নয়া দিল্লি: ফের পত্রবোমা জেলবন্দি ‘কনম্যান’ সুকেশ চন্দ্রশেখরের (Sukesh Chandrashekhar)। দিল্লির আম আদমি পার্টির (Aam Admi Party) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন তিনি। তাঁর সমস্ত দাবিই সত্যি, প্রমাণ দিতে তিনি পলিগ্রাফ টেস্ট করতেও রাজি, এমনটাই দাবি করেন সুকেশ। ২০০ কোটির আর্থিক প্রতারণা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত সুকেশ চন্দ্রশেখর। এই মামলাতেই নাম জড়িয়েছে বলিউড অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফান্ডার্ডেজ়েরও।
সম্প্রতিই জেলবন্দি সুকেশ চন্দ্রশেখর চিঠি লিখেছিলেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে। সেই চিঠিতেই দিল্লির আবগারি আইন নিয়ে একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন। আবগারি আইন সংক্রান্ত দুর্নীতিতে আম আদমি পার্টির জড়িত থাকার অভিযোগও করেন তিনি। তাঁর দাবি ভুল প্রমাণ হলে, তিনি ফাঁসি চড়তেও রাজি বলে জানান সুকেশ। অন্যদিকে, আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরীবাল সুকেশ চন্দ্রশেখরের যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেন। এবার তিহার জেল থেকে ফের খোলা চিঠি দিলেন সুকেশ, তাতে কেজরীবালের সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে পলিগ্রাফ টেস্ট করাতে রাজি বলে জানান।
সুকেশের দাবি, আবগারি আইন দুর্নীতিতে শুধু দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াই নন, মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দর জৈনও জড়িত। লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনাকে লেখা চিঠিতে সুকেশ দাবি করেন, আপ নেতা সত্যেন্দর জৈন তাঁর কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা নিয়েছিলেন। অন্যদিকে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে তিনি ৫০ কোটি টাকা ঘুষ নিয়ে রাজ্যসভায় প্রার্থী পদ বা মনোনয়ন পাইয়ে দিতেন। গোটা দুর্নীতিতে দিল্লির প্রাক্তন ডিজি সন্দীপ গয়াল সহ একাধিক ব্যক্তি জড়িত বলে দাবি।
মঙ্গলবারও সুকেশ যে খোলা চিঠি লিখেছিলেন, তাতে দাবি করেছিলেন যদি আপ সরকারের বিরুদ্ধে আনা কোনও অভিযোগ অসত্য হয় বা ভুয়ো বলে প্রমাণিত হয়, তবে তিনি ফাঁসিতেও চড়তে রাজি। অন্যদিকে, তাঁর অভিযোগ প্রমাণিত হলে আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরীবাল যেন মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন এবং রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন।
আম আদমি পার্টির তরফে সুকেশ চন্দ্রশেখরের সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। ২০০ কোটির আর্থিক প্রতারণা মামলায় জড়িত সুকেশ সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলছেন বলেও দাবি করা হয়। আপের এই দাবি শুনেই শুক্রবার ফের নতুন চিঠি লেখেন সুকেশ চন্দ্রশেখর। সেই চিঠিতে তিনি লেখেন, “আম আদমি পার্টি, সত্যেন্দর জৈন, অরবিন্দ কেজরীবালের বিরুদ্ধে আমার সমস্ত অভিযোগ ও দাবির স্বপক্ষে পলিগ্রাফ টেস্ট করানোর পরামর্শকে আমি সাদরে স্বীকার করছি। আমি খুব আনন্দ ও উৎসাহের সঙ্গে পলিগ্রাফ টেস্টে সম্মতি জানাচ্ছি।”
তবে তিনি একা নন, অরবিন্দ কেজরীবাল ও সত্য়েন্দর জৈনেরও পলিগ্রাফ টেস্ট করাতে হবে বলে দাবি করেন সুকেশ চন্দ্রশেখর। চিঠিতে তিনি লেখেন, “আমাদের তিনজনকে (সুকেশ চন্দ্রশেখর, অরবিন্দ কেজরীবাল, সত্যেন্দর জৈন) মুখোমুখি বসিয়ে পলিগ্রাফ টেস্ট করাতে হবে এবং গোটা প্রক্রিয়াটাই যেন লাইভ টেলিকাস্ট করা হয়।”