
লখনউ: ক্ষত সারল। মঙ্গলবার রাম মন্দিরে ধ্বজা উত্তোলনের পর ঠিক এই কথাটাই বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যে যজ্ঞের আগুন ৫০০ বছর ধরে জ্বলছিল, তা আজ অবশেষে সম্পূর্ণ হল বলেই দাবি তাঁর। পাশাপাশি, ধ্বজা উত্তোলনের দিন এই মন্তব্যের মধ্য়ে দিয়ে কোথাও গিয়ে বাবরি মসজিদের প্রসঙ্গকেই যেন উস্কে দিলেন তিনি, দাবি একাংশের।
মঙ্গলবার বেলা ১১টা বেজে ৪৮ মিনিট নাগাদ উত্তোলন হল রাম মন্দিরের গেরুয়া ধ্বজা। এই পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান ঘিরে লাখো মানুষের ভিড়। শুধু জনসাধারণ নয়, এসেছেন ৭ হাজার বিশিষ্ট অতিথি। প্রধানমন্ত্রীর চোখেও এই অনুষ্ঠান সাধারণ নয়। এই পতাকাকে ‘ভারতের সাংস্কৃতিক পুনরুজ্জীবনের’ প্রতীক বলেই উল্লেখ করলেন তিনি। মোদীর কথায়, ‘আজ অযোধ্যা শহর ভারতের সাংস্কৃতিক চেতনার আরও একটি শীর্ষবিন্দুতে পরিণত হল। সারা ভারত, বিশ্ব হয়ে উঠল রামময়। রামলালার প্রতিটি ভক্তের জন্য এই সময় অসীম তৃপ্তির।’
নিজের ভাষণপর্বে অযোধ্যাকে রাম রাজ্য বলেই বারংবার অভিহিত করেছেন মোদী। পাশাপাশি, এই রাম রাজ্য এবার দেশের মধ্য়ে যে নজির তৈরি করবে, সেটাও উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী তাঁর কথায়, ‘এই গেরুয়া ধ্বজা শুধু একটা পতাকা নয়। এটা ভারতীয় সভ্য়তারও প্রতীক। এর গেরুয়া রঙ সূর্য দেবের কথা বলে। ওঁম শব্দটি এবং তার সঙ্গে থাকা কোভিদার গাছ (রক্তকাঞ্চন) আসলে রাম রাজ্যের প্রতীক।’
গেরুয়া শিবিরের বরাবরের স্লোগান ‘জয় শ্রীরাম’, কিন্তু অযোধ্যাভূমে তা খাটে না। বরং সেখানে চলে ‘জয় সিয়ারাম।’ উচ্চারণে কোনও রুক্ষতা নেই, একাংশের কাছে মধুরও। তাই সেই কথা ভেবেই যেন রাম মন্দিরে ধ্বজা উত্তোলনের পরই মোদী মুখ থেকে নিঃসৃত হল ‘জয় সিয়ারাম’, ‘জয় শ্রীরাম’ নয়। এই ভাষণপর্বে কি রাজনীতির জায়গা ছিল না? রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ক্ষেত্রে হয়তো এই প্রশ্ন খাটে না। তাই মোদীর ভাষণেও ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবেই থেকেছে রাজনীতি। কংগ্রেস জমানাকে দাসত্বের সঙ্গে তুলনা করেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘স্বাধীনতা পেলাম, কিন্তু বিকৃত আকারে। বিদেশি ব্যবস্থা ভাল, স্বদেশি নয়, এই বলেই শুরু হল দাসত্বের যুগ। বিদেশিদের থেকে গণতন্ত্র শিখলাম। অনেকে বলেন, আমাদের গণতন্ত্র নাকি বিদেশ থেকে নেওয়া। কিন্তু সত্যি কথা হল ভারত গণতন্ত্রের জনক।’