
শ্রীনগর: বৈসরণের নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করছিলেন, হঠাৎই কানে এসেছিল গুলির শব্দ। বুঝতে পেরেছিলেন, ভয়ঙ্কর কিছু একটা হচ্ছে। দূরে একের পর এক পর্যটককে লুটিয়ে পড়তে দেখেই আতঙ্কে সামনের একটি তাঁবুতে ঢুকে আশ্রয় নিয়েছিলেন পুণের জগদলে পরিবার। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। তাঁবু থেকে বের করে জঙ্গিরা খুন করে সন্তোষ জগদলেকে।
জম্মু-কাশ্মীরে সপরিবারে ঘুরতে গিয়েছিলেন পুণের ব্যবসায়ী সন্তোষ জগদলে। সেখানেই জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন সন্তোষবাবু। জঙ্গিরা রেয়াত করেছে তাঁর স্ত্রী প্রগতি ও মেয়ে আশাভরীকে। ভয়ে আতঙ্কে কাঁটা তাঁরা। তাও আশাভরী (২৬) জানিয়েছেন, কীভাবে জঙ্গিরা নৃশংসভাবে হামলা চালিয়েছিল, কীভাবে তাঁর বাবাকে হত্যা করে।
আশাভরী বলেন, “খাকি উর্দির মতো দেখতে পোশাক পরা কয়েকজন পাহাড় থেকে নেমে আসছিল। গুলির শব্দ শুনে আমরা ভেবেছিলাম জঙ্গিদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ হচ্ছে। গুলির শব্দ ধীরে ধীরে আরও স্পষ্ট হয়। পাশের ক্যাম্পেই গুলি চালায় ওরা।”
তাঁর বাবাকে কী নৃশংসভাবে হত্যা করেছে জঙ্গিরা, তার বর্ণনা করতে গিয়ে আশাভরী কাঁদতে কাদতে জানান যে তারা যখন তাঁবুর ভিতরে লুকিয়ে ছিলেন, তখন বাইরে থেকে ভারী গলায় ডাক আসে, “চৌধুরী তু বাহার আজা (চৌধুরী, তুই বেরিয়ে আয়)”। বাবাকে টেনে হিঁচড়ে বের করে জঙ্গিরা। কেন প্রধানমন্ত্রী মোদীকে সমর্থন করে, তা নিয়ে গালমন্দ করে জঙ্গিরা।
ধর্ম যাচাই করে খুন করেছে জঙ্গিরা। আশাভরী বলেন, “ওরা আমার বাবাকে কলমা পড়তে বলে। বাবা বলতে পারেনি, তখন ওরা পরপর তিনটি গুলি চালিয়ে দিল। একটা মাথায় গুলি করে, একটা কানের পিছনে আর একটা পিঠে। এরপর আমার জেঠুকেও গুলি করে ওরা।”
ভয়ে-আতঙ্কে তাঁবুর ভিতরেই সিঁটিয়ে ছিলেন আশাভরী ও তাঁর মা। প্রায় ২০ মিনিট বাদে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তাদের উদ্ধার করে আনে বৈসরণ উপত্যকা থেকে। তখনও আশাভরী জানতেন না যে তাঁর বাবা ও জেঠুকে মেরে দিয়েছে জঙ্গিরা।