
নয়া দিল্লি: দিল্লি বিস্ফোরণের ছক কষা হয়েছিল অনেক আগেই। এটি পূর্ব পরিকল্পিত। তেমনটাই মনে করছেন তদন্তকারীরা। আর সেই কারণেই গাড়ি কেনাবেচার ক্ষেত্রে অনেক ছলচাতুরি করা হয়েছে। i20 অভিশপ্ত সেই গাড়ি, যেটা ঘিরে এত রহস্য, সেই গাড়ি অনেক হাত ঘুরে এসেছিল ‘আত্মঘাতী’ চিকিৎসক উমর নবির হাতে। সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে ওই ছোট গাড়ি গতি কমিয়ে লালকেল্লার কাছে সুভাষ মার্গ সিগন্যালে দাঁড়ায়। তখনই আচমকা বিস্ফোরণ ঘটে ওই গাড়িতে। ওই গাড়িতেই ছিলেন নবি।
জানা যাচ্ছে, সিগন্যালে দাঁড়ানোর আগে পার্কিং লটে প্রায় তিন ঘণ্টা ঠায় দাঁড়িয়েছিল ওই গাড়ি। গাড়ির ভিতর বসেছিলেন নবি। গাড়ি থেকে এক মুহূর্তের জন্যও নামেননি। তদন্তকারীরা মনে করছেন, ডাক্তার উমর হয়তো কারোর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অথবা তিনি পার্কিং লটে নির্দেশের অপেক্ষা করছিলেন।
কিন্তু এই গাড়ি অনেক হাত ঘুরে এসেছিল উমরের হাতে। এই গাড়ির নম্বর প্লেটের সূত্র ধরে পুলিশ পৌঁছয় হরিয়ানার বাসিন্দা মহম্মদ সলমনের কাছে। তাঁর নামেই গাড়িটি। তাঁকে আটক করে পুলিশ। জেরায় জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগেই তিনি এই গাড়িটি সাউথ দিল্লির বাসিন্দা দেবেন্দ্র নামে এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন। তারপর সেটি জম্মু কাশ্মীরের অম্বলার বাসিন্দা তারিকের কাছে বিক্রি করে দেন। তারিকের আবার ফরিদাবাদে গাড়ি কেনাবেচার একটা সংস্থা রয়েছে। সেই সংস্থাকে থেকে গাড়ি কেনেন আমির। আমির পেশায় কলমিস্ত্রি। গাড়ির চাবি হাতে যাঁর ছবি ভাইরাল হয়েছে, তিনিই আত্মঘাতী উমর নবির আত্মীয়। জানা যাচ্ছে, আদতে নবিই আমিরের নামে গাড়িটা কেনেন। গতকালের ঘটনার পর আমির ও তাঁর ভাইকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। জানা যাচ্ছে, আমির তিন বছর কাশ্মীরে ছিলেন না, এই মাঝের সময়ে তিনি কোথায় ছিলেন, তা জানার চেষ্টা চলছে। তবে উল্লেখ্য, গাড়ির নম্বর প্লেট ও নাম এখন মহম্মদ সলমনের নামেই । তারিককেও আপাতত আটক করেছে পুলিশ।
জানা যাচ্ছে, চিকিৎসক উমর উত্তর কাশ্মীরের বাসিন্দা। তিনি ফরিদাবাদ হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তদন্তকারীরা মনে করছেন, দিল্লির বিস্ফোরণকাণ্ডের ছক অত্যন্ত গহীন। পাশাপাশি তাঁরা এটাও মনে করছেন, জম্মু কাশ্মীর থেকে একজন চিকিৎসক গ্রেফতার, তারপর ফরিদাবাদ থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার, হায়দরাবাদ, আমেদাবাদ থেকে একাধিক চিকিৎসকের গ্রেফতারি, তারপর দিল্লিতে বিস্ফোরণ, আত্মঘাতী চিকিৎসক-সবটাই এক সুতোয় গাঁথা বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। আর সেই সুতোর শেষপ্রাপ্ত পুলওয়ামাতেই বাঁধা কিনা, সেটাই দেখার।