নয়া দিল্লি: সুযোগ পেলেই মহিলা কুস্তিগীরদের যৌন হেনস্থার চেষ্টা করেছেন রেসলিং ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার প্রাক্তন প্রধান তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিং। রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর), নয়া দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউ আদালতে গুরুতর অভিযোগ করল দিল্লি পুলিশ। পুলিশ আরও বলেছে, ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার মতো যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। দেশের একাধিক শীর্ষস্থানীয় মহিলা কুস্তিগীর তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন। প্রাথমিকভাবে দিল্লি পুলিশ ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করছে না বলে অভিযোগ করেছিলেন কুস্তিগীররা। দিল্লির যন্তর মন্তরে ব্রিজভূষণের গ্রেফতারির দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে ধরনাও দেন তাঁরা। পরে, শীর্ষ আদালতের নির্দেশে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছিল দিল্লি পুলিশ। গত ১৫ জুন ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্রও জমা দিয়েছে পুলিশ। তবে, ব্রিজভূষণকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি।
তবে, ব্রিজভূষণের আশপাশের বৃত্তটা ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে। জাল গোটাচ্ছে দিল্লি পুলিশ। এদিন আদালতে তারা দাবি করেছে, নিজের অপরাধ সম্পর্কে সচেতন ছিলেন ব্রিজভূষণ। কোনও ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ ছিল না। এদিন আদালতে, তাজিকিস্তানে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের সময়ের দুটি ঘটনার উদাহরণ দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, তাজিকিস্তানে প্রতিযোগিতা চলাকালীন, ব্রিজভূষণ এক মহিলা কুস্তিগীরকে তাঁর ঘরে ডেকে এনে জোর করে আলিঙ্গন করেছিলেন। ওই মহিলা কুস্তিগীর তার প্রতিবাদ করলে, ব্রিজভূষণ বলেছিলেন তিনি ‘বাবার মতো’ করে জড়িয়ে ধরেছিলেন।
তাজিকিস্তানেই অপর এক মহিলা কুস্তিগীরের শার্টটি তুলে ধরে তাঁর পেটে আপত্তিকরভাবে হাত দিয়েছিলেন ব্রিজভূষণ, এমনও অভিযোগ রয়েছে। দিল্লি পুলিশের যুক্তি, নিজেকে বাবার মতো বলে দাবি করা থেকেই স্পষ্ট, তিনি তাঁর অপরাধ সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন ছিলেন।
দিল্লিতে মহিলা কুস্তিগীররা বিক্ষোভ প্রদর্শনের পর, কিংবদন্তী মহিলা বক্সার এমসি মেরি কমের নেতৃত্বে এই তদারকি কমিটি গঠন করেছিল কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক। তদারকি কমিটি ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্ত করে সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তার একটি অনুলিপি দিল্লি পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। এদিন আদালতে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, তদারকি কমিটিও ব্রিজভূষণ শরণ সিংকে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি থেকে অব্যাহতি দেয়নি। আগামী ৭ অক্টোবর ফের রাউজ অ্যাভিনিউ আদালতে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। শেষ পর্যন্ত এই মামলার জেরে ব্রিজভূষণকে আদৌ গ্রেফতার করা হয় কিনা, এখন সেটাই দেখার।