নয়া দিল্লি: গরু পাচার কাণ্ডে নয়া মোড়। সমস্যা বাড়ল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন যুবনেতা বিনয় মিশ্রের। সোমবার (৭ নভেম্বর), এই মামলায় তাকে ‘পলাতক’ বলে ঘোষণা করল দিল্লির রাউজ় এভইনিউ আদালত। এই মামলায় সিবিআই তাকে বারবার তলব করেছিল। এমনকি তার বাড়িতেও হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। তারপরও তার খোঁজ মেলেনি। এরপরই, তাকে ‘পলাতক আর্থিক অপরাধী’ হিসেবে ঘোষণা করার আবেদন জানিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট। ফলে, এখন দেশে-বিদেশে বিনয় মিশ্রের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে আর বাধা রইল না।
ভারতে আর্থিক কোনও অপরাধ করে যারা বিদেশে আশ্রয় নেয়, তাদের ভারতীয় আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যেই ২০১৮ সালে পলাতক আর্থিক অপরাধী আইন প্রণয়ন করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এই আইনের আওতায় ঘোষিত অপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে পারে ইডি। সে সেই সম্পত্তি তাঁর নামে থাক, কি বেনামে। এমনকী অভিযুক্ত কোনও সংস্থার মালিক হলে, সেই সংস্থাও বাজেয়াপ্ত করতে পারে ইডি। ইতিমধ্যেই দেশে থাকা বিনয় মিশ্রের বেশ কিছু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে কলকাতার রাসবিহারী এলাকায় অবস্থিত ৪ কোটি টাকা মূল্যের বসতবাড়িও।
কয়লা ও গরু পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র বর্তমানে প্রশান্ত মহাসাগরের অবস্থিত ভানুয়াটু নামে এক দ্বীপের বাসিন্দা বলে তদন্তকারীদের দাবি। কলকাতা হাইকোর্টে ইডির আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন, ১ লক্ষ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার খরচ করে দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াটুর নাগরিকত্ব নিয়েছেন বিনয় মিশ্র। ইডির অনুমান দেশের বাইরেও বিনয় মিশ্রের বেশ কিছু সম্পত্তি রয়েছে। সেইসব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার লক্ষ্য়েই বিনয় মিশ্রকে পলাতক আর্থিক অপরাধী হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানানো হয়েছিল।
গরু পাচার ও কয়লা পাচার কাণ্ডে প্রথম থেকেই বিনয় মিশ্র জড়িত বলে অভিযোগ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। তদন্তকারীদের অভিযোগ, গরু ও কয়লা পাচারের মোটা টাকা প্রভাবশালীদের কাছে পৌঁছে দিত এই বিনয় মিশ্রই। কিন্তু, বিনয় মিশ্রের কোনও খোঁজ পায়নি কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি। এমনকি বিনয় মিশ্রের স্ত্রী ও ছেলেরও কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাঁর ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিস জারি করা হয়েছিল বিনয় মিশ্রের নামে। এবার তাকে পলাতক আর্থিক অপরাধীদের তালিকাতেও ফেলা হল।