নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেই এই জঙ্গি হামলা, আজব যুক্তি রবার্টের, ‘পাকিস্তানের প্রতিনিধি নাকি?’ প্রশ্ন বিজেপির

Pahalgam Tourist Attack: রবার্ট বলেন, "জঙ্গিরা হামলা করার আগে পর্যটকদের পরিচয়পত্র দেখতে চেয়েছিলেন। কেবল অ-মুসলিমদের বেছে বেছে হত্যা করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে বার্তা পৌঁছে দিতে বলা হয়। কেন এই ঘটনা ঘটল? কারণ ওঁরা মনে করে আমাদের দেশে মুসলিমদের সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে।"

নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেই এই জঙ্গি হামলা, আজব যুক্তি রবার্টের, পাকিস্তানের প্রতিনিধি নাকি? প্রশ্ন বিজেপির

Apr 25, 2025 | 3:43 PM

পহেলগাঁও হামলারা আবহে চাপে গান্ধী পরিবার? ওয়েনাড়ের সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর স্বামী ব্যবসায়ী রবার্ট বঢ়রার মন্তব্য ঘিরে যত বিতর্ক। বুধবার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে পহেলগাঁও হামলার তীব্র নিন্দা করেন রবার্ট।

তিনি বলেন, “এই ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। নিরপরাধ মানুষকে খুন করে কোনও মানুষ কখনও নিজেকে ব্যাখ্যা করতে পারে না। সন্ত্রাসের কোনও ধর্ম হয় না, কেবল মনুষত্বকে আঘাত হানে।” এরপরের মন্তব্য নিয়েই ওঠে বিতর্কের ঝড়।

রবার্ট বলেন, “জঙ্গিরা হামলা করার আগে পর্যটকদের পরিচয়পত্র দেখতে চেয়েছিলেন। কেবল অ-মুসলিমদের বেছে বেছে হত্যা করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে বার্তা পৌঁছে দিতে বলা হয়। কেন এই ঘটনা ঘটল? কারণ ওঁরা মনে করে আমাদের দেশে মুসলিমদের সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে।”

এই মন্তব্যকে ঘিরেই হয়েছে বিতর্কের ঝড়। বিজেপি মুখপাত্র সিআর কেসভন বুধবার এই বিষয়ে একহাত নিয়েছেন রবার্টকে। তিনি বলেন, “রবার্ট বঢ়রার এই লজ্জাজনক বক্তব্য ক্ষমার অযোগ্য এবং অমার্জনীয়। তিনি কি পাকিস্তানের প্রতিনিধি নাকি খুনি-সন্ত্রাসীদের প্রতিনিধি? তিনি যখন বলেন যে এই জঘন্য সন্ত্রাসীদের ভারতীয়দের হত্যা করার যুক্তি আছে, তখন তিনি সন্ত্রাসীদের ভাষায় কথা বলছেন বলে মনে হচ্ছে… রবার্ট বঢ়রা যেভাবে কথা বলছেন এবং বিবৃতি দিচ্ছেন, তাতে মনে হচ্ছে যেন সন্ত্রাসীদের এই হামলা করার যুক্তি আছে…।”

বিজেপির আইটি বিভাগের প্রধান অমিত মালব্য এক্স মাধ্যমে সেই ভিডিয়ো প্রকাশ করে লেখেন, “নির্লজ্জভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পক্ষে কথা বলেন, সন্ত্রাসীদের নিন্দা করার পরিবর্তে তাদের আড়াল করেন।”

বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র নলিন কোহলি পিটিআইকে বলেন, রবার্টের মন্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে তিনি এই ধরণের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে রাজনীতি করতে চান। তিনি বলেন, “রবার্ট বঢ়রার মন্তব্য নিন্দনীয়। সন্ত্রাসীরা সর্বদা তাঁদের সন্ত্রাসবাদকে ন্যায্য প্রমাণ করার জন্য এই একই ভাষা ব্যবহার করে। রবার্ট বঢ়রার মন্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে তিনি যখন এই ধরণের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ, তখন তিনি এই ধরণের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে রাজনীতি করতে চান।” ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়ালা এই বক্তব্যকে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীর নির্দেশে রবার্ট বঢ়রা এবং কংগ্রেস দলের করা এই মন্তব্য লজ্জাজঙ্ক এবং জঘন্য। পাকিস্তানি সন্ত্রাসীদের রক্ষা করার জন্য করা হয়েছে, ইসলামিক জিহাদের অপরাধকে লুকোনোর চেষ্টা, হিন্দুদের দোষারোপ করা এবং সন্ত্রাসকে ন্যায্য প্রমাণ করার জন্য এই বক্তব্য করা হয়েছে।”

যদিও বঢ়রার মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হতেই রবার্ট জানান তিনি তাঁর পরিবার বা কংগ্রেস দলের হয়ে কিছু বলেননি। তিনি বলেন, “সন্ত্রাসবাদ কোনও ধরণের ধর্মের দিকে নজর দেয় না। আমার মনে হয় যখনই কোনও দেশে সাম্প্রদায়িক সমস্যা দেখা দেয়, তখন মানুষ দুর্বল বোধ করে। একটা বিভাজন আছে এবং আমরা আমাদের দেশেও তা দেখতে পাই।”

রবার্টের কথায়, “আমি দেখতে পাচ্ছি যে সংখ্যালঘুদের কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে। নিজের বাড়ির ছাদে প্রার্থনা করার অনুমতি নেই। রাস্তায় কাউকে প্রার্থনা করতে দেওউয়া হয়না। মসজিদের জরিপ করা চলছে। কেন এমন হয়? এক ধর্মের মানুষ রাস্তায় তাঁদের ঈশ্বর এবং বিশ্বাস উদযাপন করতে পারে। মুসলমানরা তাঁদের ঈশ্বরের প্রার্থনা করলে তাঁকে, থামানো হয়?”

রবার্ট জানান শেষবার যখন তিনি সংখ্যালঘুদের পক্ষে কথা বলেছিলেন, তাঁকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তলব করেছিল। কিন্তু যখনই কোনও অন্যায় ঘটবে তখনই তিনি তার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলবেন।

রবার্ট বলেন, “এখনই সময় আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। রাজনীতি ও ধর্মকে আলাদা করার। ধর্মভিত্তিক রাজনীতি সর্বদা বিভাজন ও বিচ্ছিন্নতার কারণ। কোনও অগ্রগতি হয় না। রাজনৈতিক দলগুলিকে আত্মসমালোচনা করতে হবে। আমি যা বলছি, তা আমার চিন্তাভাবনা, এটা কংগ্রেস দল বা আমার পরিবারের ভাবনা নয়।”