নয়া দিল্লি: কোভিড মহামারির বিরুদ্ধে গোটা দেশ যখন লড়ছিল, সেই কঠিন সময়ে তাঁর সরকারি বাসভবন সংস্কার করার জন্য সরকারি কোষাগার থেকে ৪৫ কোটি টাকা ব্যয় করেছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। বিজেপির এই অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব অনভেস্টিগেশন বা সিবিআই। এই সরকারী বাসভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে দিল্লি সরকারের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ওঠা ‘অনিয়ম ও অসদাচরণের’ অভিযোগ খতিয়ে দেখতে, বুধবার তদন্ত নথিভুক্ত করেছে সিবিআই। বৃহস্পতিবার, এই অগ্রগতির বিষয়ে নীরবতা ভাঙলেন কেজরীবাল। পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতি। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, সিবিআই যদি তদন্ত করে এই অভিযোগের কোনও প্রমাণ না পায়, তাহলে কি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী? অন্যদিকে, সিবিআই তদন্তে এই ‘রাজমহল’ নির্মাণের নেপথ্যের সত্য প্রকাশিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে বিজেপি।
৪৫ কোটি টাকা ব্যয় করে তাঁর সরকারি বাসভবনের সংস্কার করিয়েছেন কেজরীবাল, এমনই অভিযোগ করেছে বিজেপি। বিজেপির এই অভিযোগগুলির খতিয়ে দেখতে, বুধবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সিবিআই তদন্তের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন কেজরীবাল। তবে, তাঁর দাবি, এই তদন্তে কিছুই খুঁজে পাওয়া যাবে না। ‘ভুয়ো তদন্তের’ সামনে মাথা নত করবেন না বলে, জানিয়েছেন কেজরীবাল।
তিনি পাল্টা দাবি করেছেন, ‘নার্ভাস’ হয়েই এই ধরনের পদক্ষেপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। কেজরীবাল বলেন, “ওরা আমার বিরুদ্ধে ৩৩টিরও বেশি মামলা নথিভুক্ত করেছে। আমি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে, গত ৮ বছর ধরে ওরা তদন্ত করছে। কিন্তু, কিছুই পাওয়া যায়নি। তারা আবার এই নতুন তদন্ত শুরু করেছে। আমি একেও স্বাগত জানাই, কারণ কিছুই পাওয়া যাবে না। যেমন এর আগের তদন্তগুলিতেও কিছু পাওয়া যায়নি। এই তদন্তেও যদি কিছু না পাওয়া যায়, তিনি (প্রধানমন্ত্রী মোদী) মিথ্যা তদন্ত করার জন্য ইস্তফা দেবেন?”
বিজেপির দিল্লি শাখার পক্ষ থেকে প্রথম অভিযোগ করা হয়েছিল, দিল্লি সরকারের সরকারি বাসভবন সংস্কার করতে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এর জন্য সরকার বেশ কিছু বেনিয়েম করেছে বলে অভিযোগ করেছিল তারা। পরে দিল্লির উপরাজ্যপাল ভিকে সাক্সেনা এই বিষয়ে দিল্লির মুখ্য সচিবের রিপোর্ট তলব করেন। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, প্রাথমিকভাবে বাংলো সংস্কারের কাজে অনিয়ম ছিল। এরপরই সাক্সেনা এই বিষয়ে সিবিআই তদন্তের অনুরোধ করেছিলেন। তাঁর অনুরোধ মেনে নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এরপর, বিজেপি সাংসদ মনোজ তিওয়ারি দাবি করেছেন, সিবিআই তদন্তে এই বাংলো কেলেঙ্কারির সব তথ্য ফাঁস হবে। বাসভবন সংস্কারের কাজের বরাত দেওয়ার ক্ষেত্রে কীভাবে দুর্নীতি করেছে কেজরীবাল সরকার, তা প্রকাশ পাবে।