নয়া দিল্লি : দেশের বড় শহরগুলিকে যে নমুনাগুলি জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের (Genome Sequencing) জন্য পাঠানো হচ্ছে, তার ৭৫ শতাংশই ওমিক্রনে (Omicron Variant) আক্রান্ত। এই পরিস্থিতিতে দেশের মেট্রো শহরগুলিতে তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গিয়েছে। বেসরকারি এক সংবাদ মাধ্যমে এমনটাই জানিয়েছেন ভারতের কোভিড টাস্ক ফোর্সের (COVID Task Force) প্রধান চিকিৎসক এন কে অরোরা।
কোভিড টাস্ক ফোর্সের প্রধানের মতে, মুম্বই, দিল্লি এবং কলকাতার মতো বড় শহরগুলিতেই ওমিক্রনে আক্রান্তদের ৭৫ শতাংশ। এন কে অরোরার মতে, “ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আমরা করোনার নতুন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের প্রথম সংক্রমণের সন্ধান পেয়েছিলাম। গত সপ্তাহে, গোটা দেশে মোট সংক্রমণের প্রায় ১২ শতাংশ ছিল ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। এক সপ্তাহের ব্যবধানে তা অনেকটাই বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোট সংক্রমণের ক্ষেত্রে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাফে বেড়েছে ২৮ শতাংশ।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের সামগ্রিক করোনা পরিস্থিতির পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট, কোভিড সংক্রমণের অনুপাত হিসাবে দ্রুত বাড়ছে ওমিক্রন। এখানে, আরও গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য রয়েছে। তা হল দিল্লি, মুম্বই, কলকাতার মতো প্রধান মেট্রো শহর এবং শহরতলিগুলি। বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতে হয় দিল্লির কথা। এগুলিতে সমস্ত কোভিড সংক্রমণের ক্ষেত্রে ৭৫ শতাংশেরও বেশি ওমিক্রন।”
ভারতে এখনও পর্যন্ত ১ হাজার ৭০০ জন ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। যার মধ্যে সবথেকে বেশি ওমিক্রন আক্রান্ত রয়েছেন মহারাষ্ট্রে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৫১০। সোমবার সকালের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশটি নতুন করোনা আক্রান্তের ক্ষেত্রে ২২ শতাংশের লম্বা লাফও দেখা গিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসক এন কে অরোরা আশঙ্কা করছেন, অতিমারি তৃতীয় ঢেউ ভীষণভাবে প্রকট। তাঁর কথায়, “ভারত স্পষ্টতই করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ চলছে। পুরো ঢেউটি একটি নতুন ভ্যারিয়েন্টের দ্বারা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে – ওমিক্রন।” বিগত চার-পাঁচ দিনের করোনা পরিস্থিতি থেকে তা আরও স্পষ্ট বলে মত তাঁর। উল্লেখ্য বিগত দিনগুলিতে “আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি” পেয়েছে৷
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৭৫ জন ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মেলায়, দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৭০০-এ বেড়ে দাঁড়িয়েছে। এরমধ্যে ৬৩৯ জন এখনও অবধি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। রাজ্য়ের নিরিখে সর্বাধিক আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে মহারাষ্ট্র থেকেই, সেখানে বর্তমানে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ৫১০। এরপরই রয়েছে দিল্লি, সেখানে ৩৫১ জন ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। কেরল (১৫৬), গুজরাট (১৩৬), তামিলনাড়ু (১২১), রাজস্থান (১২০)-এও আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
দেশে বর্তমানে সুস্থতার হার ৯৮.২ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১০ হাজার ৮৪৬ জন। এই নিয়ে দেশে এখনও অবধি মোট ৩ কোটি ৪২ লক্ষ ৯৫ হাজার ৪০৭ জন করোনাকে হার মানিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। বর্তমানে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৫৮২। গত ২৪ ঘণ্টাতেই সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ২২ হাজার ৭৮১।
আরও পড়ুন: Omicron Variant: জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে ৮৪ শতাংশের নমুনায় ওমিক্রন! ভয় ধরাচ্ছে রাজধানী