নয়া দিল্লি: গরু পাচার মামলায় (Cattle Smuggling Case) গ্রেফতার করা হল এনামুল হককে। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির (ED) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন গরু পাচারকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত এনামুল (Enamul Haque)। শনিবারই দিল্লির রাউজ এভিনিউ আদালতে তোলা হবে তাঁকে। সূত্রের খবর, এদিন এনামুলকে নিজেদের হেফাজতে চাইতে পারে ইডি। এর আগে ২০২০ সালে সিবিআই এনামুলকে গ্রেফতার করেছিল। সীমান্ত এলাকায় গরু পাচারের অভিযোগ ওঠে প্রায়শই। এই পাচারকাণ্ডে একটি বড়সড় চক্রও কাজ করে। অভিযোগ, এরকমই একটি চক্র চালাতেন এনামুল। এই ঘটনায় বিএসএফ কর্তাদের একাংশের সহযোগিতাও তিনি পেয়েছেন বলেই ইডি সূত্রে দাবি। এর আগে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে সিবিআই তাঁকে হেফাজতে নিয়েছিল। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই তদন্তকারীদের হাতে একটি ডায়েরি উঠে এসেছে। সেটি এনামুলের কাছ থেকেই পাওয়া গিয়েছে বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই ডায়েরি অনুযায়ী গরু পাচারকাণ্ডে কয়েক কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। কে বা কারা এই টাকা পেয়েছেন, কোথা থেকে সেই টাকা এল, এর পিছনে আরও বড় কোনও মাথা রয়েছে কি না সমস্ত কিছু জানতেই এনামুলকে হেফাজতে নিয়ে তদন্তকারীরা জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান বলেই দাবি সূত্রের।
সম্প্রতি এই এনামুল হকের সূত্র ধরেই তৃণমূল সাংসদ-অভিনেতা দেবকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সিবিআই নিজাম প্যালেসে তাঁকে জেরা করেন। সূত্রের খবর, এনামুলের কাছ থেকে দেব নগদ টাকা এবং দামী ঘড়ি উপহার নিয়েছেন। যদিও দেব এই বিষয়টি ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেন। একইসঙ্গে দেবের দাবি ছিল, তিনি এনামুল হককে চেনেনই না। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই গরু পাচারের টাকার একটা অংশ চলচ্চিত্র জগতেও লগ্নি হয়েছে। দেবকে জিজ্ঞাসাবাদের পরই পিন্টু মণ্ডল নামে টলিউডের এক প্রযোজককেও তলব করে সিবিআই।
গত বিধানসভা ভোটের আগে কয়লাকাণ্ড ও গরু পাচার কাণ্ড নিয়ে জোর কদমে তদন্তে নামে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। গরু পাচারে নাম জড়ায় এনামুল হক নামে মুর্শিদাবাদের এক ব্যবসায়ীর। এই এনামুলকে এর আগেও সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর কমান্ডান্টকে ঘুষ দেওয়ার ঘটনায় গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। গ্রেফতারের পরে জামিনও পেয়েছিলেন তিনি।
ইতিমধ্যেই এনামুল হকের কলকাতার বেশ কয়েকটি ঠিকানা এবং মুর্শিদাবাদের কয়েকটি স্থানে তল্লাশি চালানো হয়। সিবিআইয়ের দাবি ছিল, এনামুল শুধু গরু পাচারের সঙ্গে যুক্ত এমনই নয়। চালকল, আবাসন ও নির্মাণ শিল্প, পাথর খাদান, বালির কারবার-সহ একাধিক বেআইনি কারবারেও এনামুল যুক্ত বলে তদন্তকারীদের দাবি। তাঁর একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ১০০ কোটির বেশি টাকা পাওয়া গিয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এছাড়াও তাঁর নামে-বেনামে বহু সম্পত্তিরও খোঁজ মেলে। বাংলা থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে এনামুলকে। এখান থেকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে আদালতে তোলা হবে শনিবারই।
আরও পড়ুন: Madan Mitra: বাম প্রার্থীর বাড়িতে ঝটিকা সফর মদনের, চা খেলেন-হাত মেলালেন! কামারহাটিতে অন্য সমীকরণ