কলকাতা ও নয়া দিল্লি : সিবিএসই-র দশম শ্রেণির ইংরেজি পরীক্ষার একটি প্রশ্ন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এবার প্রশ্ন থেকে সেই বিতর্কিত অংশ সরানোর সিদ্ধান্ত নিল সিবিএসই। বিতর্কিত ওই প্রশ্নটি নারীবিদ্বেষী বলে অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। আজ তা নিয়ে লোকসভাতেও হইচই হয়। কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী নিজেও বিষয়টি নিয়ে সরব হন।
সিবিএসই বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে, ওই প্রশ্নের জন্য পরীক্ষার্থীরা পূর্ণ নম্বর পাবে। কিন্তু কী ছিল সেই প্রশ্নপত্র, যা নিয়ে এত বিতর্ক? ইংরেজি প্রশ্নপত্রে একটি অনুচ্ছেদ তুলে দিয়ে, তা থেকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। আর সেই অনুচ্ছেদের একটি অংশ নিয়েই শুরু হয়েছিল জটিলতা। ওই প্রশ্নের একটি অংশ ছিল, স্ত্রীরা তাঁদের স্বামীর কথা শোনেন না। আর সেই কারণে শিশুরা এবং চাকররা নিয়মানুবর্তী হয় না। এই বিশেষ অংশটুকুকে ঘিরেই যাবতীয় বিতর্ক শুরু হয়।
এরপর পরিস্থিতি সামাল দিতে সিবিএসইর তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়, বোর্ডের সাবজেক্ট এক্সপার্ট কমিটির কাছে বিষয়টি জানানো হয়, পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের একাংশ বিষয়টিকে বিতর্কিত বলে দাবি করছেন। বিষয়টি জানার পর সাবজেক্ট এক্সপার্ট কমিটি প্রশ্নটি বাদ দেওয়ার কথা বলে। সেই মতো প্রশ্নটি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সিবিএসই বোর্ড। যাঁরা যাঁরা প্রশ্নটির উত্তর করেছিলেন, তাঁদের প্রত্যেককে প্রশ্নটির জন্য পূর্ণ নম্বর দেওয়া হবে।
তবে এমন বিতর্কিত প্রশ্ন কেবল আজকের নয়। এর আগেও গুজরাটে ২০০২ সালে যে ঘটনা ঘটেছিল, সেটিকে মুসলিম বিরোধী হিংসা হিসেবে উল্লেখ করেও সিবিএসই বোর্ডের প্রশ্ন এসেছিল। সেই সময় বিষয়টি নিয়ে ক্ষমা পর্যন্ত চেয়েছিল সিবিএসই বোর্ড। কেন বার বার এই ধরনের বিষয়গুলি সিবিএসই-র চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে? তাহলে তারা দায়িত্বশীল হয়ে কাজ করছেন না… এমন একগুচ্ছ প্রশ্নও কিন্তু ইতিমধ্য়েই উঠতে শুরু করে দিয়েছে শিক্ষা মহলে।
এই বিষয় নিয়ে শিক্ষাবিদ নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ি জানিয়েছেন, যাঁরা প্রশ্নকর্তা, তাঁরা তো আর দশম শ্রেণির পড়ুয়া নন। তাঁরা নিশ্চয়ই এমন একটি জায়গায় আছেন, যেখান থেকে এই প্রশ্নটা করছেন। তাঁরা কি জানেন না এই ধরনের প্রশ্ন ছাত্র ছাত্রীদের দেওয়া উচিত নয়! এরা কোন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে যে আমাদের দেশের মধ্যে এই ধরনের প্রশ্নগুলি করা হচ্ছে। এরা কোন কূপমণ্ডুকতায় ভুগছে যে আমাদের সমাজের যে প্রগতি হচ্ছে কিংবা হয়েছে, কিংবা আগেও ছিল… তা কীভাবে আরও বন্ধ করার চেষ্টা করছে। যেন আমরা আস্তে আস্তে আরও খোপের মধ্যে ঢোকার চেষ্টা করছি। আরও ভয়ঙ্কর, তাঁরা প্রশ্নের মধ্যে দিয়ে কী চাইছেন, তাও বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইচ্ছাকৃতভাবে এই ধরনের জিনিসগুলি করা হয়।”