দিল্লি: শাশুড়ি (Mother-in-law) বাতের সমস্যায় ভুগছেন। ফলে ঠিকমতো হাঁটা-চলা করতে পারেন না। ফলে তাঁর নিত্যনৈমিত্তিক কাজে সাহায্য করতেন বৌমা (Daughter-in-law)। যা করতে-করতে বিরক্ত, অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন পুত্রবধূ। সেই বিরক্তি, অবসাদের জেরে রান্নার ফ্রাইং প্যান দিয়েই শাশুড়িকে ঘা-কতক দিয়ে দিলেন বৌমা। বৌমার সেই মারধর সহ্য করতে পারেননি ৮৬ বছরের বৃদ্ধা। গুরুতর আহত হয়ে অবশেষে মৃত্যু হল তাঁর। বৌমার হাতে শাশুড়ির প্রহৃত হয়ে মৃত্যুর ঘটনাটি যখন ঘটেছে, সেই সময় ঘরে কেউ ছিলেন না। ফলে বিষয়টি যে কখনও প্রকাশ্যে আসবে, তা কল্পনাও করেননি গুণধর বৌমা। কিন্তু, ঘরের CC ক্যামেরায় গোটা ঘটনাটি বন্দি হয়েছে। পরে ওই বৃদ্ধার ছেলে ঘরে ঢুকে সিসিটিভি ফুটেজে স্ত্রীর হাতে মায়ের মৃত্যুর ঘটনাটি দেখতে পান। তারপর তিনিই পুলিশের হাতে তুলে দেন স্ত্রীকে। দক্ষিণ দিল্লির (South Delhi) নেব সরাই এলাকায় ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পুলিশ জানায়, মৃত বৃদ্ধার নাম হাসি সোম (৮৬)। দক্ষিণ দিল্লির নেব সরাই এলাকার একটি আবাসনের বাসিন্দা ৫১ বছর বয়সি সুরজিৎ সোমের স্ত্রী ৪৮ বছরের শর্মিষ্ঠা সোমের হাতেই প্রহৃত হয়ে হাসি সোমের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। বৃদ্ধার দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে এবং ফ্রাইং প্যান দিয়ে তাঁকে মারার দৃশ্য CC ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।
এক সিনিয়ার পুলিশ আধিকারিক জানান, সোম পরিবারটি কলকাতার (Kolkata) বাসিন্দা। কর্মসূত্রে সুরজিৎ দিল্লিতে থাকতেন এবং তাঁর মা হাসি সোম ২০২২ সাল পর্যন্ত একাকী কলকাতায় ছিলেন। তারপর সুরজিৎ তাঁর মা-কে দিল্লিতে ফ্ল্যাটে নিয়ে যান। সুরজিতের ১৬ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে মায়ের সম্পর্ক ভাল ছিল না বলে জানিয়েছে ওই কিশোরী। সুরজিতও সেকথা স্বীকার করেছেন। তবে এরকম কাণ্ড যে ঘটবে, তা তিনি কল্পনা করেননি। গত ২৮ এপ্রিল সুরজিৎ বাড়ি ফিরে মায়ের রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান। তারপর CCTV ফুটেজে স্ত্রীর হাতে মায়ের প্রহৃত হওয়ার ঘটনা ধরা পড়েছে। বৃদ্ধার কান্নাও সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়েছে।
দিল্লির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) চন্দন চৌধুরী জানান, গত ২৯ এপ্রিল হাসি সোমের দেহ এইমস হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হয়। সোমবার সেই রিপোর্ট বেরোয় এবং দেখা যায়, তাঁর মাথায়, মুখ সহ দেহের মোট ১৪টি জায়গায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এই ঘটনায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। শর্মিষ্ঠাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।