
চণ্ডীগঢ়: প্রাপ্তবয়স্ক হয়নি, তার আগেই কাজের টোপ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ভিন রাজ্যে। সেখানে জোর করে তাঁকে দিয়ে মেশিনে খড় কাটানো হত। চলত অকথ্য অত্যাচারও। মেশিনে হাত ঢুকে কেটে যায় ওই ১৫ বছরের কিশোরের। ওই অবস্থাতেও তাঁকে ছাড়া হয়নি। শেষে বাধ্য হয়ে পালিয়ে আসে কিশোর। কাটা হাত নিয়েই ১৫০ কিলোমিটার হেঁটে আসে কিশোর।
বর্তমানে হরিয়ানার রোহতকের পিজিআইএমএসে ভর্তি ওই কিশোর। তাঁর চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য চেয়েছে পরিবারের সদস্যরা।
জানা গিয়েছে, বিহারের বাসিন্দা ওই কিশোর। তাঁকে ১০ হাজার টাকার বেতনের লোভ দেখিয়ে আনা হয়েছিল হরিয়ানার জিন্দে। সেখানে তাঁকে ডেয়ারি ফার্মে কাজ করানো হত। যাতে পালিয়ে যেতে না পারে, তার জন্য একটি ছোট্ট ঘরে আটকে রাখা হত তাঁকে কাজ শেষ হলেই। কোনও বেতন দেওয়া হত না। এমনকী ঠিক মতো খাবারও দেওয়া হত না।
সম্প্রতিই মেশিনে পশুর জন্য খড় কাটতে গিয়ে ওই কিশোরের হাত মেশিনের ভিতরে ঢুকে যায়। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিশোরের হাত। তারপরও ওই ফার্ম থেকে কিশোরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি। তাঁকে ইঞ্জেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে দেওয়া হয়। কিশোরের যখন জ্ঞান ফেরে, সে দেখতে পায় একটি প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্রে শুয়ে। পকেটে কিছু টাকা রাখা। এরপরই আবার সংজ্ঞা হারায় সে। দ্বিতীয়বার জ্ঞান ফিরতেই দেখে, উধাও হয়ে গিয়েছে সঙ্গে থাকা টাকাও। ডিসপেনসারির কর্মী দুর দুর করে তাঁকে তাড়িয়ে দেয়।
এভাবে নির্যাতন, হেনস্থার শিকার হয়ে কিশোর সিদ্ধান্ত নেয় সে পায়ে হেঁটেই ১০০০ কিলোমিটার দূরে বিহারে নিজের বাড়িতে ফিরে যাবে। আহত, রক্তাক্ত অবস্থাতেই সে হাঁটতে শুরু করে। প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পথ অতিক্রমও করে ফেলে।
হরিয়ানার নুহ দিয়ে যাওয়ার সময় একটি স্কুলের দুই শিক্ষক কিশোরকে ওই অবস্থায় দেখে। তারা পুলিশের কাছে নিয়ে যায়। হাসপাতালেও ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকরা কনুই থেকে কিশোরের হাত বাদ দিতে বাধ্য হয়েছেন।