
নয়া দিল্লি: সংগঠন দুর্বল নাকি কোথাও স্ট্র্যাটেজি কোনও বড় ভুল থেকে গিয়েছে? নাকি টিকিট বণ্টনে কোনও সমস্যা? বিহারে কেন কংগ্রেসের শোচনীয় অবস্থা? এবার আত্মসমালোচনায় পথ অনুসন্ধানের পথে কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিহার বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে কংগ্রেস নেতা কৃষ্ণানন্দ পাঠকের মতে, রাজ্যে সংগঠনের ক্ষেত্রে কোথাও কোনও ঘাটতি থেকে গিয়েছে। ANIকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “সঠিক মানুষের সম্পর্কে নির্ভুল তথ্য সংগ্রহ করা হয়নি। ভুলে হোক বা অবহেলায়—এত বড় ভুল কীভাবে হতে পারে? মানুষ আমাদের কাছে এখনও অভিযোগ জানাচ্ছেন, কিন্তু আমরা মনে করি যে বিষয়গুলো উচ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে যাওয়ার কথা ছিল, সেগুলো ঠিকমতো জানানো হয়নি।” তাঁর মতে, এখনও দলের সংগঠনে নজর দিতে হবে, নাহলে তা গুরুতর সঙ্কটে পরিণত হতে পারে।
Patna, Bihar: On the #BiharAssemblyElections, Congress leader Kripananth Pathak says, “We believe that those in the state who were responsible did not convey the correct information. They did not gather accurate details about the right people. Whether it was by mistake or… pic.twitter.com/iGCtAdAiFy
— IANS (@ians_india) November 14, 2025
বিপুল জয়ে বিহারবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে কংগ্রেসকে একহাত নিলেন আজ প্রধানমন্ত্রী মোদি। বললেন, ‘বিহারে কংগ্রেসের সরকার আর কখনও ফিরে আসবে না।’ বিহারে গত বিধানসভা নির্বাচনে যে দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছিল, এ বার তার করুণ দশা। এক থেকে একেবারে তিন নম্বরে চলে যেতে চলেছে লালু প্রসাদ যাদব, তেজস্বী যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল, আরজেডি। কংগ্রেসের হাল শোচনীয়। এই পরিস্থিতি খুবই ‘হতাশাজনক’, বললেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। ANI-কে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এটা খুব স্পষ্ট যে এনডিএ-র লিড রয়েছে। এটা অবশ্যই খুবই হতাশাজনক, এবং যদি এটাই চূড়ান্ত ফল হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে আমার মনে হয় খুব সিরিয়াস আত্মসমালোচনা করতে হবে। শুধু বসে ভাবলে হবে না—কী ভুল হল, কোথায় কৌশলগত, বার্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে বা সংগঠনগত ভুল ছিল, সেগুলো খুঁজে দেখতে হবে।”
#WATCH | Thiruvananthapuram, Kerala: On #BiharElections, Congress MP Shashi Tharoor says, “… it’s very clear that the lead is overwhelmingly with the NDA. It’s obviously seriously disappointing, and if that turns out to be the final result, then I think there will have to be… pic.twitter.com/10rnFhMEs1
— ANI (@ANI) November 14, 2025
কথা প্রসঙ্গেই তিনি জানান, তাঁকে বিহারের প্রচারের জন্য আমন্ত্রণই জানানো হয়নি। তবে এই ফলাফলের জন্য দলীয় নেতৃত্বেরই গভীরভাবে বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে বলে তাঁর মত, বললেন, “ভুলত্রুটি নেতৃত্বকেই খুঁজে বার করতে হবে, দেখতে হবে কোথায় ভুল হয়েছে! ”
অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন রাজ্যপাল নিখিল কুমারের বক্তব্য, সাংগঠনিক স্তরেই কোথাও একটা খামতি রয়েছে। তারই প্রতিফলন পড়েছে ফলাফলে। আবার প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রেও আরও বেশি নজর দেওয়ার প্রয়োজন ছিল বলে তাঁর মত। তিনি বলেন, “এই ফলাফল আমাদের সংগঠনের দুর্বলতাকেই প্রতিফলিত করে। যে কোনও নির্বাচনে একটি রাজনৈতিক দল তার সংগঠনের শক্তির ওপরই নির্ভর করে। যদি সংগঠন দুর্বল হয় এবং কার্যকরভাবে কাজ করতে না পারে, তবে সামগ্রিক ফলাফল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।” কথা প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, “আমাদের প্রার্থীরা খুবই সক্ষম, কিন্তু আরও ভাল প্রার্থীও বেছে নেওয়া যেত। সংগঠনকে কৌশলগতভাবে, বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজ করতে হত এবং সব আসনে শক্ত উপস্থিতি বজায় রাখতে হত।”
Patna, Bihar: On state Assembly elections, Congress leader and former Governor Nikhil Kumar says, “This reflects the weakness of our organization. In any election, a political party relies on its organizational strength. If the organization is weak and cannot function… pic.twitter.com/s0FMnjTytd
— IANS (@ians_india) November 14, 2025
কংগ্রেস সাংসদ অখিলেশ প্রসাদ সিং নির্বাচন ফলাফল নিয়ে বলেন, ” কোথায় কংগ্রেস পিছিয়ে পড়ল, আমরা তা আত্মসমালোচনার মাধ্যমে খতিয়ে দেখব।” বিহার নির্বাচনে কংগ্রেসের ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে প্রাক্তন বিহার মন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা শাকিল আহমদ আবার টিকিট বন্টনের ক্ষেত্রে অনিয়মেরও অভিযোগ তোলেন। তাঁর কথায়, “আমি এখন কংগ্রেসে নেই। আমার কথা বলার কোনও অধিকার নেই। কিন্তু টিকিট বণ্টনের ঠিক পরেই কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা একটি প্রেস কনফারেন্স করে বলেন,কেউ কেউ ব্যক্তি ভুল কারণে টিকিট বণ্টন করেছেন, আর্থিক অনিয়ম সহ আরও নানা অভিযোগ তোলেন… আমরা আশা করি যে তদন্ত হবে।”
২০১০ সালে কংগ্রেস জোট ছাড়া নির্বাচনে লড়েছিল। সে সময়ে চারটে আসনে জিতেছিল কংগ্রেস। এই জোট নিয়েই কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, ২০১০ সালে যে চারটি আসনে কংগ্রেস জিতেছিল, তার মধ্যে তিনটি ছিল সীমাঞ্চলে এবং একটি ছিল ভগতলপুরে। আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দল যে আসন জিতছে। কংগ্রেস নেতার ব্যাখ্যা, তাতে বোঝা যায় সীমাঞ্চলের সংখ্যালঘু সমাজ হয়তো মনে করেছে তারা দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে। কংগ্রেস একেবারেই দাগ কাটতে পারেনি, তাতে বেশিরভাগ দলীয় নেতৃত্বই আরও বেশি আত্ম অনুশীলনের ওপরেই জোর দিচ্ছেন।