নয়া দিল্লি: ভোটের ভরাডুবির পরই কংগ্রেসের (Congress) অন্দরে শুরু হয়েছে দোষারোপের পালা। ৫ রাজ্যেই হারের জন্য দায়ী করা হয়েছে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বকে। ইতিমধ্যেই প্রবীণ নেতা গুলাম নবি আজাদ(Ghulam Nabi Azad)-র বাড়িতে বৈঠক বসিয়েছিলেন বিক্ষুব্ধ কয়েকজন নেতা। এরপরই জল্পনা শুরু হয়, শোনা যায় কংগ্রেসের যাবতীয় দায়িত্ব ছাড়তে চলেছেন সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। আজ, রবিবার সকালেই কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক (Working Commmittee Meeting) রয়েছে। সেই বৈঠকেই অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতির পদ থেকে সনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi) ইস্তফা দিতে পারেন, এমনটাই গুজব শোনা গিয়েছিল। তবে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কংগ্রেসের তরফে যাবতীয় দাবি অস্বীকার করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরই কংগ্রেসের সাংগঠনিক ব্যবস্থার যে কঙ্কালসার দশা ধরা পড়ে, তা নিয়েই শুক্রবার বৈঠকে বসেছিলেন বিক্ষুব্ধ নেতারা। সূত্রের খবর, সেখানে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব থেকে শুরু করে কংগ্রেসের পরিচালন পদ্ধতি-যাবতীয় বিষয় নিয়েই ক্ষোভ-সংশয় প্রকাশ করেন দলের প্রবীণ ও পুরনো নেতারা। সনিয়া গান্ধীর ডাকা ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকেও যোগদান করা নিয়ে তারা সংশয় প্রকাশ করেছেন বলেই জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই নতুন করে জল্পনা শোনা যায় যে, বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির দায়ভার নিজের কাঁধে নিয়েই দলের সমস্ত পদ ছাড়তে চলেছেন গান্ধী পরিবারের তিন সদস্যই। তবে শনিবার কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সূর্যেওয়ালা যাবতীয় জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “অলিখিত সূত্রের ভিত্তিতে কংগ্রেসের শীর্ষনেতৃত্বের ইস্তফার যে খবর প্রচার করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও ভুল।”
আজ বিকেল ৪টে নাগাদই কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক রয়েছে। সেই বৈঠকেই সবকটি রাজ্যেই কংগ্রেসের হারের কারণ নিয়ে কাটাছেঁড়া করা হবে বলে জানা গিয়েছে। চলতি বছরেই হতে চলা কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচন নিয়েও বড় কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
দলের অন্দরে গুঞ্জন, পাঁচ রাজ্যেই যে তেমনভাবে খাতা খুলতে পারেনি কংগ্রেস, তার জন্য দলীয় নেতারা গান্ধী পরিবার ও তাঁদের নিষ্ক্রিয়তাকেই দোষারোপ করছেন। দ্রুত শীর্ষনেতৃত্বের রদবদল করা উচিত, সেই দাবিও তোলা হচ্ছে। এই বিক্ষোভে আরও ইন্ধন জোগাচ্ছেন জি-২৩র নেতারা, এমনটাও অভিযোগ উঠেছে।
পঞ্জাবে এবার শাসক দলের গদি হারিয়েছে কংগ্রেস, তাদের ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে আম আদমি পার্টিই। অন্যদিকে উত্তরাখণ্ড, গোয়া ও মণিপুরেও দাগ কাটতে ব্যর্থ হয়েছে কংগ্রেস। উত্তর প্রদেশ, যেখানে নির্বাচনের যাবতীয় দায়িত্বভার ছিল প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর উপরই, সেখানেও ৪০৩টি আসনের মধ্যে মাত্র ২টি আসনে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস।
নির্বাচনের এই ফল প্রকাশের পরই শশী থারুর থেকে শুরু করে একাধিক নেতারা টুইট করে লেখেন যে, দল এরপরও পরিবর্তন এড়িয়ে যেতে পারে না। গুলাম নবি আজাদের বাড়ির বৈঠকেও একই বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। অন্যদিকে, গান্ধীপরিবারের ঘনিষ্ঠদের দাবি, গান্ধীদের ছাড়া অসম্পূর্ণ কংগ্রেস। এবার আজ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তাই-ই এখন দেখার।