
নয়া দিল্লি: ১০ নভেম্বরের দিল্লি বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে গোটা দেশ। বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১২ জন। আহত আরও ২০ জন। তবে এই বিস্ফোরণ কিছুই নয়, আরও বড়সড় নাশকতার ছক ছিল ডাক্তার-জঙ্গিদের। জইশের মগজ ধোলাইতে তারা দেশে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ছক কষেছিল। একসঙ্গে ৬ জায়গায় সিরিয়াল ব্লাস্টের প্ল্যান ছিল।
জানা গিয়েছে, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ‘বদলা’ নিতেই জইশের ‘হোয়াইট কলার মডিউল’ সিরিয়াল ব্লাস্টের ছক কষেছিল। এনআইএ-র জেরায় সে কথা স্বীকার করেছে ধৃতরা। আগামী ৬ ডিসেম্বর, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনই দিল্লির ৬ জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল। ধৃতরা জানিয়েছে, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বদলা নিতেই এই দিনটা বাছাই করেছিল তারা।
মোট ৩২টি গাড়ি ব্যবহার করে এই বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল। এর মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৪টি গাড়ি চিহ্নিত করা গিয়েছে। আই-২০ ছাড়াও একটি ব্রেজা, একটি সুইফট ডিজায়ার, একটি ফোর্ড ইকো স্পোর্টস কার উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছে, পুরনো, সেকেন্ড বা থার্ড হ্যান্ড গাড়ি-ই বেছে বেছে কেনা হত, যাতে পুলিশের পক্ষে গাড়িগুলি ট্রেস করা কঠিন হয়। হরিয়ানা ছাড়াও উত্তর প্রদেশ, দিল্লির প্রত্যন্ত এলাকা থেকে গাড়িগুলি কেনা হত।
জেরায় আরও জানা গিয়েছে যে গোটা সন্ত্রাস পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে ধাপে ধাপে বিস্তারিত প্ল্যান কষেছিল তারা। পাঁচ ধাপে দিল্লিতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ছকে প্রথম ধাপ ছিল জইশ ও আনসার ঘাজয়াত-উল-হিন্দের মদতে মডিউল তৈরি।
দ্বিতীয় ধাপে, আইইডি তৈরির জন্য নুহ ও গুরুগ্রাম থেকে বিস্ফোরক এনে মজুত করা হয়।
তৃতীয় ধাপে, কেমিক্যাল আইইডি (Chemical IED) তৈরি করা এবং সম্ভাব্য টার্গেট বাছাই করা ও সেখানের রেইকি করে আসা।
চতুর্থ ধাপে, রেইকির পর মডিউলের সদস্যদের মধ্যে বিস্ফোরক সাপ্লাই করা এবং দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে সেই বিস্ফোরক রেখে আসা।
পঞ্চম তথা শেষ ধাপে, দিল্লির ছয় থেকে সাত জায়গায় একসঙ্গে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ করা হত।
তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, প্রথমে চলতি বছরের অগস্ট মাসে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ছক কষা হলেও পরে বাবরি মসজিদে ধ্বংসের দিনকে বেছে নেওয়া হয়। গোয়েন্দারা মনে করছেন, জইশ প্রধান মাসুদ আজহার চায় বাবরি মসজিদ বিতর্ক খুঁচিয়ে ভারতে সাম্প্রদায়িক অশান্তি তৈরি করতে। বহু বছর ধরেই তারা বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বদলা নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।