নয়া দিল্লি: বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে ব্যাপকহারে বেড়েছে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা। আবার অনেক অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিক, যারা দীর্ঘদিন ধরে ভারতে ছিল, তারাও দেশে ফেরার পথে ধরা পড়ছে। এই অবস্থায়, সন্দেহভাজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ‘ভারতীয় আধার কার্ড’ বাতিল করার জন্য ‘ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অব ইন্ডিয়া’ বা ‘ইউআইডিএআই’ (UIDAI) কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিল বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স বা বিএসএফ (BSF)। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে, বিএসএফ-এর হাতে এক সন্দেহভাজন বাংলাদেশি নাগরিক ধরা পড়ার পরই এই পদক্ষেপ করেছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। তারা প্রথমে পুলিশে খবর দেয়। তারপর, ইউআইডিএআই কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে, এই অনিবন্ধিত বাংলাদেশি অভিবাসীদের আধার নিবন্ধন নিষ্ক্রিয় করার অনুরোধ জানিয়েছে।
বিএসএফের এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, চলতি বছরের মে মাসে এক বাংলাদেশী নাগরিককে গ্রেফতার করেছিলেন তাঁরা। ওই ব্যক্তি নয় বছর ধরে তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাইয়ে বসবাস করছিল। ভারত থেকে বাংলাদেশে যাওয়ার পথে বিএসএফ-এর হাতে ধরা পড়েন তিনি। এক বিএসএফ কর্তা বলেছেন, “আমরা তার কাছে একটি আধার কার্ড পেয়েছি। পুলিশকে জানানোর পর, আমরা কার্ডটি নিষ্ক্রিয় করতে ইউআইডিএাই-কে চিঠি দিয়েছিলাম। মানব পাচারকারী এবং দালালদের সম্পর্ক ভাঙতে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।” বিএসএফ আরও জানিয়েছে, তাদের হাতে এমনও উদাহরণ রয়েছে, যেখানে সন্দেহভাজন অনথিভুক্ত বাংলাদেশি উদ্বাস্তুরা ভারতে প্রবেশের সময় সীমান্ত এলাকায় ধরা পড়েছে। দেখা গিয়েছে, তাদের কাছে ভারতে আসার আগেই আধার কার্ড এবং অন্যান্য পরিচয়পত্র রয়েছে।
বিএসএফ কর্তারা আরও জানিয়েছেন, আইনি মামলার প্রক্রিয়া দীর্ঘ। তাই অনেক ক্ষেত্রেই সেই প্রক্রিয়া এড়াতে, বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনর মাধ্যমে অনথিভুক্ত বাংলাদেশি উদ্বাস্তুদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এক কর্তা বলেছেন, “পুলিশি মামলার সঙ্গে একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া জড়িত। দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেল খাটলেও তো আমাদের দেশে অবৈধ উদ্বাস্তুদের জায়গা দেওয়া যায় না। যদি তাদের মধ্যে মহিলা ও শিশুরা থাকে, আমরা এখানে কোনও মামলা নথিভুক্ত না করে বিজিবিকে তাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি করাই।”
প্রসঙ্গত, ২০১৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত, প্রায় ১৮,০০০ বাংলাদেশি নাগরিককে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আটক করেছে বিএসএফ। ২০২৩ সালে মোট ৩,৭৩২ জন বাংলাদেশি ধরা পড়েছিল। চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত, ১,৯৭৩ জন বাংলাদেশী নাগরিককে সীমান্তে আটক করা হয়েছিল। ৫ অগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশিদের ধরা পড়ার সংখ্যা আরও বেড়েছে।