পটনা: দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে একটি পা, কিন্তু স্বপ্ন কাড়তে পারেনি। এক পায়ে ভর দিয়েই রোজ স্কুলে পৌঁছে যায় ১০ বছরের ছোট্ট সীমা। ইচ্ছাশক্তি, জেদের কাছে হার মানে প্রতিবন্ধকতাও- বিহারের জামুই জেলার সীমা তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। বাড়িতে অভাব। বাবা,মা দিনমজুরি করে কোনও মতে সংসার চালায়। বছর দুয়েক আগে এক পথ দুর্ঘটনায় এক পা হারিয়েছে ১০ বছরের মেয়েটি। কিন্তু এ সব বাধা তাঁর স্কুলে যাওয়ার ইচ্ছাকে দমিয়ে দিতে পারেনি। তাঁর স্বপ্ন বড় হয়ে শিক্ষিকা হওয়ার। সে জন্য স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা শিখতে হবে। তাই সব বাধাকে তুচ্ছ করে গ্রামের কাঁচা রাস্তা দিয়েই সে রোজ পাড়ি দেয় এক কিলোমিটার পথ। দুর্ঘটনা হাঁটার ক্ষমতা কেড়েছে। তাই এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়েই স্কুলে পৌঁছে যায় সে। পড়াশোনা করা নিজের পায়ে দাঁড়ানোর আশায়। একরত্তি মেয়ের অদম্য জেদ মন ভিজিয়েছে অভিনেতা সোনু সুদ, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীব সহ সমগ্র নেটদুনিয়ার।
শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে স্কুলে ভর্তি হয়েছিল সীমা। তার বাড়ি বিহারের জামুই জেলার একটি গ্রামে। কিন্তু বছর দুয়েক আগে পথ দুর্ঘটনায় বলি যায় তার একটি পা। এর পর পড়াশোনা বন্ধ হতে বসেছিল। দুর্ঘটনা ওইটুকু মেয়ের পা কেড়ে নিয়েছে, কিন্তু পড়াশোনার প্রতি তার অদম্য উৎসাহ কাড়তে পারেনি। বাড়ির লোকও তার জেদের কাছে হার মানে। এক পা নিয়েই শুরু হয় ১০ সীমার স্বপ্ন সত্যি করার সফর। এক কিলোমিটার পথ এক পায়ে ভর দিয়ে পেরিয়েই রোজ স্কুল গিয়েছে সে। এ ভাবে স্কুলে যাওয়ার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে নেটমাধ্যমে।
Bihar: जमुई में एक पैर से 1KM का सफर तय कर स्कूल जाती है बिहार की ये बेटी
एक हादसे में मासूम का काटना पड़ा था पैर, हौसला देख करेंगे सलाम pic.twitter.com/pc6vUV2iLb
— News24 (@news24tvchannel) May 25, 2022
সেই ভিডিয়ো নজরে আসে অভিনেতা সোনু সুদ, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের মতো অনেকেরই। সেই ভিডিয়ো দেখে, সীমার নকল পা লাগানোর ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রতি দিয়েছেন সোনু। সীমার স্কুলে যাওয়ার ভিডিয়ো শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, “এখন থেকে আর এক পায়ে লাফিয়ে স্কুলে যেতে হবে না ওকে। দু পায়ে ভর দিয়েই স্কুলে যাবে। আমি টিকিট পাঠাচ্ছি।” অরবিন্দ কেজরীবাল লিখেছেন, “যোদ্ধাদের কাছে সীমা অনুপ্রেরণ। ১০ বছরের মেয়ের লড়াই আমাকে আবেগতাড়িত করেছে। এই দেশের প্রত্যেক বাচ্চার চাই ভাল শিক্ষা। আমি রাজনীতি বুঝতে চাই না। প্রত্যেক সরকারে ক্ষমতা রয়েছে। সীমার মতো এ দেশের সকলে পড়াশোনার সুযোগ দিতে পারলে, সেটাই হবে দেশপ্রেম।”
अब यह अपने एक नहीं दोनो पैरों पर क़ूद कर स्कूल जाएगी।
टिकट भेज रहा हूँ, चलिए दोनो पैरों पर चलने का समय आ गया। @SoodFoundation ?? https://t.co/0d56m9jMuA— sonu sood (@SonuSood) May 25, 2022
সীমার এই লড়াই নজরে এসেছে বিহারের শিক্ষামন্ত্রীরও। তিনি টুইটে লিখেছেন, “এ রকম শিশুর জন্য আমরা গর্বিত। সীমার মতো প্রত্যেক বাচ্চাকে চিহ্নিত করে ওদের সাহায্য করার দরকার।” এই ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকরা পৌঁছে গিয়েছিলেন সীমার কাছে। সীমাকে একটি হুইল চেয়ারও দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে। তিন চাকার ওই হুইলচেয়্যারে করেই এ বার থেকে স্কুলে যাবে সীমা। স্বপ্ন যে সীমায় আবদ্ধ থাকে না, তা আরও এক বার বুঝিয়ে দিল ১০ বছরের এই ছোট্ট মেয়েটি।