লখনউ: বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই), উত্তর প্রদেশের গোন্ডার কাছে লাইনচ্যুত হয়েছে চণ্ডীগঢ়-ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস। এখনও পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত আরও ৬০ জন। কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আম আদমি পার্টির পক্ষ থেকে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে মোদী সরকারকে। কিন্তু, এই দুর্ঘটনার পিছন কী রয়েছে কোনও নাশকতার ঘটনা? প্রশ্ন তুলে দিলেন ডিব্রুগড় এক্সপ্রেসের অন্যতম লোকো পাইলট, ত্রিভুবন। রেলের এক সূত্র জানিয়েছে, লোকো পাইলট ত্রিভুবন দাবি করেছেন, লাইনচ্যুত হওয়ার আগে তিনি একটি বিস্ফোরণের মতো বিকট শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন!
গোন্ডা জেলার মতিগঞ্জ এবং ঝিলাহি রেল স্টেশনের মধ্যে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ১৭ জুন রাহাপানি স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। ওই ঘটনায় এক লোকো পাইলটের মৃত্যু হয়েছিল। ঠিক তার একমাস পরই ফের এক বড় দুর্ঘটনার মুখে পড়ল ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস। এদিন অবশ্য দুই লোকো পাইলটই নিরাপদে আছেন। সূত্র অনুসারে, লোকো পাইলট ত্রিভুবন দাবি করেছেন, ট্রেনের বগিগুলি লাইনচ্যুত হওয়ার আগে তিনি একটি বিস্ফোরণের মতো শব্দ শুনেছিলেন। বস্তুত, কয়েকজন যাত্রীও একটি বিস্ফোরণের মতো শব্দ শোনার দাবি করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এদিন দুপুরে ট্রেনটি গোন্ডার ঝিলহি স্টেশনের কাছাকাছি আসার পরই হঠাৎ একটা বিকট শব্দ হয়েছিল। এরপরই ট্রেনটি কাঁপতে শুরু করে এবং লাইনচ্যুত হয়েছিল।
যাত্রী ও লোকো পাইলট এই দাবি করার পর, রেলওয়ের পক্ষ থেকেও নাশকতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, রেলের পক্ষ থেকে এই সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর পাশাপাশি, এই দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারগুলিকে ১০ লক্ষ টাকা করে এক্স গ্রাসিয়া দেওয়ার ঘোষণা করেছে রেল। এছাড়া গুরুতর আহতদের ২.৫ লক্ষ টাকা করে এবং অল্প আঘাতপ্রাপ্তদে ৫০,০০০ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। রেলের উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের পাশাপাশি, উত্তর প্রদেশ পুলিশের সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াডও ডিব্রুগড় ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্ত করবে বলে জানা গিয়েছে। লোকো পাইলটের বিস্ফোরণ শব্দ শোনার দাবিকে তারা যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে।
এদিকে, দুর্ঘটনার ফলে গোন্ডায় আটকে পড়েছেন ডিব্রুগড় এক্সপ্রেসের যাত্রীরা। তাঁদের নিরাপদে ডিব্রুগড় পৌঁছে দেওয়ার জন্য রেলওয়ের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মানকাপুর থেকে ডিব্রুগড়ের উদ্দেশ্যে ছাড়বে বিশেষ ট্রেনটি। দুর্ঘটনার ফলে, ওই লাইনে রেল চলাচলও বিঘ্নিত হয়েছে। অন্তত ১৩টি ট্রেনের যাত্রা হয় বাতিল করতে হয়েছে, নয়তো সেগুলিকে অন্য লাইন দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।