CBSE Class 12 exams: কোমায় কেটেছে একবছর , নতুন করে শিখতে হয়েছে ভাষা, সেই ছেলেই পেল ৯৩% নম্বর

May 17, 2024 | 6:39 PM

CBSE Class 12 exams: আর পাঁচজন পরীক্ষার্থীর তুলনায় তাঁর লড়াইটা ছিল অনেক বড়। দশম শ্রেণির পরীক্ষার পর, পরের বোর্ডের পরীক্ষা হওয়ার মধ্যে, এক বছরেরও বেশি সময় কোমায় ছিলেন মাধব। তাঁর মস্তিষ্কে একের পর এক অস্ত্রোপচার হয়েছে। দীর্ঘদিন কথা বলতে পারতেন না। নতুন করে তাঁকে শিখতে হয়েছে ভাষা।

CBSE Class 12 exams: কোমায় কেটেছে একবছর , নতুন করে শিখতে হয়েছে ভাষা, সেই ছেলেই পেল ৯৩% নম্বর
অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে মাধব
Image Credit source: Twitter

Follow Us

নয়া দিল্লি: সদ্য প্রকাশিত হয়েছে সিবিএসই (CBSE) দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা। এই পরীক্ষায়, ৯৩% নম্বর পেয়েছে দিল্লির পুষ্প বিহারের অ্যামিটি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ছাত্র মাধব শরণ। সিবিএসই-র দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় এই নম্বর অনেকেই পেয়েছে। কিন্তু, মাধবের কৃতিত্ব অন্য জায়গায়। আর পাঁচজন পরীক্ষার্থীর তুলনায় তাঁর লড়াইটা ছিল অনেক বড়। দশম শ্রেণির পরীক্ষার পর, পরের বোর্ডের পরীক্ষা হওয়ার মধ্যে, এক বছরেরও বেশি সময় কোমায় ছিলেন মাধব। তাঁর মস্তিষ্কে একের পর এক অস্ত্রোপচার হয়েছে। দীর্ঘদিন কথা বলতে পারতেন না। নতুন করে তাঁকে শিখতে হয়েছে ভাষা। বিজ্ঞান ছেড়ে পড়তে হয়েছে কলা নিয়ে।

দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষার পর-পরই, ২০২১-এর অগস্টে, মাধবের মস্তিষ্কে বড় মাপের রক্তক্ষরণ হয়েছিল। ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে বলে হাইপার-ডেন ব্রেন হেমারেজ। এর জেরে কোমায় চলে গিয়েছিলেন মাধব। তাঁর মস্তিষ্কের এক-তৃতীয়াংশ অকেজো হয়ে গিয়েছিল। মস্তিষ্কের যে অঞ্চলগুলি কথা বলা, কথা বোঝা, অঙ্ক কষা এবং লেখা নিয়ন্ত্রণ করে, ক্ষতি হয়েছিল সেই অংশগুলিরই। কোমায় অচেতন অবস্থাতেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। আইসিইউ-তে থাকাকালীন, প্রথম সপ্তাহে চিকিৎসকরা বুঝতেই পারছিলেন না, মাধব আদেশ বুঝতে পারছে কিনা, তার পারিপার্শ্বিক অবস্থা বুঝতে পারছে কিনা। কারণ, কথা বলার ক্ষমতা একেবারেই হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।

পরের ১২ মাসে ডাক্তাররা তাঁর মস্তিষ্কে একাধিক অস্ত্রোপচার করেন। বিকিরণ দিয়ে চিকিৎসা হয়। তাঁর মাথার খুলি থেকে একটি হাড়ের ভাঁজও বের করা হয়। ছয় মাস ধরে তাঁর মস্তিষ্ক উন্মুক্ত অবস্থায় ছিল। মাধবের সুস্থ হওয়ার যাত্রাটা বেশ কঠিন ছিল। কিন্তু, তিনি কখনও ভেঙে পড়েননি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার চার মাস পর, তিনি হাঁটা শুরু করেছিলেন। যদিও তাঁর ডান পা তখনও ভালভাবে নড়ত না। ভুলে গিয়েছিলেন হিন্দি-ইংরাজি। তাই কোনও কথা বোঝাতেও পারতেন না। তাঁকে নতুন করে ইংরেজি হিন্দি শিখতে হয়েছিল। প্রাথমিক ইংরেজি শিখতেই তাঁর প্রায় এক বছর সময় লেগেছিল।

২০২২-এর জুলাইয়ে তিনি স্কুলে ফিরেছিলেন। বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার ধকল সামলাতে পারবেন না বুঝে, তিনি, কলা বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন। তারপর, চলছে কঠোর পরিশ্রম। তাঁর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায় ফল দিয়েছে। সিবিএসই দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৫০০ নম্বরের মধ্যে ৪৬৫ নম্বর পেয়েছেন তিনি। তাঁর এই অসাধারণ কীর্তিতে গর্বিত তাঁর স্কুল। স্কুলের এক শিক্ষক জানিয়েছেন, “সবাই মাধবের সাহসিকতাকে সেলাম জানাচ্ছে।” তিনি আরও জানিয়েছেন, মাধব সহানুভূতি চান না। নিজের চেষ্টায় স্বাধীন ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করার জন্য তিনি দৃঢ় সংকল্প নিয়েছেন। তাঁর এই লড়াই, অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবে বলে আশা করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

Next Article