Bihar political crisis : বিহারে সরকারের পতন, আজই ইস্তফা নীতীশের

Bihar Political Crisis : বিহারে বিজেপি-জেডিইউ জোট সরকারের পতন। আজ মঙ্গলবারই  রাজ্যপালের কাছে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে চলেছেন জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমার। 

Bihar political crisis : বিহারে সরকারের পতন, আজই ইস্তফা নীতীশের
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Aug 09, 2022 | 3:32 PM

পটনা : মহারাষ্ট্রের পর এবার বিহার। দীর্ঘ জল্পনার অবসান। বিহারে সরকারের পতন। ভেঙে দেওয়া হল বিজেপি-জেডিইউ জোট। এদিন জেডিইউ সাংসদ ও বিধায়কদের নিয়ে নিজ বাসভবনে বৈঠকে বসেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। সেই বৈঠকের শেষেই জানা যায়, আর জোট সরকারে থাকছে না জেডিইউ ও বিজেপি। এর পাশাপাশি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, আজই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে চলেছেন নীতীশ কুমার। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস ও আরজেডি নীতীশকে সমর্থনের কথা জানিয়েছে। পাঁচ বছর পর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

মহারাষ্ট্রের মহানাটকের যবনিকা পতন হতে না হতেই পালাবদলের সুর শোনা যাচ্ছিল বিহারেও। তবে এখানে বিজেপির ভূমিকা বিপরীত। মহারাষ্ট্রের মহা বিকাশ আগাড়ির ঘর ভাঙিয়ে সেখান শিন্ডে-বিজেপি সরকার গঠন করেছে। তবে এখানে বিজেপিরই ঘর ভাঙল। ২০২০ সালে বিজেপি-জেডিইউ হাত মিলিয়ে সরকার গঠনের পর দু’ বছরের মধ্যে তার সমাধি হল। ২০১৫ সালে একইভাবে বিজেপির হাত ছেড়ে আরজেডির সঙ্গে সরকার গঠন করেছিল নীতীশ কুমার। সেই সময়েরই পুনরাবৃত্তি হল ২০২২ সালেও।

গত দু’দিন ধরে যে প্রশ্নটা উঁকি দিচ্ছিল আজ তা প্রকাশ্যে আসল। নয়া রাজনৈতিক মোড়ের জল্পনার মাঝেই গতকাল জেডিইউ সাংসদ ও বিধয়াকদের সঙ্গে বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। এদিন পরিকল্পনা মতো বৈঠকও মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে বৈঠকও হয়। জেডিইউ ছাড়াও নিজেদের মতো করে বৈঠক করে বিজেপি ও আরজেডিও। জেডিইউ সাংসদ-বিধায়কদের বৈঠকেই জোট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। এদিকে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, জোটে থাকতে চায় না বিজেপিও। এই আবহে ইতিমধ্যে কংগ্রেস ও আরজেডি নীতীশকে সমর্থনের কথা জানিয়ে দিয়েছে। এদিন রাজভবনে বিকেল ৪ টেয় রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা। সেখানে জেডিইউ ও আরজেডির বিধায়করা রাজভবনে পৌঁছে যাবেন বলে জানা যাচ্ছে।

এদিকে বিহারে বিজেপি ও জেডিইউ-র সম্পর্কে চিড় ধরছে তা আগেই টের পাওয়া গিয়েছিল। বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বিজেপি ও জেডিইউকে সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে অবস্থান করতে দেখা গিয়েছে দুই শরিক দলকে। তার মধ্যে সাম্প্রতিক ইস্যু হল কেন্দ্রের অগ্নিপথ প্রকল্প। এরপর সম্পর্কের ফাটল আরও জোড়ালো হয় আরসিপি সিংকে রাজ্যসভার টিকিট দেওয়া নিয়ে। একদা নীতীশের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আরসিপি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। তবে তাঁকে এবার রাজ্যসভার টিকিট দেয়নি জেডিইউ। এর জেরে তিনি মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করতে বাধ্য হন। মনে করা হচ্ছে, আরসিপি সিংয়ের বিজেপি ঘনিষ্ঠতার কারণেই নীতীশ কুমার তাঁকে টিকিট দেননি। এদিকে নীতীশ আরসিপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এই আবহে আরসিপি জেডিইউ ছেড়ে নীতীশকে আক্রমণ শানাতে শুরু করেছেন। এই গোটা পর্বে বিজেপির ইন্ধন রয়েছে বলে মত জেডিইউ-র একাংশের।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের নির্বাচনে অপেক্ষাকৃত কম ভোট এসেছিল জেডিইউ-র ঘরে। তবে জেডিইউ ও বিজেপি জোট সেই সময় অক্ষত রাখতে মরিয়া ছিল গেরুয়া শিবির। সেই কারণে নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসিয়েছিল বিজেপি। তবে শেষ রক্ষা হল না। নীতীশ নিজের রীতি বজায় রেখে বিজেপির সঙ্গে বন্ধন ছিন্ন করে আরজেডির সঙ্গে হাত মেলাতে চলেছে। ২০২০ এর নির্বাচনের পর ২৪৩ টি আসন সমন্বিত বিহার বিধানসভায় আরজেডির মোট বিধয়াক সংখ্যা রয়েছে ৭৯, বিজেপির ৭৭, জেডিইউ-র ৪৫ জন বিধায়ক রয়েছেন। আর কংগ্রেসের রয়েছে ১৯ জন বিধায়ক ও সিপিএমএলের ১২ জন বিধায়ক। জেডিইউ-বিজেপি সরকারের সংখ্যা ছিল ১৬৪। এবার আরজেডি-জেডিইউ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মুখ কে থাকবেন তাই দেখার।