হরিয়ানা : নমাজ পাঠে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হরিয়ানায় (Haryana)। আর গুরুগ্রামের (Gurugram) সেই ঘটনার জেরেই হরিয়ানার উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ আদিব। সেই আবেদনের দ্রুত শুনানির অনুমোদন মিলল সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। শুক্রবার অর্থাৎ জুম্মাবারের নমাজে (Namaz) বাধা দেওয়ার ঘটনা কেন রুখতে পারল না পুলিশ প্রশাসন, সেই প্রশ্নই তুলেছেন প্রাক্তন সাংসদ। প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণ।, বিচারপতি এএস বোপান্না ও বিচারপতি হিমা কোহলির ডিভিশন বেঞ্চে সেই আবেদন উল্লেখ করা হয়েছে। আবেদনকারীর তরফে আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং উল্লেখ করেন, হিংসামূলক অপরাধ দমনে ব্যর্থ হয়ে শীর্ষ আদালতের নির্দেশকে অবমাননা করেছে হরিয়ানার পুলিশ আধিকারিকেরা।
সোমবার আইনজীবী আবেদন জানালে সেই মামলার জরুরি ভিত্তিতে শুনানির অনুমোদন দেন প্রধান বিচারপতি। আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং এ দিন বলেন, ‘আমরা শুধুমাত্র সংবাদপত্রের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে কোনও আবেদন জানাচ্ছি না। আমরা এই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছি। সুপ্রিম কোর্ট এই ধরনের ঘটনা রুখতে পদক্ষেপ করার কথা বলেছিল।’ এ কথা শুনে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণ আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘আমি দ্রুত এই মামলা উপযুক্ত বেঞ্চে পাঠাব।’
এই মামলায়, হরিয়ানার মুখ্যসচিব সঞ্জীব কৌশল ও হরিয়ানা পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল (DGP) পিকে আগরওয়ালের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ।
২০১৮-তে সুপ্রিম কোর্ট এক নির্দেশে বলেছিল, ক্রমশ বেড়ে চলা হিংসার ঘটনা বা হিংসামূলক অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে, দুষ্কৃতী তাণ্ডব বা গণপিটুনির মতো ঘটনা রুখতে পদক্ষেপ করতে হবে। তেহসিন পুনাওয়ালার মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, ‘জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে প্রত্যেক নাগরিককে দেশের আইন মেনে চলতে হবে। নমাজ পাঠের ক্ষেত্রে এমন কোনও ঘটনা ঘটানো চলবে না, যাতে বিক্ষোভের পরিস্থিতি তৈরি হয়।’
আবেদনে প্রাক্তন সাংসদ উল্লেখ করেছেন, গত কয়েক মাসে হিংসামূলক ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। বিশেষত শুক্রবারের নমাজে বাধা দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। ধর্মের নামে বিশেষ এক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হিংসার পরিবেশ তৈরি করছে কিছু দুষ্কৃতী।
আবেদনে গত বছরের ৩ ডিসেম্বরের ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। গুরুগ্রামের একাধিক জায়গায় নমাজ পাঠে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পুলিশের উপস্থিতি সত্ত্বেও ওই সব জায়গায় গিয়েছে ধর্মের নামে হিংসামূলক বা ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক স্লোগান দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বেশ কিছু ভিডিয়ো সামনে এসেছে, যেখানে বহু মানুষকে একসঙ্গে ওই স্লোগান দিতে দেখা গিয়েছে। আবেদনকারী জানান, পুলিশ প্রাথমিকভাবে ওই ঘটনার পর কয়েকজনকে আটক করলেও, সে দিনই তাঁরা ছাড়া পেয়ে যায়। আইন বা প্রশাসনের তোয়াক্কা না করেই নমাজ পাঠে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।