নয়া দিল্লি: দেশে ক্যান্সার আক্রান্তের আর ক্রমশ বাড়ছে। ২০২০ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে দু-বছরে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা এবং ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই বেড়েছে। মঙ্গলবার রাজ্যসভায় তথ্য পেশ করে এমনটাই জানালেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য।
এদিন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR)-এর ন্যাশনাল ক্যান্সার রেজিস্ট্রি প্রোগ্রামে দেশে ২০২০ এবং ২০২২ সালের মোট ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা তুলে ধরেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। তিনি জানান, বিভিন্ন রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে ২০২০ সালে মোট ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৩ লক্ষ ৯২ হাজার ১৮৯। ২০২১ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ লক্ষ ২৬ হাজার ৪৪৭ এবং ২০২২ সালে সেই সংখ্যা আরও বেড়ে হয়েছে ১৪ লক্ষ ৬১ হাজার ৪২৭ জন। আবার ২০২০ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ক্যান্সার আক্রান্ত হয় মৃত্যুর সংখ্যাও খানিক বেড়েছে। পরিসংখ্যান দিয়ে মন্ত্রী জানান, ২০২০ সালে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে দেশে ৭ লক্ষ ৭০ হাজার ২৩০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০২১ সালে সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ৭ লক্ষ ৮৯ হাজার ২০২ এবং ২০২২ সালে সেই সংখ্যা আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ লক্ষ ৮ হাজার ৫৫৮ জনে।
ন্যাশনাল হেল্থ মিশন (NHM)-এর অংশ হিসাবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, কার্ডিয়োভাসকুলার ডিজিস এবং স্ট্রোক (NPCDCS) নিয়ন্ত্রণ করতে ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ফর প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল কর্মসূচি নিয়েছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য বলেন, NPCDCS-এর অন্তর্গত হল ক্যান্সার। এই প্রোগ্রামের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, ক্যান্সার ঠেকাতে পরিকাঠামো উন্নত করা এবং জনসচেতনতা বাড়ানো। এছাড়া দ্রুত রোগ শনাক্ত করে এবং পর্যাপ্ত পরিষেবা দেওয়া অন্যতম লক্ষ্য। NPCDCS-এর অধীনে ইতিমধ্যে ৭০৭টি জেলায় নন কমিউনিকেবল ডিজিজ NCD ক্লিনিক, ২৬৮টি জেলায় ডে কেয়ার সেন্টার এবং ৫৫৪৮ টি কমিউনিটি হেলথ সেন্টার খোলা হয়েছে। ৩০ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে ওরাল, ব্রেস্ট এবং সার্ভিকাল ক্যান্সার সাধারণ ব্যাপার। এই প্রকল্পের অধীনে এব্যাপারে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে। আয়ুষ্মান ভারত- হেল্থ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার প্রকল্পের অধীনে ক্যান্সার প্রতিরোধের বিশেষ পদক্ষেপ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
ক্যান্সার হাসপাতালের উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ১৯টি স্টেট ক্যান্সার ইনস্টিটিউট এবং ২০টি উপ-ক্যান্সার কেয়ার সেন্টার খোলা হয়েছে। হরিয়ানার ঝর্জরে ন্যাশনাল কেয়ার ইনস্টিটিউট খোলা হয়েছে এবং কলকাতায় চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল কেয়ার ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী।