Shashi Tharoor on Bangladesh: ‘হাসিনাকে আমরা আশ্রয় না দিলে…’, বাংলাদেশ নিয়ে কীসের উদ্বেগ শশী থারুরের?
Bangladesh Unrest: শশী থারুর বলেন, "এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে হিংসা ছড়ানোর পিছনে পাকিস্তানের আইএসআই-র যোগের সম্ভাবনা থাকতেই পারে। বাংলাদেশে চিনেরও প্রবল অস্তিত্ব রয়েছে, ওরাও এই সুযোগে নিজেদের প্রভাব বৃদ্ধি করার চেষ্টা করবে। এই বিষয়গুলি নিয়েই উদ্বেগ হওয়া উচিত।"
নয়া দিল্লি: বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতিতে সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়ায়, তাঁকে আশ্রয় দিয়েছে ভারত। কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করলেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর (Shashi Tharoor)। পড়শি দেশের অশান্তি ভারতের জন্য চিন্তার কারণ নয় বলেও জানান কংগ্রেস সাংসদ। তবে বাংলাদেশের এই অশান্তির পিছনে পাকিস্তান ও চিনের যে হাত থাকতে পারে, সে বিষয়টিও উড়িয়ে দেননি শশী থারুর।
এনডিটিভি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কংগ্রেস সাংসদ বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। বাংলাদেশের মানুষদের কল্যাণই আমাদের মৌলিক অঙ্গীকার। এক্ষেত্রে দেশ দ্বিতীয় এবং ব্যক্তি হিসাবে কোনও নেতৃত্ব তৃতীয় স্থানে আসে।”
শশী থারুর বলেন, “আমরা বাংলাদেশের মানুষদের পাশে রয়েছি। ১৯৭১ সালেও আমরা পাশে ছিলাম। ভাল-মন্দ সবসময়ই আমরা পাশে ছিলাম। এমনকী, যখন ওদের সরকার আমাদের বন্ধু ছিল না। এই কঠিন পরিস্থিতিতে দুই দেশের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার প্রশ্নই নেই।”
মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে কংগ্রেস সাংসদ বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে মহম্মদ ইউনুসকে চিনি। ওঁ অত্য়ন্ত সম্মানীয় ব্যক্তি। আমার মনে হয়, ওঁ জামাত-ই-ইসলামি বা পাকিস্তানি আইএসআই-র থেকে ওয়াশিংটনের বেশি ঘনিষ্ঠ। যদি অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন দেখেন, তবে নয়া দিল্লির এই নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। বরং পাকিস্তান ও চিন এই ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে কি না, তা-ই ভারতের জন্য বেশি উদ্বেগের।”
এ প্রসঙ্গে শশী থারুর বলেন, “এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে হিংসা ছড়ানোর পিছনে পাকিস্তানের আইএসআই-র যোগের সম্ভাবনা থাকতেই পারে। বাংলাদেশে চিনেরও প্রবল অস্তিত্ব রয়েছে, ওরাও এই সুযোগে নিজেদের প্রভাব বৃদ্ধি করার চেষ্টা করবে। এই বিষয়গুলি নিয়েই উদ্বেগ হওয়া উচিত। মহম্মদ ইউনুসের বক্তব্য বা অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই।”
শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, “যদি আমরা ওঁকে (শেখ হাসিনা) আশ্রয় না দিতাম, তাহলে এটা ভারতের জন্য লজ্জাজনক হত। যদি আমরা নিজেদের বন্ধুর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতাম, তবে কেউ আর আমাদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক রাখত না। যখন কোনও বন্ধু বিপদে পড়ে, তখন আমরা তাকে সাহায্য করতে দু’বারও ভাবি না। আমরা তাদের সুরক্ষিত রাখি। ভারত সেটাই করেছে। ভারত সরকারকে সাধুবাদ জানাই এই পদক্ষেপের জন্য। ভারতীয় হিসাবে আমরা বিশ্বে নির্দিষ্ট কিছু নীতি মেনে চলি। সরকার ওঁকে (হাসিনা) আশ্রয় দিয়ে এবং সুরক্ষা দিয়ে সঠিক কাজ করেছে।”
শেখ হাসিনা কতদিন ভারতে থাকবেন, এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কংগ্রেস সাংসদ বলেন, “কতদিন এখানে থাকতে চান, তা আমরা স্থির করব না। আপনি বাড়িতে কোনও অতিথিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে, তাকে প্রশ্ন করেন না যে তিনি কখন যাবেন। আমার মতে আমাদের অপেক্ষা করাই উচিত। অন্য দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভিসা সহ একাধিক বিষয় বিবেচনা করতে হয়। আপাতত ওঁ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। আমাদের গর্ব হওয়া উচিত যে বন্ধুর বিপদের সময়ে পাশে দাঁড়াতে পেরেছি।”
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপরে আক্রমণ নিয়ে তিনি বলেন, “অবশ্যই ওখানে (বাংলাদেশ) হামলা হচ্ছে। কেউ তা অস্বীকার করতে পারে না, অস্বীকার করাও উচিত নয়। এটা সত্যি।একই সময়ে এমন কাহিনিও সামনে আসছে যে বাংলাদেশি মুসলিমরা হিন্দু মন্দির ও বাড়ি পাহারা দিচ্ছে। তাই অনেক খারাপ খবরের মধ্যেও কিছু ভাল খবর আসছে।”