নয়া দিল্লি: “আতঙ্কিত হবেন না”, বারবার এই একই কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজধানীর ক্রমবর্ধমান করোনা (COVID-19) ও ওমিক্রন (Omicron) সংক্রমণের কারণে রাজ্যবাসী যাতে আতঙ্কিত না হন, সেই আশ্বাসই দিলেন দিল্লি(Delhi)-র মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল(Arvind Kejriwal)। তাঁর কথায়, রাজ্যে সংক্রমণ বাড়লেও পরিস্থিতি এখনও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। রাজ্য়ভিত্তিক ওমিক্রন সংক্রমণের নিরিখে শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র(Maharashtra), এরপরই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি।
রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে এদিন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল (Arvind Kejriwal) জানান, সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের (Second Wave of COVID-19) তুলনায় বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা যথেষ্ট কম। তিনি বলেন, “দিল্লিতে করোনা সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে, তবে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ কোনও কারণ নেই। বর্তমানে রাজ্যে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৬৩৬০। আজ কমপক্ষে আরও ৩১০০ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলতে পারে। গতকাল মোট ২৪৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে সকলেরই উপসর্গ মৃদু বা তারা উপসর্গহীন।”
রাজ্যে হাসপাতালগুলিতে কত সংখ্যক রোগী ভর্তি রয়েছেন এবং সরকারের তরফেই বা কী কী প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে কেবল ৮২টি অক্সিজেন যুক্ত শয্যা পূর্ণ হয়েছে। রাজ্য সরকার ৩৭ হাজার বেডের ব্যবস্থা করে রেখেছে। আমি আপনাদের বলতে চাই যে নতুন করে যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের সকলেই মৃদু উপসর্গ দেখা দিচ্ছে বা উপসর্গহীন থাকছেন, ফলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।”
সংক্রমণ এখনও ভয়াবহ আকার ধারণ না করলেও, রাজ্যবাসী যাতে করোনা নিয়ে অসতর্ক না হয়ে পড়েন, সেই বার্তা দেন কেজরীবাল। তিনি বলেন, “২৯ ডিসেম্বরই রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজারের কাছাকাছি, ১ জানুয়ারি তা ৬ হাজারে পৌঁছেছে। এই সময়ের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্য়া হ্রাস পেয়েছে, যা ভাল ইঙ্গিত। তবে করোনা নিয়ে সতর্ক থাকতেই হবে।”
দিল্লির সর্বশেষ করোনা বুলেটিন অনুযায়ী, রাজধানীতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৭১৬ জন। বিগত একদিনে যতগুলি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তার মধ্যে ৩.৬৪ শতাংশের নমুনাতেই করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। শনিবার যে হারে সংক্রমণ বেড়েছে দিল্লিতে, তা সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যায়নি। এর আগে ২১ মে দিল্লিতে ৩ হাজারের কিছু বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, সংক্রমিতের হার ছিল ৪.৭৬ শতাংশ। উল্লেখ্য, শুক্রবার বর্ষবরণের রাতে দিল্লিতে ১ হাজার ৭৯৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। পজিটিভিটি রেট ছিল ১.৭৩ শতাংশ। বৃহস্পতিবার, সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, পজিটিভিটি রেট ছিল ২.৪৪ শতাংশ এবং দৈনিক সংক্রমণ ছিল ১ হাজার ৩১৩ জন।
দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্য়েন্দর জৈন জানিয়েছেন, আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও আপাতত হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা কমই রয়েছে। রাজ্যে আপাতত হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তবে সংক্রমণের হারের উপর নির্ভর করে শীঘ্রই বিধিনিষেধ নিয়ে পর্যালোচনা করা হতে পারে। আক্রান্তের হার, হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা সহ একাধিক বিষয় পর্যালোচনা করেই বিধিনিষেধ কঠোর বা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।