Video: ২০ বার ছুরিকাঘাতের পর পাথর দিয়ে কিশোরীর মাথা থেঁতলে দিল প্রেমিক, সিসিটিভিতে বন্দি নৃশংস হত্যাকাণ্ড

নয়া দিল্লি: অন্তত ২০ বার ছুরিকাঘাত, তারপর পাথরের স্ল্যাব দিয়ে মেরে মেরে থেঁতলে দেওয়া হল তার মাথা। রবিবার (২৮ মে) সন্ধ্যায়, নয়া দিল্লির রোহিনী এলাকায় প্রকাশ্য রাস্তায় নৃশংসভাবে হত্যা করা হল ১৬ বছরের এক মেয়েকে। অভিযুক্ত নিহত মেয়েটির বয়ফ্রেন্ড। এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ধরা পড়েছে ওই এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরায়। আশ্চর্যজনক ঘটনা হল, সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ড যখন চলছে, সেই সময়ে ওই এলাকা দিয়ে বহু মানুষ চলাচল করছিলেন। কিন্তু, তাঁরা কেউই হামলাকারী যুবককে থামানোর চেষ্টা পর্যন্ত করেননি। ঘটনার দিকে সতর্ক দৃষ্টি দিয়ে পাশ কাটিয়ে গিয়েছেন। রবিরার রাতে এই ঘটনা সম্পর্কে খবর পেয়ে তদন্ত শুরু করে দিল্লি পুলিশ। সোমবার (২৯ মে) সকালে, সাহিল নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় ওই যুবক-যুবতীর মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। সেই ঝগড়ার জেরেই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় ১৬ বছরের এক মেয়েটিকে অন্তত ২০ বার ছুরির কোপ মেরেছিল অভিযুক্ত সাহিল। এক পর্যায়ে ছুরিটি মেয়েটির দেহে গেঁথে যায়। ততক্ষণ অবশ্য মেয়েটির দেহ নিথর হয়ে গিয়েছে। সেই অবস্থাতেই একটি পাথরের স্ল্যাব দিয়ে মেয়েটির মাথা লক্ষ্য করে বাড়ি মারতে থাকে সাহিল। এক সময় সে ওই জায়গা থেকে চলে যাওয়ার উপক্রম করে। কিন্তু, পরক্ষণেই ফিরে এসে আবার পাথরের বাড়ি মেরে মেরে মেয়েটির মুখ থেঁতলে দেয় সে।

দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, মেয়েটি একটি জন্মদিনের পার্টিতে যোগ দিতে যাচ্ছিল। এক পদস্থ পুলিশ কর্তা বলেছেন, “তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু, গতকাল তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। মেয়েটি তার বন্ধুর ছেলের জন্মদিনে যোগ দিতে যাচ্ছিল। ছেলেটি তাকে অনুসরণ করে। সুযোগ বুঝে তাকে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করে এবং তাকে পাথর দিয়ে আঘাত করে।” স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘনার বিষয়ে পুলিশে খবর দিয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেছিল যে মেয়েটির নিথর দেহ পড়ে আছে এবং তার চারপাশে জমাট বেঁধে আছে চাপ চাপ রক্ত। রাতেই এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। নিহত মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহ করে। তাদের কাছ থেকেই সাহিলের খবর পায় পুলিশ। পুলিশ আরও জানিয়েছে, অভিযুক্ত সাহিলের বয়স ২০। তাঁর পরিবার তদন্তে সহায়তা করছে।

তবে পুরো ঘটনায় নেটিজেনরা বিস্মিত ওই এলাকার মানুষদের আচরণে। চোখের সামনে এই নৃশংস হত্যা হতে দেখেও তারা কেউ কেন সাহিলকে আটকানোর চেষ্টা করলেন না, এই ঘটনার ক্ষেত্রে এই প্রশ্নটিই সবথেকে বড় হয়ে উঠেছে। দিল্লির মহিলা কমিশনের প্রধান, স্বাতি মালিওয়াল এই ঘটনার প্রেক্ষিতে দিল্লি পুলিশকে একটি নোটিশ পাঠিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “অপরাধের ঘটনা সিসিটিভিতে বন্দি হয়েছে। বেশ কিছু লোক এটা হতে দেখেও মনোযোগ দেয়নি। দিল্লি মহিলা ও মেয়েদের জন্য অত্যন্ত অনিরাপদ হয়ে উঠেছে।”