নয়া দিল্লি: নতুন বছরের বাজেটে অনেকটাই স্বস্তি পাবেন করদাতারা। করোনাকালে ডিজিটাল বাজেটে করদাতাদের জন্য বিশেষ কিছু ছাড়ের ঘোষণা করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। নতুন বাজেটে করদাতারা কী কী সুযোগ পাবেন, দেখে নেওয়া যাক একনজরে…
আয়করের ক্ষেত্রে প্রথমেই ঘোষণায় অর্থমন্ত্রী জানান, প্রত্যক্ষ কর কাঠামোয় বিশেষ সংস্কার আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। করদাতাদের উপর চাপ কমাতেই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
করোনাকালে দেশের বয়স্ক নাগরিকদের করের বোঝা থেকে মুক্তি দিতে বিশেষ নজর দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বয়স্ক নাগরিকদের জন্য বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “৭৫ বছরের বেশি বয়সীদের এবার থেকে করে সম্পূর্ণ ছাড় দেওয়া হবে”। একইসঙ্গে পেনশন প্রাপকদের কোনও আয়কর রিটার্ন দিতে হবে না। ব্যাঙ্কের পেনশনে টিডিএস কাটা হবে না বলেও জানান অর্থমন্ত্রী। দেরীতে পিএফ জমা দিলেও অতিরিক্ত কর জমা দিতে হবে না।
এছাড়াও চলতি বছরের বাজেটে আয়কর বিবাদ নিষ্পত্তিতেও নতুন প্যানেল ঘোষণা করা হয়। অর্থমন্ত্রী বলেন, “পুনরায় কোনও আয়কর মামলার সময়সীমা তিন বছর থেকে ছয় বছরে করা হল।” ৫০ লক্ষের উপরে আয়কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগের ক্ষেত্রে মামলা ১০ বছর পরেও পুনরায় চালু করা যাবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
বাজেট পেশের আগেই একাধিক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছিলেন, বাজেটে আয়কর স্ল্যাবে খুব একটা পরিবর্তন হয়ত আসবে না। তবে পরোক্ষ ভাবে বাজেটে বেশ কিছু পরিবর্তন আনতে পারে কেন্দ্র।
যাঁরা করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে টাকা ব্যয় করেছেন, তাঁদের ট্যাক্স ছাড় দিতে পারে, এমনটাই জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। করোনা বন্ডের মতো অন্য কোনও বন্ড আনতে পারে সরকার, একথাও জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হলেও করোনা রোগীদের জন্য আয়করে কোনও ছাড় দেওয়া হয়নি। তবে জিডিপির ১৩ শতাংশ করোনা প্যাকেজে খরচের ঘোষণা করেছে অর্থমন্ত্রী।
গত বছরের আয়কর কাঠামো-
২০২০-২১ অর্থবর্ষে ২.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বাৎসরিক আয়ের ক্ষেত্রে কোনও আয়করা দিতে হত না। বাৎসরিক আয় আড়াই লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা হলে পুরোনো ব্যবস্থায় কর দিতে হত ৫ শতাংশ। গত বছর দেওয়া নতুন পদ্ধতিতেও আয়কর দিতে হত ৫ শতাংশ। ৫ লক্ষ থেকে ৭.৫ লক্ষ টাকা বাৎসরিক আয় হলে পুরনো ও নতুন ব্যবস্থায় আয়কর ছিল একই, ১০ শতাংশ। সাড়ে ৭ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা বাৎসরিক আয় হলে পুরনো ব্যবস্থায় আয়কর দিতে হত ২০ শতাংশ, গত বছরের বিকল্প পদ্ধতিতে দিতে হত ১৫ শতাংশ। ১০ থেকে সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা আয় হলে পুরনো ব্যবস্থায় আয়কর দিতে হত ৩০ শতাংশ, গত বছরের বিকল্প পদ্ধতিতে দিতে হত ২০ শতাংশ। বাৎসরিক আয় ১৫ লক্ষ টাকার বেশি হলে দুই পদ্ধতিতেই আয়কর দিতে হত ৩০ শতাংশ।
চলতি বছরে বয়স্ক ব্যক্তি ও পেনশন প্রাপকদের ক্ষেত্রে ছাড়ের ঘোষণা করা হলেও বাকি কোনও আয়কর ছাড়ের ঘোষণা করা হয়নি।