Pawan Khera: বিমান থেকে নামিয়ে গ্রেফতার পবন খেরা, টারম্যাকে বসেই কংগ্রেসের অভিনব প্রতিবাদ

নয়া দিল্লি: এফআইআর-এর প্রতিলিপি হাতে সরাসরি দিল্লি বিমানবন্দরে হানা দিল অসম পুলিশ। ততক্ষণে ছত্তিশগড়ের রাজধানী রায়পুরে যাওয়ার জন্য এক বিমানে উঠে পড়েছিলেন প্রায় জনা পঞ্চাশেক কংগ্রেস নেতা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পবন খেরাও। আচমকা তাঁকে এসে জানানো হল, তাঁর ওড়া হবে না। এরপর তাঁকে বিমান থেকে নামিয়ে বিমানবন্দর থানায় নিয়ে গিয়ে করা হল গ্রেফতার। আর এই ঘটনার প্রতিবাদে বিমানবন্দরের টারম্যাকেই বসে পড়ে এক অভিনব প্রতিবাদ শুরু করলেন বিমানটিতে থাকা বাকি কংগ্রেস কংগ্রেস নেতারা। বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি), এক নাটকীয় ঘটনার সাক্ষী থাকল দিল্লি বিমানবন্দর। সম্প্রতি আদানি ইস্য়ুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করতে গিয়ে যে ভাষা তিনি ব্যবহার করেছিলেন, তার প্রেক্ষিতে পবন খেরার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিল বিজেপি।

শুক্রবার থেকে রায়পুরে তিন দিন ব্যাপী কংগ্রেসের ৮৫তম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন শুরু হচ্ছে। কংগ্রেসের সব শীর্ষস্থানীয় নেতারা সেখানে উপস্থিত থাকবেন। সেই অধিবেশনে যোগ দিতেই বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লি থেকে রায়পুরে উড়ে যাচ্ছিলেন কংগ্রেস নেতা পবন খেরা। গ্রেফতারির পর পবন খেরা অভিযোগ করেছেন, “আমাকে প্রথমে বলা হয়েছিল আপনার লাগেজে সমস্যা রয়েছে। কিন্তু, আমার কাছে একটিমাত্র হ্যান্ডব্যাগ ছিল। এরপর আমাকে ফ্লাইট থেকে নেমে যেতে বলা হয়। বলা হয় আপনি যেতে পারবেন না। তারপর বলা হয় ডিসিপি আপনার সঙ্গে দেখা করবেন। এরপর, আমাকে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। কোনও নিয়মকানুন, আইন-শৃঙ্খলা, যুক্তি-বুদ্ধির কোনও চিহ্নই ছিল না।”

উল্লেখ্য পবন খেরা সম্প্রতি গৌতম আদানির ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ‘নরেন্দ্র গৌতমদাস মোদী’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর প্রয়াত বাবাকে নিয়ে মজা করার অভিযোগ করেছিল বিজেপি। এই প্রেক্ষিতে তাঁকে গ্রেফতারের দাবি তুলেছিল। বিজেপি নেতাদের অভিযোগের প্রেক্ষিত এফআইআর দায়ের করেছিল অসম পুলিশ। সব মিলিয়ে অসমের ১৫টি জেলায় পবন খেরার বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। জানা গিয়েছে, গ্রেফতারির পর তাঁকে দিল্লির এক আদালতে পেশ করে ট্রানজিট রিমান্ডে অসমে নিয়ে যাওয়া হবে।

এদিন তাঁকে গ্রেফতারের পরই বিমান বন্দরে ঘটনার প্রতিবাদ জানান অন্যান্য কংগ্রেস নেত্রী সুপ্রিয়া শ্রীনাতে বলেন, “আজ ইন্ডিগোর ফ্লাইট ৬ই-২০৪-এ করে কংগ্রেসের সিনিয়র নেতারা দিল্লি থেকে রায়পুরে যাচ্ছিলেন। সবাই বিমানে উঠেছিলেন। কিন্তু, আমাদের নেতা পবন খেরাকে বিমান থেকে নেমে যেতে বলা হয়েছিল। এটা স্বৈরাচারী মনোভাব। অধিবেশনের আগে ইডির অভিযান চালিয়েছিল স্বৈরশাসক, আর এখন তিনি এই ধরনের কাজ করছেন।” কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেছেন, “আজ আমরা কংগ্রেস প্লেনারি সেশনের জন্য রায়পুর যাচ্ছিলাম। আমাদের সহকর্মী পবন খেরাকে বলা হয় তিনি লাগেজ ফেলে এসেছেন। কিন্তু তিনি কোনও লাগেজই আনেননি। তারপর পুলিশ এসে বলল অসম পুলিশ একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছে। আমরা গ্রেফতারি পরোয়ানা দেখাতে বলেছিলানম, কিন্তু তারা কিছু দেখাননি। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। অসম এবং দিল্লি পুলিশ জোর করে আমাদের উড়ান বন্ধ করে দিয়েছে।”

এদিকে, পবন খেরার গ্রেফতারির পরপরই তাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছে কংগ্রেস। প্রধান বিচারপতির এজলাসে এই মামলা দায়ের করেন বিশিষ্ট আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি। এদিনই বিকাল সাড়ে তিনটের সময় এই মামলার শুনানি হবে।