
তিরুবনন্তপুরম: হুগলির মেমারিতে এক বিএলও-র মৃত্যু প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল একাধিক। কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিল ভোটার তালিকার নিবিড় পরিমার্জনকে। এবার সেই একই ছবি প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার দূরে। বাংলার মতো কেরলেও চলছে ভোটার তালিকার নিবিড় পরিমার্জনের কাজ। তারই মাঝে বুথ স্তরের আধিকারিক বা বিএলও-র মৃত্যু ঘিরে ছড়াল উত্তেজনা। পরিবারের অভিযোগ, এসআইআর জন্য় তৈরি হওয়া কাজের চাপের দিকে। উঠল এসআইআর বয়কটের ডাকও।
এই ঘটনা কেরলের কন্নুড়ের। নিহতের নাম অনীশ জর্জ। তিনি পেশায় শিক্ষক ছিলেন। রবিবার অনীশের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, এসআইআরের কাজের চাপেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। এরপরই রাজ্যের শিক্ষক, সরকারি কর্মচারীদের সংগঠনগুলি তিরুবনন্তপুরমে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। দাবি তোলে, অতিরিক্ত কাজের চাপ দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি ওঠে এসআইআরের কাজ বয়কটের ডাকও। এদিন সে রাজ্যের সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদের অ্যাকশন কাউন্সিল-সহ বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা এসআইআরের কাজে যোগ দেবে না বলে জানিয়ে দেয়। প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলে জেলাশাসকের দফতরগুলি ঘিরেও।
এই সংগঠনগুলির অভিযোগ, এসআইআরের কাজের জন্য বিএলও-দের উপর অমানসিক চাপ তৈরি করা হচ্ছে। হাতে খুব অল্প সময়, কিন্তু কাজ আকাশছোঁয়া। এই চাপই বিএলওদের আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। একই দাবি নিহতের পরিবারেরও। অনীশের বাড়ির লোক জানিয়েছে, এসআইআরের কাজের চাপে নাওয়া-খাওয়ার ভুলে গিয়েছিলেন তিনি। কাজ শেষ করার তাগাদা দিতে প্রতি মুহূর্তে ফোন করতেন উর্ধ্বতনেরা।
অবশ্য এই ঘটনায় কেরলের কংগ্রেস নেতা তথা বিরোধী দলনেতা ভিডি সতীশন সিপিএম কর্মীদের দিকেই আঙুল তুলেছেন। তাঁর দাবি, ‘জর্জের সঙ্গে কংগ্রেসের এক কর্মী ফর্ম বিলির কাজে বেরিয়েছিলেন। তাই সিপিএমের নেতা-কর্মীরা তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন। বিজেপি এবং সিপিএম আসলে কংগ্রেসের ভোটারদের নাম বাদ দিতে চায়।’ অবশ্য এই সব অভিযোগ মানতে নারাজ শাসক শিবির। এদিন সিপিএম নেতা এমভি জয়রাজন বলেন, ‘জর্জ হয়তো মনে করেছিলেন, জীবন শেষ করা ছাড়া কোনও উপায় নেই। নির্বাচনের আগে পর্যন্ত এই এসআইআর-এর কাজ বন্ধ রাখা হোক, এটাই আমাদের আবেদন।’