মুম্বই: প্রয়াত বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা সালিয়ানের আত্মহত্যা নিয়ে তদন্ত করবে মহারাষ্ট্রের একনাথ শিন্ডে সরকার। এই মামলার তদন্তের জন্য একটি স্পেশাল টাস্ক ফোর্স বা এসআইটি গঠন করতে চলেছে মহারাষ্ট্র সরকার। একজন ডিআইজি পদমর্যাদার কর্তা টাস্ক ফোর্সের কাজের তত্ত্বাবধান করবেন। এর ফলে শিবসেনা (উদ্ধব ঠছাকরে) নেতা আদিত্য ঠাকরের সমস্যা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে, দিশা সালিয়ান আত্মহত্যা মামলায় আদিত্য ঠাকরের ভূমিকা নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন বিধায়ক। বিগত শীতকালীন অধিবেশনে এই বিষয়ে এসাআইট তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস। এবার সেই এসআইটি গঠন করে তদন্ত শুরু হবে।
গত বছর ডিসেম্বরে, মহারাষ্ট্র বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন, প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের প্রসঙ্গ উঠেছিল। শিবসেনা (একনাথ শিন্ডে) বিধায়ক ভারত গোগাওলে এবং বিজেপি বিধায়ক নীতেশ রানে বিধানসভায় দিশা সালিয়ানের মৃত্যুর বিষয়টিও তিলেছিলেন এবং এই ঘটনার বিশদ তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন। শিন্ডে গোষ্ঠীর সাংসদ রাহুল শেওয়ালে এক কদম এগিয়ে অভিযোগ করেছিলেন, সুশান্তের প্রাক্তন প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তীর ফোনে ‘এইউ’ নামে এক কলার ৪৪বার ফোন করেছিলেন। বিহার পুলিশের মতে এই ‘এইউ’ হল আদিত্য এবং উদ্ধব ঠাকরে। তারপর থেকে ‘এইউ’-এর পরিচয় কী, তা জানতে তদন্তের দাবি জোরাল হয়েছিল। নীতেশ রানে দাবি করেন, দিশা সালিয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় আদিত্য ঠাকরের নারকো টেস্ট করা উচিত।
দিশা সালিয়ান আদতে কর্নাটকের উদুপির বাসিন্দা। তিনি ছিলেন একজন সেলিব্রিটি ম্যানেজার। বরুণ শর্মা, সুশান্ত সিং রাজপুত, ভারতী সিং-এর মতো জনপ্রিয় অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। এছাড়া, বেশ কিছু বিজ্ঞাপনী সংস্থার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন দিশা। টেলি অভিনেতা রোহন রায়ের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দিশার মৃত্যুর মাত্র কয়েক মাস আগেই তাঁদের বাগদান হয়েছিল। সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যার মাত্র পাঁচ দিন আগে, ২০২০ সালের ৮ জুন আত্মঘাতী হয়েছিলেন দিশা।
মুম্বইয়ের মালাদ এলাকার এক বহুতল ভবনে থাকতেন তিনি। ১৪ তলার ফ্ল্যাটের বারান্দা থেকে নীচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি, এমনটাই অভিযোগ। সেই সময় মহারাষ্ট্রের ক্ষমতায় ছিল মহা বিকাশ আগাড়ি সরকার। বিজেপি অভিযোগ করেছিল, এই ঘটনার তদন্ত চেপে দেওয়ার চেষ্টা করছে সরকার। ২০২১-এর অগস্টে, পুলিশ প্রমাণের অভাবে এই মামলায় তদন্ত বন্ধ করে দিয়েছিল। অনেকের সন্দেহ, দিশার মৃত্যুর সঙ্গে সুশান্তের মৃত্যুরও যোগ রয়েছে। এবার নতুন করে, এই মামলার ফের তদন্ত শুরু হচ্ছে।