নয়া দিল্লি: চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই শেষ করতে হবে নতুন সংসদ ভবন (New Parliament) তৈরির কাজ, এমনটাই লক্ষ্য স্থির করেছিল কেন্দ্র (Central Government)। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে শুরু হয় নতুন সংসদ ভবন তৈরি এবং রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার অঞ্চল সংস্কারের কাজ। তবে শেষ মুহূর্তে এসেও বড় ধাক্কা খেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নের সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্প (Central Vista Project)। সূত্রের খবর, সেন্ট্রাল ভিস্তার কাজ শেষ করতে অতিরিক্ত ২৮২ কোটি টাকা খরচ হতে পারে।
প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা খরচে নতুন সংসদভবন তৈরি করা নিয়ে আগেই সমালোচনায় সরব হয়েছিল বিরোধীরা। খরচ বাড়ায় ফের একবার সমালোচনার মুখে পড়তে পারে কেন্দ্র, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, দীর্ঘ একবছর কাজ চলার পর জানানো হয়েছে, বরাদ্দ ৯৭৭ কোটি টাকার বদলে অতিরিক্ত ২৮২ কোটি টাকা খরচ হতে পারে। অর্থাৎ সেন্ট্রাল ভিস্তার বাজেটের উপর ২৯ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে,গোটা প্রকল্পের জন্য বর্তমানে ১২৫০ কোটি টাকা খরচ হবে। টাটা প্রজেক্টস এই প্রকল্পের কাজ করছে এবং ইতিমধ্যেই ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, খরচ বাড়লেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ করা হবে সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের কাজ। চলতি বছরের স্বাধীনতা দিবসের আগেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, লকডাউনের কারণে একাধিকবার বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল। তবে কোনও সময়ই নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়নি। সেই কারণেই পরে কেন্দ্রের তরফে সময়সীমা বাড়িয়ে চলতি বছরের অক্টোবর মাস অবধি করা হয়। সূত্রের খবর, কেন্দ্রের নির্ধারিত ওই সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করবে টাটা প্রজেক্টস।
ব্রিটিশ আমলে তৈরি সংসদ ভবনে প্রথম সমস্যাই ছিল স্থানাভাব। কাজের সুবিধার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পরিকল্পনা ছিল সমস্ত সাংসদদের একই ছাদের নীচে আনার। কিছু জায়গার অভাবে সংসদভবনের ভিতরে সমস্ত সাংসদদের অফিস তৈরি করা সম্ভব হচ্ছিল না। এছাড়া অত্যাধুনিক প্রযুক্তি বসাতে ও ব্যবহারেও সমস্যা হচ্ছে পুরনো সংসদ ভবনে। লোকসভা ও রাজ্যসভায় বসার জায়গার অভাবের পাশাপাশি পুরনো সংসদ ভবনে ভূমিকম্প বা আগুন থেকে সুরক্ষা দেওয়ার মতো উপযুক্ত ব্যবস্থা নেই বলেও অভিযোগ জানান সাংসদরা।
যাবতীয় দাবি মেনেই তাই নতুন সংসদ ভবন তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নতুন সংসদে লোকসভায় সদস্য়দের বসার আসন বাড়িয়ে ৮৮৮ করা হচ্ছে। যৌথ অধিবেশনের সময় তা বাড়িয়ে ১২২৪ করে নেওয়া যাবে। রাজ্য়সভাতেও আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ৩৮৪ করা হচ্ছে। আগামী ২০২৪ সালের মধ্যেই সংসদের সমস্ত সদস্য়দের জন্য় আলাদা অফিসের ব্যবস্থা করা হবে। এই লক্ষ্যে শ্রম শক্তি ভবনের সংস্কারের কাজ চলছে।
বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের ঠিকানা ৭, লোককল্যাণ মার্গ। সেন্ট্রাল ভিস্তার মাধ্যমে সেই ঠিকানাতেও পরিবর্তন আসতে চলেছে। চলতি বছরের মধ্যেই উপরাষ্ট্রপতিরও বাসভবন তৈরির নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রজেক্টের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার অঞ্চল একেবারে নতুন করে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র।
৬৪ হাজার ৫০০ বর্গ কিলোমিটারের উপর তৈরি এই সংসদ ভবন কেবল বাইরে থেকেই ঝা চকচকে নয়, ভিতরটিও সম্পূর্ণভাবে নতুন রূপে সাজিয়ে তোলা হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, স্মার্ট ডিসপ্লে, বায়োমেট্রিক সহ গ্রাফিক্যাল ইন্টারফেস, ডিজিটাল ভাষা অনুবাদক ও রেকর্ডিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়াও স্পিকারের নিয়ন্ত্রাণাধীন মাইক্রোফোনের ব্যবস্থাও থাকবে।
আরও পড়ুন: COVID Guideline for Children: ৫ বছরের কমবয়সীদের কী আদৌই মাস্ক পরা প্রয়োজন? স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানাল…