণ্টা ধরে তেজস্বীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন গোয়েন্দারা। পাশাপাশি তেজস্বী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগ-সাজশ রয়েছে, এরকম দু-ডজনের বেশি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায় ইডি। সেই তল্লাশি অভিযানে দেড় কেজির বেশি সোনার গয়না এবং নগদ ৭০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে।
এর আগে চাকরি দুর্নীতি মামলায় বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা লালু-পত্নী রাবড়ি দেবীর পাটনার বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল সিবিআই। তারপর একই মামলায় দিল্লিতে লালু-কন্যা তথা সাংসদ মিসা ভারতীর বাড়িতেও অভিযান চালায় সিবিআই। সেখানে মিসা ভারতীর পাশাপাশি আরজেডি সুপ্রিমো তথা প্রাক্তন রেলমন্ত্রী ও বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবকেও জেরা করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
প্রসঙ্গত, সিবিআইয়ের চার্জশিট অনুযায়ী, ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে এই দুর্নীতি হয়। ভারতীয় রেলওয়ের অধীনে থাকা পুরী ও রাঁচীর হোটেল প্রথমে আইআরসিটিসির হাতে তুলে দেওয়া হলেও, পরে তা পটনার সুজাতা হোটেল প্রাইভেট লিমিটেড নামক একটি বেসরকারি সংস্থাকে লিজ দেওয়া হয়। পরে তদন্তে নেমে জানা যায়, জলের দরে বা উপহার হিসাবে জমি দেওয়ার পরিবর্তে ভারতীয় রেলওয়েতে চাকরির সুযোগ দেওয়া হত। যাদব পরিবার ও তাদের ঘনিষ্ঠরাই এই দুর্নীতিতে উপকৃত হয়েছিলেন। সিবিআইয়ের চার্জশিটে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব, তাঁর স্ত্রী তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবী ও ১৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আগামী ১৫ মার্চ চার্জশিটে উল্লেখ করা সমস্ত ব্যক্তিদের হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।