বি.১.১.৫২৯ বা করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টকে ‘কনসার্ন অব ভ্যারিয়েন্ট’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। অতিরিক্ত মাত্রায় ওমিক্রনের মিউটেশন নিয়ে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ। আফ্রিকায় ওমিক্রমনের সংক্রমণ প্রাথমিকভাবে ধরা পড়েছে। তবে তা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে একাধিক দেশে। ভারতেও হাজির হয়েছে সেই ভ্যারিয়েন্ট। দেশে ইতিমধ্যেই ৮৭ জন ওমিক্রনে সংক্রমিত হয়েছেন। রাজ্যেও প্রথম আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে মুর্শিদাবাদ থেকে। মুর্শিদাবাদের সেই শিশুর রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। করোনা ও ওমিক্রন সংক্রান্ত যাবতীয় আপডেট দেখে নিন একনজরে-
তেলেঙ্গানাতে নতুন করে ৪ জনের শরীরে করোনার এই নয়া ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। আক্রান্তদের সকলেই হায়দরাবাদের বাসিন্দা বলেই খবর। দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যে মোট ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৭ হয়েছে বলেই খবর।
ক্রমশই ওমিক্রন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে কর্ণাটকে। কর্ণাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ সুধাকর কে জানিয়েছেন, রাজ্যে ৫ জনের দেহে নতুন করে করোন সংক্রমণ ধরা পড়েছে। প্রসঙ্গত দেশের প্রথম ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীর হদিশ কর্ণাটকেই মিলেছিল।
Five more cases of #Omicron have been detected in Karnataka today:
?19 yr male returning from UK
?36 yr male returning from Delhi
?70 yr female returning from Delhi
?52 yr male returning from Nigeria
?33 yr male returning from South Africa @BSBommai #Omicronindia— Dr Sudhakar K (@mla_sudhakar) December 16, 2021
দেশ যখন ওমিক্রন আতঙ্কে ত্রস্ত তখন গুজরাটের খবরে আরও বাড়ল উদ্বেগ। কোনও ভ্রমণের ইতিহাস নেই, নেওয়া করোনা টিকার দুটি ডোজ়ও, তাসত্ত্বেও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত গুজরাটের মহিলা। গুজরাটের মেহসেনা জেলায় ওমিক্রনে আকান্ত হওয়ার ঘটনার কথা সামনে এসেছে। মেহসানার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, ডাঃ বিষ্ণু প্যাটেল জানিয়েছেন, ওই মহিলার কোনও উপসর্গ নেই এবং তিনি স্থিতিশীল রয়েছেন।
গতকাল মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা ও শিশুর নমুনায় নয়া ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতির খবর জানা যায়। স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়ায় গোটা রাজ্য জুড়ে। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে তড়িঘড়ি সংক্রামিত শিশু ও তার পরিবারের সদস্যদের মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাদের আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তরফ থেকে জানানো হয় যে, ওই শিশুর আরটি- পিসিআর টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ। পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়ায় তাদেরকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়ছে আজ।
গা-ছাড়া মনোভাবেই বিপদ বেড়েছিল করোনার, এ বার নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ওমিক্রন সংক্রমণ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ১৬ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর অবধি মুম্বইয়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ক্রিসমাস থেকে নববর্ষ, এই সমস্ত অনুষ্ঠানেই বড় জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
দিল্লিতে খোঁজ মিলেছে আরও দুই ওমিক্রন আক্রান্তের। এই নিয়ে দিল্লিতে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০-এ। এদের মধ্যে একজন ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। বাকিরা এলএনজেপি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কেরলেও বাড়ছে ওমিক্রন সংক্রমণ। বুধবার নতুন করে চারজন আক্রান্তের খোঁজ মিলল। এই নিয়ে রাজ্য়ে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫-এ। কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আক্রান্তদের মধ্যে দুইজন, প্রথম আক্রান্তের পরিবারের সদস্য। ব্রিটেন ফেরত ওই চিকিৎসক ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার পরই পরিবারের সদস্যদের করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছিল। তখনই স্ত্রী ও মায়ের রিপোর্টও পজেটিভ আসে।
দক্ষিণী রাজ্যগুলিতে ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। কেরল, অন্ধ্র প্রদেশের পর এবার তামিলনাড়ুতেও ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলল। জানা গিয়েছে, ৪৭ বছরের ওই ব্যক্তি সম্প্রতিই নাইজেরিয়া থেকে দোহা হয়ে চেন্নাইতে এসেছিলেন। বুধবার রাতেই তার নমুনায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়। আক্রান্ত ব্যক্তি সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত এবং বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছেন বলেই জানান তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী এম সুব্রহ্মণ্যম।
ওমিক্রনে আক্রান্ত ওই ব্যক্তির পরিবারের সাতজন সদস্য ও একজন সহযাত্রীও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তাদের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে।
দেশে ইতিমধ্যেই থাবা বসিয়েছে করোনার নতুন ভ্য়ারিয়েন্ট ওমিক্রন। ইতিমধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ ছুঁইছুঁই। এই পরিস্থিতিতে নতুন বছরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার সতর্কবার্তা দিল মহারাষ্ট্র সরকার। বুধবারই রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, যে হারে রাজ্যে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্য়া বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে আগামী মাস থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। মহারাষ্ট্রে এখনও অবধি ৩২ জন ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে, যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।