
পটনা: শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ছিল ছোট থেকেই। সম্প্রতিই পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণও হন তিনি। গ্রামে এই খবর চাউর হয়ে যেতেই বাড়িতে ভিড় জমিয়েছিল সকলে। বাহবা দিয়েছিল পরীক্ষায় ভাল ফলের জন্য। কিন্তু পরীক্ষার ভাল ফল ও শিক্ষক হওয়ার সুযোগই যে এমন বিপদ ডেকে আনবে, তা কে জানত। স্কুল থেকেই অপহৃত হলেন শিক্ষক। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তাঁকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হল অপহরণকারীর মেয়ের সঙ্গে। এই ঘটনাকে ঘিরেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের বৈশালী জেলায়। গৌতম কুমার নামক ওই ব্যক্তি সম্প্রতিই বিহার পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং শিক্ষকতার সুযোগ পান। তবে ডিউটিতে যোগ দেওয়ার দিন কয়েক বাদেই হঠাৎ তাঁর স্কুলে হাজির হয় ৪-৫ জন ব্যক্তি। কথা বলার অছিলায় ওই শিক্ষককে স্কুলের বাইরে আনা হয়। সেখান থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। ২৪ ঘণ্টা বাদে ওই অপহরণকারী তাঁর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে জোর করে তাঁর মেয়েকে বিয়ে করতে বাধ্য করেন।
এদিকে, বুধবার থেকে ওই শিক্ষককে খুঁজে না পাওয়ার পরই তাঁর পরিবারের সদস্যরা রাতে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখান। অভিযোগের ভিত্তিতে তল্লাশি অভিযান শুরু করে পুলিশ। জানা গিয়েছে, সম্প্রতিই পতেপুরের উতক্রমিত মধ্য বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন গৌতম কুমার। সরকারি চাকরি পাওয়ার খবর চাউর হতেই তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ধরে বেঁধে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়।
অপহৃত ওই শিক্ষকের পরিবারের অভিযোগ, রাজেশ রাই নামক এক ব্যক্তি তাঁর ছেলেকে অপহরণ করেছেন এবং জোর করে তাঁর মেয়ে চাঁদনির সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, চাকরির খবর পেতেই বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন রাজেশ রাই। কিন্তু সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতেই অপহরণ করে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিহারে এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়। অপহরণ করে বিয়ে দেওয়াকে ‘পাকওয়াড়া বিবাহ’ বলা হয়। ভাল চাকরি বা ব্রাহ্মণ ছেলে হলেই অপহরণ করে বিয়ে দেওয়া হয়। গত বছরও বিহারের বেগুসরাইয়ে এক পশু চিকিৎসককে বাড়িতে ডাকা হয়েছিল পশুর চিকিৎসা করার জন্য। সেখানে যেতেই তাঁকে ধরে বেঁধে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়।