
বিশ্বের বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্কগুলির মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভারত। যাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে, ভারতীয় রেলপথ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। কম খরচে দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে ট্রেনের বিকল্প নেই। ট্রেনে ভ্রমণ করতে গেলে কিছু নিয়মকানুন মেনে চলাটা জরুরি। যা প্রত্যেক যাত্রীর জন্য বাধ্যতামূলক। তেমনই ট্রেনে ভ্রমণের সময় এমন অনেক জিনিস আছে, যা আপনি নিজের সঙ্গে বহন করতে পারবেন না।

ট্রেনে লাগেজ, ওভেন, গ্যাস সিলিন্ডার, দাহ্য পদার্থ, দাহ্য রাসায়নিক, আতশবাজি, অ্যাসিড, ভেজা চামড়া, গ্রীস, সিগারেট এবং বিস্ফোরকের মতো দুর্গন্ধযুক্ত পদার্থ বহন করা নিষিদ্ধ। তবে খাবার দাবারের বহন করার ক্ষেত্রে খুব একটা বিধিনিষেধ না থাকলেও কিছু পানীয় এবং এক ধরনের ফল কিন্তু সঙ্গে রাখা একদম নিষিদ্ধ।

শুধু তাই নয়, এই নিয়ম লঙ্ঘনকারী যাত্রীদের জন্য শাস্তির বিধানও রয়েছে। যদি কোনও যাত্রী ট্রেনে মদ্যপান করেন, তাহলে তারা গুরুতর সমস্যায় পড়তে পারেন। রেলওয়ের নিয়ম অনুসারে, কোনও যাত্রী মদ্যপান বা মাদকাসক্ত অবস্থায় ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবেন না। ১৯৮৯ সালের রেলওয়ে আইনের ধারা ১৬৫ এর অধীনে কঠোর আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। নিয়মে বলা হয়েছে যে, যদি কোনও ব্যক্তি বা যাত্রীকে ট্রেন বা রেলওয়ে চত্বরে নেশাগ্রস্ত অবস্থায়, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে বা অন্য যাত্রীদের হয়রানি করার চেষ্টা করতে দেখা যায়, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের টিকিট বাতিল করা যেতে পারে। তাছাড়া, যাত্রী যদি রেলওয়ে পাসধারী হন, তাহলে তাদের পাসও বাতিল করা যেতে পারে। নিয়ম অনুসারে, দোষী সাব্যস্ত হলে, সেই ব্যক্তির ৬ মাসের জেল এবং ৫০০ টাকা জরিমানাও হতে পারে।

যদি কেউ নিজের পোষ্যকে সঙ্গে নিয়ে যেতে চান, তাহলে আলাদা নিয়ম আছে। যাঁদের এসি ফার্স্ট-ক্লাসের টিকিট আছে তাঁদের জন্য আলাদা নিয়ম প্রযোজ্য। কোন প্রাণীকে সঙ্গে রাখতে পারবেন, সেই নিয়েও রয়েছে নিয়ম।

নিয়ম অনুসারে, ট্রেনে গ্যাস সিলিন্ডার বহন নিষিদ্ধ; তবে, জরুরি চিকিৎসার ক্ষেত্রে, নির্দিষ্ট নির্দেশিকা অনুসরণ করে সিলিন্ডার আনা যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে রেল নিজেই অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করে।

রেলওয়ের নিয়ম অনুসারে, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড, টয়লেট পরিষ্কারের অ্যাসিড, সব ধরণের শুকনো ঘাস, পাতা বা বর্জ্য কাগজ, তেল, গ্রীস ইত্যাদির মতো বিপজ্জনক তরল বহন করা নিষিদ্ধ। সঙ্গে নিষিদ্ধ একটি ফলও।

এমনিতে প্রায় সব ধরনের ফলই বহন করা যেতে পারে ট্রেনে। তবে শুকনো নারকেল বহন করা নিষিদ্ধ। শুকনো নারকেলের বাইরের অংশ যা পুজোর সময় ছোবড়া হিসাবে ব্যবহার করা হয় তাও বহন করা নিষিদ্ধ। এটি দাহ্য পদার্থ হিসাবেই গণ্য করা হয়। তাই ট্রেনে এই ফল বহন করা নিষিদ্ধ।

ভারতীয় রেলওয়ের নিয়মানুসারে যদি কোনও যাত্রী ট্রেনে নিষিদ্ধ জিনিসপত্র নিয়ে ভ্রমণ করার সময় ধরা পড়েন, তাহলে রেলওয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। এই ক্ষেত্রে, যাত্রী ১,০০০ টাকা জরিমানা, তিন বছরের কারাদণ্ড, অথবা উভয় দণ্ডের সম্মুখীন হতে পারে। নিষিদ্ধ জিনিসপত্রের কারণে যদি রেলের সম্পত্তির কোনও ক্ষতি হয়, তাহলে দোষী যাত্রীকে সেই ক্ষতির খরচও বহন করতে হবে।